বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কথায় আছে, চোরের উপর যতই বাটপারি করুন না কেন চোর ঠিক চুরি করবেই। ভাবছেন এমন কথা কেন বলছি? আসলে বিগত বছরগুলিতে কেন্দ্র সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে (RBI) জাল নোট (Counterfeit Money) তৈরিতে কড়া ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়। তবে যতই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক না বাস্তবে এই ব্যবস্থার কোন প্রতিফলনই দেখা যাচ্ছে না। বরং দিন যত যাচ্ছে ততই জাল টাকার সংখ্যা বাড়ছে। এমনকি, দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সময় এই জাল টাকা তৈরি করতে গিয়ে গ্রেফতার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। পরিসংখ্যান বলছে গত পাঁচ বছরে ৫০০ টাকার জাল নোটের (Counterfeit Money) সংখ্যা প্রায় ৪ গুন বেড়েছে। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।
জাল নোটের (Counterfeit Money) সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণঃ
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের তরফ থেকে একটি তথ্য প্রকাশ করা হয়। যেখান থেকে জানা যায় ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষ পর্যন্ত এই টানা পাঁচ বছরে দেশে ৫০০ টাকার জাল নোটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ গুণ। এছাড়াও জানা যায় ২০০০ নোটের সংখ্যাও নাকি জাল হয়েছে। যদিও বর্তমানে ২০০০ টাকার নোট প্রত্যাহারের ঘোষণা করা হয়। তবে জানা গেছে ২০২০-২১ অর্থবর্ষ থেকে টানা তিন বছর জাল ২০০০ নোটের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। অর্থাৎ হাটে বাজারেই জাল নোটের কারবার চলছে খুল্লাম খুল্লা।
জাল নোটের পরিসংখ্যানঃ
জাল নোটের পরিসংখ্যান নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধরির (Pankaj Chaudhary) দেওয়া পরিসংখ্যা রীতিমতো মাথা ঘুরিয়ে দিচ্ছে। সম্প্রতি লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে এই পরিসংখ্যান জমা দিয়েছেন তিনি। যে ছবি থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ৫০০ টাকার জাল নোটের (Counterfeit Money) সংখ্যা ছিল ২,১৮,৬৫,০০০। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮,৫৭,১১,০০০। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে। ৩,৯৪,৫৩,০০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭,৯৬,৬৯,০০০-এ। অর্থাৎ জাল নোটের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১০২%।
আরো পড়ুন : RG Kar কান্ডের জের! ডাক পাননি বৈঠকে, দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে ‘লাস্ট বেঞ্চ’ কেন চান সুখেন্দু?
শুধু ৫০০ টাকার নোট নয় একই সাথে ২০০০ টাকার নোট নিয়েও তিনি পরিসংখ্যান পেশ করেন। তবে ৫০০ টাকার থেকে ২০০০ টাকার জাল সংখ্যাটা একটু কম। জানা যাচ্ছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ৯৮,০৬,০০০ জাল ২০০০ টাকার নোট ধরা পড়ে। তবে এক বছরে একলাফে বেড়ে দাঁড়ায় ২,৬০,৩৫,০০০। আর এমন ভাবে জাল নোটের সংখ্যা বাড়তে দেখে প্রশ্ন উঠছে তা হলে নোটবন্দি করে কী লাভ হল?
আরো পড়ুন : ২-১ দিনের মধ্যেই…! CBI এবার যা করতে চলেছে… রাতের ঘুম উড়ল আরজি করের সন্দীপের!
২০১৬ সালে নরেন্দ্র মোদীর নোটবন্দিঃ
২০১৬ সালে ৮ই নভেম্বর আচমকাই ৫০০, ১০০০ টাকার নোট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। জাল নোট এবং কালো টাকার ব্যবসা বন্ধ করার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত ছিল। তবে দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্র সরকারের এমন পরিবর্তনেও বিন্দুমাত্র বদল ঘটেনি। বরং সময়ের আবহে জাল নোটের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে ২০২৩ সালে মে মাসের দিকে ২০০০ টাকার নোট প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছিল রিজার্ভ ব্যাংক (RBI)। কিন্তু জাল নোটের পরিসংখ্যান বলছে অন্য কথা। এখন ২৪-২৫ অর্থবর্ষের দিকে নজর। তাহলেই দুয়ে দুয়ে চার করা যাবে।