কোণঠাসা করার ক্রমাগত প্রয়াস! শনিতেই ‘শকিং’ নিউজ দেবেন খোদ অভিষেক? নজর সেদিকেই

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলার ‘যুবরাজ’ তিনি। ২০১৯ সালে বঙ্গে তৃণমূলের ভরাডুবির পর কান্ডারি হয়ে যে নামটা এগিয়ে এসেছিল তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। ‘সেনাপতি’ হাওয়ায় তৈরী হয়নি। বিরোধীদের চাপ, সমস্ত ভয়-ডর উপেক্ষা করে মেরুদন্ড সোজা রেখে বছরের পর বছর লড়াই। বাংলার মানুষের হৃদয়ে শক্তপোক্ত জায়গা করে নেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে করা অক্লান্ত পরিশ্রম। ২০২১ ও ২০২৪ সালে রাজ্যে সবুজ ঝড়ের পেছনেও এই নামের ‘মাহাত্ম্য’ অস্বীকার করার জায়গা নেই। তবে সেই সেনাপতিকেই ক্রমশ ‘ব্রাত্য’ করে দেওয়ার কোনো প্রয়াস চলছে তৃণমূলে (Trinamool Congress)? সাম্প্রতিক একাধিক ঘটনার সূত্র ধরে সেই প্রশ্নই উঠছে বারে বারে।

গত সোমবার কালীঘাটে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ছিল ছিল তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। আর সেই বৈঠকের নির্যাস থেকে যে জিনিসটা জলের মতো স্পষ্ট তা হল প্রবীণদের গুরুত্ব দিয়ে ‘অভিষেক পন্থী’ নবীনদের দায়িত্ব খর্ব করা। বিরোধীরা তো আবার বলছে অভিষেককে কোণঠাসা করতেই নাকি তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।

সদ্য প্রকাশ হয়েছে তৃণমূলের মুখপাত্রের তালিকা। যেখান থেকে বাদ পড়েছে পুরনো কয়েকটি নাম। থুড়ি! কেবল বাদ পড়েছে অভিষেক ঘনিষ্ঠদের নাম। মুখপাত্রদের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ‘অভিষেক পন্থী’ অরূপ চক্রবর্তী, ঋজু দত্ত, সুদীপ রাহা, কোহিনুর মজুমদার। যে কোনো ইস্যু হোক, এই সবকটি নামই কঠিন সময়ে দলের হয়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে এসেছেন এতদিন। তাহলে এদের বাদ দেওয়ার কারণ কি? তৃণমূলের তরফ এর কোনও ব্যাখ্যা না দেওয়া হলেও রাজনৈতিক মহল বলছে অভিষেকের কাছের মানুষ হওয়ারই মাশুল গুনতে হয়েছে এদের।

নয়া মুখপাত্রদের তালিকা সামনে আসতেই বাদ পড়া সেই মুখপাত্রদের অভিষেকের নির্দেশে ফোন করেছেন তৃণমূল নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন। সূত্রের খবর, ডেরেক তাদের কনফারেন্স কলে বলেছেন, ‘উই আর শকড’ (আমরা বিস্মিত)। পাশাপাশি সেই সব নেতাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। শুধুই যে ‘অভিষেক পন্থী’দের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে তেমনটা নয়। তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক থেকেই বেঁধে দেওয়া হয়েছে অভিষেকের গন্ডিও। কোনো বাড়তি দায়িত্ব তো দূর কেবলমাত্র জাতীয় স্তরে মুখপাত্রের পদে রাখা হয়েছে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডকে।

abhishek banerjee

আরও পড়ুন: ‘কোনও ধর্মের ওপর অত্যাচার হলে…’! ওয়াকফ বিল নিয়ে কী অবস্থান? পষ্টাপষ্টি জানালেন মমতা

এসবের মাঝে জল অনেকটাই গড়িয়েছে। আবার শীতকালীন অধিবেশনের জন্য কিছুদিন দিল্লিতে ছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, গতকালই বাংলায় ফিরেছেন তিনি। এরই মধ্যে আগামীকাল ৩০ নভেম্বর ‘ডক্টরস সামিট–২০২৪’ হতে চলেছে ডায়মন্ডহারবারের আমতলায়। ‘হেলথ ফর অল’ শীর্ষক কর্মসূচি পালিত হবে সমন্বয় অডিটোরিয়ামে। যেখানের প্রধান বক্তা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ‌্যায়। সেখান থেকে অভিষেক ঠিক কি বার্তা দিতে চলেছেন, সেই দিকে এখন তাকিয়ে গোটা রাজনৈতিক মহল। দলনেতা কি তাদের উদ্দেশে প্রকাশ্যে কোনো বার্তা দেবেন? সেই পথ চেয়ে রয়েছেন অভিষেক ঘনিষ্ঠরাও। এবার কি কোনো ‘শকিং’ নিউস সাংসদ নিজে দেবেন? তুঙ্গে জল্পনা।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর