শ্মশানকালী মন্দিরের জমি দখল! তৃণমূল ‘ঘনিষ্টের’ কাণ্ড শুনে স্তম্ভিত হাইকোর্ট, এল বিরাট নির্দেশ

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ যেখানে সেখানে জমি জবরদখল! রেহাই পেল না মায়ের স্থানের জমিও। মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) শ্মশানকালী মন্দিরের জমি বেআইনিভাবে দখল করে নেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানানোয় ভয়ানক আক্রান্ত হয়েছিলেন এক যুবক। এরপর পুলিশেও অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো পদক্ষেপই করা হয়নি। এরপর এই মামলার জল গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)।

অভিযোগ, গোটা ঘটনায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর দুই জওয়ান জড়িত ছিল। সেই কারণে পুলিশ মামলাটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। এরপরই কোনো পথ না পেয়ে পাল্টা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আক্রান্ত যুবক। শুক্রবার মামলাটি ওঠে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে।

মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী আদালতে বলেন, অভিযুক্তরা সকলেই শাসক দলের ঘনিষ্ট। আক্রান্ত যুবক প্রথমে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও তা নিতে অস্বীকার করে পুলিশ। পরে তার মক্কেল হাসপাতাল থেকে ফিরে মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানায়। এসপি নওদা থানাকে নিরপেক্ষ তদন্ত করার পুলিশ তা করেনি। হামলাকারীরা হুমকি দিলেও তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ।

এদিন গোটা ঘটনা শুনে বিচারপতি বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর দুই জওয়ান-সহ অভিযুক্ত ৬জনের জামিন খারিজের নির্দেশ দেন বিচারপতি।

মূল ঘটনা:

সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ জেলার সরবঙ্গপুর গ্রামে ১০০বছরের পুরোনো একটি শ্মশানকালীর মন্দির রয়েছে। সেই মন্দিরের মাঠে পাশের প্রাথমিক স্কুলের বাচ্চারা খেলাধুলা করে। মন্দিরে সেই জমির উপরই কিছু মানুষেরা নজর পড়েছে। অভিযোগ, স্থানীয় উদয় মণ্ডল ও পূর্ণিমা মণ্ডল শাসক দলের ঘনিষ্ট। সেই জোরে প্রভাব খাটিয়ে তারা ওই জমি বেআইনি ভাবে পাট্টা করিয়ে দখল করে নেয়। এর বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে মামলা হয়।

Calcutta High Court

আরও পড়ুন: এবার থেকে এই নির্দিষ্ট হেলমেট না পড়লেই রাস্তায় কড়া শাস্তি! নয়া নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার

মামলাকারী সৌরভ দত্তের অভিযোগ, গত ১৯ অক্টোবর ওই মাঠে কৃষি কাজ করতে যান তিনি। সেই সময় জমি দখলকারীরা তাকে ঘিরে ধরে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। তাদের মধ্যে তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ সহ দু’জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানও ছিল বলে অভিযোগ। তাদের হামলার জেরে হামলার জেরে ওই যুবকের হাত ভেঙে যায়। গুরুতর জখম হয়ে টানা ১৭ দিন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছেন তিনি। এরপরই নওদা থানার দ্বারস্থ হন গ্রামবাসীরা। এই মামলাতেই এদিন পুলিশের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন বিচারপতি।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর