বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনে বাংলার পাঁচ রাজ্যের ছয় বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সবুজ ঝড়ে কার্যত নাস্তানাবুদ হয়ে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপি (BJP)। এরই মধ্যে দলের অন্দরে মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে অন্তর্দ্বন্দ্ব। উপনির্বাচনে বিজেপির (BJP) ভরাডুবির পর, বাংলায় পূর্ণ সময়ের রাজ্য সভাপতি না থাকার জন্য ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বিজেপির (BJP) প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়।
BJP-তেও নবীন-প্রবীণ অন্তর্দ্বন্দ্ব
তারপর তাঁকেই পাল্টা দিতে আসরে নেমে পড়েছেন বিজেপির (BJP) বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কিছুদিন আগেই শুভেন্দু অধিকারীকেই সুকান্ত মজুমদারের জায়গায় রাজ্য সভাপতি করার পক্ষে সুর চড়িয়েছিলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত পূর্ণ সময়ের রাজ্য সভাপতি না থাকায় ক্ষোভ উগরে দিয়ে এই প্রবীণ বিজেপি নেতা বলেছিলেন,’পশ্চিমবঙ্গের মতো কঠিন রাজ্যে পূর্ণ সময়ের সভাপতি নেই, এটা আমি কিছুতেই হজম করতে পারছি না। একটা পূর্ণ সময়ের সভাপতি নেই। ওমুকটার জন্য অপেক্ষা করছি, তমুকটার জন্য অপেক্ষা করছি। এগুলো কোনওটাই আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এই অবস্থায় কী করে দলের দিশা থাকতে পারে।’
প্রসঙ্গত নাম না নিলেও, বিজেপির প্রবীণ নেতার নিশানা ছিল সুকান্ত মজুমদারের দিকেই। এই মুহূর্তে সুকান্ত মজুমদার বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীও। তাই একসাথে তিনি দুটো দায়িত্ব সামলানোর ফলে বঙ্গ রাজ্য বিজেপির দিকে পুরোপুরি নজর দিতে পারছেন না বলেই ইঙ্গিত করেছেন তথাগত রায়। সোমবার তার মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেছেন,’রাজ্য সভাপতি করা আমার কাজ নয়। পার্টি আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে, আমি সেই কাজ করছি। রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের একটা পদ্ধতি আছে। সেই পদ্ধতি অনুসারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি হয়। কিছু লোকের কাজ নেই তাঁরা চেচান। পাড়ায় যখন শনিপুজো হয় দেখেছেন তো, সাউন্ড বক্স বাজে। লোকে জানে গান হচ্ছে, কী গান হচ্ছে শোনে না। ওরকম কিছু লোকের কাজ আছে ওরকম সাউন্ড বক্স বাজানো।’
আরও পড়ুন: সংসদে দাঁড়িয়ে কল্যাণের খোঁজ নিলেন প্রধানমন্ত্রী! কি জিজ্ঞেস করলেন জানেন? অবাক সকলে
একইভাবে এদিন বেশ ইঙ্গিত পূর্ণ মন্তব্য করেছেন অর্জুন সিং থেকে শুরু করে অগ্নিমিত্রা পাল এর মত বিজেপি সদস্যরা। প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহ এদিন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন,’আমরা একটা জিনিস মনে করি, ২০২৬ সালে যদি জিততে হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় থাকলে ২০২৬ সালেও ভোট হবে না। মানুষ ভোট দিতে পারবে না। যতক্ষণ সঠিক নেতৃত্ব, বুথভিত্তিক কাজ না হবে , আমার মনে হচ্ছে এটা সম্ভব নয়।’
একইভাবে করে অগ্নিমিত্রা পাল বলেছেন, ‘আমাদের কাছে যে-ই প্রেসিডেন্ট হোক, নন-কম্প্রোমাইজিংভাবে এই সরকারের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করবে আমরা শুধু সেটা চাই। প্রসঙ্গত এখানে অগ্নিমিত্রা এদিন ‘নন-কম্প্রোমাইজিং’ রাজ্য সভাপতি চাই বলে দাবি করায় প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি রাজ্য বিজেপিতে এমন কেউ রয়েছেন জিনি সমঝোতা করে চলছেন?
এই ইস্যুতে বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ বলেছেন, ‘শীতকাল আসে। শীতকালে সার্কাস আসে। শীতকাল এসে গেছে। শীতকালে বাংলায় সার্কাস একটা বড় আকর্ষণ। মজা, বিনোদন, সার্কাস, জোকার। আর এখন তো সার্কাসে বাঘ-সিংহ দেখা যায় না, বন্যপ্রাণ নতুন আইন অনুযায়ী। ফলে এখন কাকাতুয়া, টিয়া পাখি, জোকার…এই দিয়ে হয়। ফলে, বিজেপির তাঁরাই সব আছেন। সার্কাস দেখাচ্ছেন।’