বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে বোম্বে টকিজ প্রোডাকশন হাউসের অবদান অনস্বীকার্য। দেবিকা রানি ও হিমাংশু রায়ের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় বোম্বে টকিজ। তবে এই প্রোডাকশন হাউসের প্রাণভোমরা ছিলেন দেবিকা রানি (Devika Rani)। ১৯০৮ সালে বিশাখাপত্তনমে জন্ম দেবিকা রানির।
বলিপাড়ায় বিতর্কিত নায়িকা দেবিকা রানি (Devika Rani)
অনেকেই হয়ত জানেন না সম্পর্কে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনি ছিলেন দেবিকা রানি (Devika Rani)। লন্ডনে পড়াশোনা করার সময় হিমাংশু রায়ের সাথে ১৯২৮ সালে পরিচয় হয় দেবিকা রানির। তার পরের বছরই অর্থাৎ ১৯২৯ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন দেবিকা ও হিমাংশু। এরপর চলচ্চিত্র নিয়ে পড়াশোনা করতে দেবিকা ও হিমাংশু বার্লিন চলে যান।
মাত্র ২৫ বছর বয়সে ‘কর্ম’ নামক একটি ছবির মাধ্যমে অভিনেত্রী হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটে দেবিকা রানির। তারপর আমেরিকা ও জার্মানির বেশ কিছু পরিচালকের সাথে কাজও করেন দেবিকা। তবে দেবিকা ও হিমাংশুর ইচ্ছা ছিল দেশে ফিরে এসে নতুন কিছু করার। তারপরই ১৯৩২ সালে স্বামী হিমাংশু রায়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে দেবিকা রানি প্রতিষ্ঠা করেন বোম্বে টকিজ (Bombay Talkies)।
আরোও পড়ুন : বাণিজ্য ক্ষেত্রে সেরা বাঙালির পুরস্কার পেল ‘দাদা-বৌদি’! বিরিয়ানির সেই স্বাদের সিক্রেট কী জানেন?
১৯৩৬ সালে এই প্রোডাকশনের ‘অচ্ছুত কন্যা’ ছবিতে অশোক কুমারের বিপরীতে অভিনয় করেন দেবিকা। এই ছবির সাফল্য সেদিন শুরু করেছিল এক নতুন ইতিহাসের। জানা যায়, জহরলাল নেহেরু উপস্থিত ছিলেন এই ছবির প্রিমিয়ারে। এই ছবির চুম্বন দৃশ্য ছিল বলিউডের (Bollywood) প্রথম কিস সিন। খ্যাতির পাশাপাশি তাই জীবনের শুরুর দিন থেকেই বিতর্কের লাইম লাইটে চলে আসেন দেবিকা রানি।
শুধু বিনোদন নয়, ‘জীবন প্রভাত’, ‘নির্মলা’, ‘দুর্গা’র মতো সিনেমাগুলির মাধ্যমে দেবিকা রানি (Devika Rani) তুলে ধরতে চেয়েছিলেন দেশের অসহায় নারী ও সমাজের নগ্ন রূপ। ১৯৪০ সালে হিমাংশু রায়ের মৃত্যু হলে বোম্বে টকিজে শুরু হয় অন্তর্দ্বন্দ্ব। ১৯৪৩ সালে ‘হামারি রাত’ ছবিতে অভিনয় করে বিনোদন জগতকে বিদায় জানান দেবিকা। বোম্বে টকিজে দেবিকাকে নিয়ে শুরু হয়েছিল নানান তর্ক-বিতর্ক।
আরোও পড়ুন : অবৈধ হলে সরাতে হবে! শহরে বেআইনি হোর্ডিংয়ের দাপট! কড়া বার্তা পুলিশের
এমন অবস্থায় নিজের শেয়ার বিক্রি করে দেবিকা দ্বিতীয়বারের জন্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন রুশ চিত্রকর সেতোস্লাভ রোয়ারিখের সাথে। জীবনের শেষ কটা দিন বেঙ্গালুরুতে কাটিয়েছেন দেবিকা। ১৯৯৩ সালে সেতোস্লাভের মৃত্যুর পরের বছরই অর্থাৎ ১৯৯৪ সালে ব্রংকাইটিসে আক্রান্ত হয়ে জীবনাবসান হয় দেবিকা রানির। নিঃসন্তান দেবিকা রানির মৃত্যুর পর তাঁর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে ভারত সরকার।