বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পরপর তিনবার সরকার গঠন করে হ্যাটট্রিক করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সামনেই চতুর্থ পরীক্ষা। এবারের লক্ষ্য ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে নিজেদের জয় নিশ্চিত করতেই ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচি প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে খুব তাড়াতাড়ি আমার মাঠে নামছেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)। তৃণমূলের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির হাত ধরেই দলকে একাধিক নির্বাচনে সাফল্য পাইয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সংগঠনকে বুথমুখী করতেই আগামীদিনে শুরু হবে বেশ কিছু নতুন কর্মসূচি।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে বড় সিদ্ধান্ত অভিষেকের (Abhishek Banerjee)
জনসংযোগ কর্মসূচির পাশাপাশি সংগঠনকে মজবুত করতে এবার ময়দানে নামছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। লক্ষ্য একটাই উন্নততর তৃণমূল গড়ে তোলা। তাই দলে শুদ্ধকরণ এবং প্রশাসনের সংশোধনের প্রমাণ নিয়েই এবার দ্বিতীয় দফায় প্রচার শুরু করতে চলেছেন অভিষেক। প্রসঙ্গত গতবছর পঞ্চায়েত ভোটের আগেও টানা দুমাস উত্তর থেকে দক্ষিণ সব জেলায় মাটি কামড়ে পড়েছিলেন এ তৃণমূলের এই সেনাপতি। সেবার পঞ্চায়েত স্তরের প্রার্থী বাজায়ে কথা বলে কর্মসূচি শুরু করা হলেও মূলত দলের হয়ে ভোটের প্রচার সেরেছিলেন অভিষেক।
আর এবার এই নিয়ে দ্বিতীয় দফায় এই জনসংযোগ কর্মসূচিতে ময়দানে নামছেন অভিষেক। তবে প্রথমবারের পঞ্চায়েত ভোটের মতোই বিধানসভা ভোটেও দলীয় প্রার্থীদের বাছাইয়ের বিষয়টি এই কর্মসূচির সাথেই থাকবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি .এ প্রসঙ্গে দলের এক নেতা জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিদের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কাজের নিয়মিত নির্দিষ্ট মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, দলের সাংগঠনিক রদবদলের পাশাপাশি ছয় বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ফলাফল দেখে তারপরে এই প্রচার কর্মসূচিতে নামতে চলেছেন অভিষেক। তবে এই মুহূর্তে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হবে সেই বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে এক তৃণমূল নেতা বলেছেন, ‘পরপর তিনবার সরকার গঠন করার পর ২৬ এর আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন তৃণমূলের কাছে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে’। এমনিতে পত্রপুর তিনবার ভোটে জিতে সরকার গঠন করার পর দলের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে ঠিকই, সেইসাথে সাথে বেড়েছে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাও। সেইসাথে সহ দলের বিরুদ্ধে উঠেছে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। উঠছে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ থেকে শুরু করে একাধিক অভিযোগ।
আরও পড়ুন: অভিষেক-কন্যা মামলায় এবার সুপ্রিম কোর্টে গেল সাত নাম! আর কিছুক্ষণেই এসপার ওসপার?
তাছাড়া এক্ষেত্রে আগুনে ঘৃতাহুতির কাজ করেছে আরজিকর কান্ডের প্রতিবাদ আন্দোলন। তিলোত্তমার মৃত্যুর পর রাজ্যেবাসীর একটা বড় অংশ সরকার বিরোধী আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। আগামী দিনে এই সমস্ত বিষয় নিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচিতে ক্ষোভ উগরে দিতে পারেন সাধারণ মানুষ। সেই সমস্ত দিকগুলি মোকাবিলা করে সকলের মনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আস্থা তৈরি করা প্রকৃত অর্থেই কঠিন কাজ। ইতিমধ্যে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে ‘হেল্প ডেস্ক’ তৈরি করেছেন অভিষেক। এবার এই দেল্প ডেস্ক প্রত্যেক জেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
আসন্ন নির্বাচনের আগে ইতিমধ্যেই ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা এবং ডিসেম্বর মাসের ৩১ তারিখের মধ্যেই আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। আসলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এই বিষয়গুলিকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করতে চলেছে রাজ্য। কিন্তু প্রশ্ন হল ২০২৬ এর নির্বাচন এখনও অনেক দেরি। তাই এতদিন পর্যন্ত এই সমস্ত প্রকল্পগুলির প্রভাব বজায় থাকবে কিনা তাতে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। সেই সাথে অনুমান করা হচ্ছে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগামী দিনে আরও কিছু নতুন কর্মসূচি থাকতে পারে।