বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রবিবার তখন ঘড়িতে বাজে রাত দেড়টা। অর্থাৎ একেবারে মাঝরাত। এমন সময় আচমকাই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগী। হাতে ছুরি-কাঁচি নিয়ে নার্সদের মারতে উদ্যত সেই রোগী দৌড়াচ্ছে উর্ধ্বশ্বাসে। কিছুক্ষণের মধ্যেই দৌড়াতে দৌড়াতে উঠে পড়ে ছাদে। তারপরেই চন্দননগর (Cahndannangar) হাসপাতালের ছাদ থেকে দিয়ে মরণঝাঁপ। বাঁচানোর চেষ্টা করা হলেও শেষ রাখা হয়নি।
চন্দননগরে (Cahndannangar) মাঝরাতে ছুরি-কাঁচি নিয়ে ছাদ থেকে ঝাঁপ রোগীর
চন্দননগর (Cahndannangar) হাসপাতালের এই রোগী এই মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া মৃতের পরিবারে। জানা গিয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যায় পেটে ব্যথা আর রক্তবমির উপসর্গ নিয়ে চন্দননগর (Cahndannangar) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পেশার গাড়িচালক প্রকাশচন্দ্র বাইন। আদতে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা প্রকাশ চন্দননগরের মহাডাঙা কলোনিতেই থাকতেন গত সাত বছর ধরে।
আর এদিন চন্দননগর (Cahndannangar) হাসপাতালে ছাদ থেকে পড়ে তারই মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। কিন্তু কিভাবে তাঁর এই পরিণতি হল? হাসপাতাল সূত্রে খবর রবিবার রাত তখন দেড়টা বাজে এমন সময় আচমকাই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন প্রকাশ। আচমকাই নার্সদের টেবিল থেকে একটি কাঁচি নিয়ে অন্য রোগীদের নার্সদের দিকে আক্রমণ করতে এগিয়ে যেতে থাকে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিমেল ওয়ার্ডেও ঢুকে পড়ে প্রকাশ। এরপর নার্সিং স্টাফদের ঘরের ভিতর দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে দৌড়ে উঠে যায় ছাদে। তারপর সেখান থেকেই মরণ ঝাঁপ দেয় নীচে। নীচে ঝাঁপ দেওয়ার পরেও দেহে প্রাণ ছিল তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জরুরি বিভাগে। চিকিৎসা শুরু করা হয় এমনকি অপারেশনের জন্যও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অপারেশন থিয়েটারে।
কিন্তু চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েই ওই অপারেশন থিয়েটারের মধ্যেই রাত তিনটে নাগাদ মৃত্যু হয় প্রকাশের। রবিবার রাতেই খবর দেওয়া হয়েছিল রোগীর পরিবারকে। সোমবার সকালে তারা হাসপাতালে আসেন কিন্তু তার স্ত্রী জানান হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয় তাড়াতাড়ি চলে আসার জন্য।
আরও পড়ুন: কোর্স সংক্রান্ত নতুন গাইডলাইন আনল UGC! খুশির হাওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে
রোগী মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন রোগীর পরিবার। হাসপাতালের সুপার সন্তু ঘোষ জানান, ‘তিন দিন আগেই ওই ব্যক্তি রক্তবমি আর পেটে ব্যথার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। প্রকাশ ছিলেন ক্রনিক অ্যালকোহলিক রোগী। মদ না পেলেই এরা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। ওনার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল।’
মাঝরাতে ছুরি-কাঁচি নিয়ে নার্সদের ভয় দেখিয়েই ছাদে উঠে গিয়েছিলেন তিনি। তারপর হাসপাতালের ছাদের পিছন দিকে গিয়ে লাফ দেন। উদ্ধার করার পরেও তিনি বেঁচে ছিলেন কিন্তু চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো যায়নি। মৃতের শাইলক জানিয়েছেন তার জামাইবাবু মদ খেতেন একটু বেশি পরিমাণে। তবে এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েও।