বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বারবার কেন্দ্রের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হওয়ার পর এবার আবাস প্রকল্পে (Awas Yojana) নিজস্ব কোষাগার থেকেই টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। এমনিতে নিয়ম অনুযায়ী এই প্রকল্পে ৬০ শতাংশ কেন্দ্রের এবং বাকি ৪০ শতাংশ অর্থ রাজ্য সরকারের দেওয়ার কথা। কিন্তু বিগত প্রায় দু বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই প্রকল্পের (Awas Yojana) বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়েছে।
আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) টাকা মেটাতে নাজেহাল রাজ্য
কেন্দ্র বনাম রাজ্যের আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) এই জট না কাটায় ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে এই প্রকল্পের টাকা তারা নিজস্ব কোষাগার থেকেই খরচ করবে। এতদিন এই প্রকল্পে কেন্দ্রের বরাদ্দ বন্ধ থাকায় কোন অর্থ খরচ হয়নি রাজ্য সরকারেরও। তাই প্রশাসনের একাংশের মতে আগামী দিনে রাজ্য সরকারের কাছে ওই টাকাই আবাস উপভোক্তাদের প্রথম কিস্তির টাকা মেটাতে বড় ভরসা হয়ে উঠতে চলেছে।
আবার অপর পক্ষের দাবি দিনে দিনে যে হারে রাজ্য সরকারের ওপর খরচের বোঝা বাড়ছে তাতে প্রথম কিস্তির টাকা মেটানোর পর গোটা প্রকল্প চালানোর টাকা কোথা দিয়ে আসবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছে রাজ্যের অর্থ দপ্তর। এপ্রসঙ্গে পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেছেন, ‘এ বারের বাজেটে রাজ্যের ভাগের ৪০% টাকা ধরাই আছে। দফতরের বাজেট থেকেই প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া যাবে। দরকার হলে কিছুটা আরও বরাদ্দ করা যায়।’
প্রসঙ্গত ২০২২ সালের নভেম্বরে ১১ লক্ষ উপভোক্তা সম্বলিত একটি তালিকা কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন পেয়েছিল। সেই তালিকা অনুযায়ী আবাস প্রকল্পের উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে তার প্রস্তুতি। জানা যাচ্ছে, এই প্রকল্পে মোট ১১ লক্ষ উপভোক্তা মাথাপিছু ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে পাবেন।
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার মুখে গিয়াসউদ্দিন মোল্লার গাড়ি! মৃত ২, আহত ৩, কেমন আছেন TMC বিধায়ক?
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন এই হিসেব অনুযায়ী এই প্রকল্পের জন্য মোট ১৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ার কথা। তার মধ্যে ৬০ শতাংশের হিসাবে কেন্দ্রের দেওয়ার কথা প্রায় ৭৯২০ কোটি টাকা। আর রাজ্যের ৪০ শতাংশের হিসাবে প্রায় ৫২৮০ কোটি টাকা আসার কথা। আবাসের প্রকল্পে কেন্দ্রের অনুমোদন যেহেতু এতদিন বন্ধ ছিল তাই রাজ্যের ৪০ শতাংশের হিসাব অনুযায়ী ৫২৮০ কোটি টাকা থাকার কথা। সেই টাকাই ডিসেম্বর থেকে চালু হওয়া প্রথম কিস্তির কাজে ব্যবহার করা হবে।
কিন্তু পরবর্তী দু’টি কিস্তির ক্ষেত্রে চলতি আর্থিক বছরেই অতিরিক্ত ১৩২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হবে রাজ্যকে। এ প্রসঙ্গে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘অতিরিক্ত এই অর্থের ব্যবস্থা করা যেতে পারে বিভিন্ন ভাবে। পঞ্চায়েত দফতরের বরাদ্দ, অন্যান্য খাতের খরচ কেটে অথবা বাজার থেকে ধার করে টাকা জোগাড়ের সুযোগ রয়েছে রাজ্যের কাছে। তবে প্রথম কিস্তিতে ৬০% না ৫০% দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত হবে শীঘ্রই।’