বাংলা হান্ট ডেস্ক: এই পৃথিবীটা একটি রহস্যের ভান্ডার। যার ঝুলি থেকে নিত্যনতুন রহস্য বেরিয়ে আসতে থাকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যতে ভরপুর এই পৃথিবীর কত না অজানা কাহিনী রয়েছে তার ঠিক নেই। পৃথিবীতে তেমন একটি স্থান রয়েছে যেখানে ৪০০ বছরেও এক ফোঁটাও বৃষ্টি হয়নি। দূর দূরান্ত অব্দি খাঁ খাঁ করছে শুষ্ক মরুভূমিতে (Desert)। শুনতে বিস্ময়কর লাগলেও, শত শত বছর ধরে এমনটাই ঘটে আসছে। দেখলে মনে হয় যেন হুবহু মঙ্গল গ্রহ। না তবে এটি মঙ্গল গ্রহ নয় কিংবা এখানে এলিয়েনরাও বাস করে না।
পৃথিবীর শুষ্কতম স্থানের (Desert) নাম কি?
বিস্ময়কর এই স্থানের নাম হচ্ছে আতাকামা মরুভূমি (Desert)। প্রকৃতির অতুলনীয় সৌন্দর্যে সজ্জিত আতাকামা মরুভূমি (Desert)। এটি পৃথিবীর প্রাচীনতম শুষ্ক মরুভূমি। এই শুষ্কতার পিছনে রয়েছে বিরাট ইতিহাস। উত্তর চিলিতে অবস্থিত আতাকামা মরুভূমি (Atacama Desert) ১০০০ কিলোমিটারেরও বেশি অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত। পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্কতম মরুভূমি নামেই পরিচিত স্থানটি।
মঙ্গলগ্রহ অভিযানের পরীক্ষামূলক সাইট: আতাকামা মরুভূমি (Desert) লবণের স্তর, বায়ু দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত শিলা, ফেলসিক লাভা, বিশাল বালির টিলা দ্বারা গঠিত। যার ফলে এর ভূ প্রাকৃতিক দৃশ্য সকলকে আকর্ষিত করে। বিশেষ করে এই টিলা এবং শুষ্ক মরুভূমি হওয়ার ফলে এর কিছু কিছু অংশ আবার মঙ্গল গ্রহের মত দেখায়। এমনকি মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা এখানকার প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের জন্যই এই স্থানকে মঙ্গলযান রোভারগুলির পরীক্ষামূলক সাইট হিসেবে ব্যবহার করছে।
৪০০ বছর এখানে বৃষ্টি হয়নি: জানা গিয়েছে, প্রায় ৪০০ বছর এখানে বৃষ্টির বিন্দুমাত্র ফোঁটা এসে পৌঁছায়নি। ১৫৭০ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আতাকামা মরুভূমিতে (Desert) বৃষ্টি হয়নি। গবেষণায় উঠে এসেছে, পরিমাণ মতো বৃষ্টি না হওয়ার কারণে কিছু নদীর তল ১২০ হাজার বছর ধরে শুকিয়ে রয়েছে। যদিও এই বৃষ্টি না হওয়ার পিছনে রয়েছে, উত্তরে প্রবাহিত হামবোল্ট মহাসাগরের স্রোতের এবং শক্তিশালী প্রশান্ত মহাসাগরীয় অ্যান্টিসাইক্লোনের উপস্থিতি।
আরও পড়ুন: একের পর এক ঝটকা! চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর এবার বিশ্বকাপ খেলতেও পাকিস্তানে যাবে না টিম ইন্ডিয়া
এখানে প্রথম বৃষ্টি হয় ১৯৭১ সালে। আর প্রথমবার বৃষ্টি হওয়ার পর তারপর আতাকামা মরুভূমির ফুল ফোটার ঘটনা সকলকে অবাক করে দেয়। জানা যায়, সেই সময় হঠাৎ বৃষ্টির ফলে মরুভূমি নানাপ্রান্ত জুড়ে রঙিন ফুল ফোটার মত ঘটনা ঘটে। বিজ্ঞানীরা বলেন, এল নিনোর কারণেই নাকি যখনই আতাকামা মরুভূমিতে (Desert) বৃষ্টি হয়, তখনই মরুভূমি ফুলে ফুলে ভরে ওঠে। এমনকি চলতি বছর, এখানে জুলাই মাসে বৃষ্টি হয়েছিল, আর সেই সময়ও একই রকমের ঘটনা ঘটতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু সফর! প্রথম প্রচেষ্টায় বাজিমাত UPSC-তে, ২২ বছর বয়সে IAS হলেন সুলোচনা
আতাকামা মরুভূমিতে বিস্ময়কর ঘটনা: আতাকামা শুষ্ক হলেও এখানে এল টাটিও নামের একটি বিস্ময়কর স্থান রয়েছে। এটি মূলত গরম জলে ঝর্না বলেই পরিচিত। সূর্যোদয়ের সময় নাকি, মাটি থেকে গরম জলের ঝর্ণা এখানে নির্গত হতে থাকে। এছাড়াও আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এটি শুষ্কতম অঞ্চল হলেও, এখানে বিশেষ কিছু জীব এখনো বসবাস করে। শুধু তাই নয় ভ্রমণের জন্য এই স্থানকে শ্রেষ্ঠ স্থান বলে মনে করেন। এমনকি এখানে থাকা চিলির বৃহত্তম লবণভূমি, সালার দে আতাকামা থেকে ফ্লেমিঙ্গো পাখি দেখা যায়। সব মিলিয়ে আতাকামা মরুভূমি (Desert) পৃথিবীর বিরলতম স্থান।