‘দল আমি আর বক্সিদাই দেখব’! নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বের মাঝেই বড় মন্তব্য মমতার

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বেশ কিছুদিন ধরেই তৃণমূলের অন্দরে আবার মাথাচারা দিয়েছে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব। বিশেষ করে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের পর থেকেই এই নবীন প্রবীণ চর্চা তুঙ্গে। সেইসাথে প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্ব নিয়েও।  নবীন-প্রবীণ এই রেষারেষিতে ইতিমধ্যেই দলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুত্ব কমছে বলেই দাবি করেছেন দলের একাংশ।

মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) মন্তব্যে মাথাচাড়া দিচ্ছে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব

এমনকি রাজ্যের বিরোধী শিবিরও বলতে শুরু করেছেন এবার লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে কালীঘাট বনাম ক্যামাক স্ট্রিটের। সেই জল্পনা উস্কে দিয়েই এবার বিধায়কদের বৈঠকে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেই দিলেন দলের শেষ কথা তিনি। সোমবার বিধানসভার বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)।

সেখানেই সবার মাঝে একেবারে সটান তিনি (Mamata Banerjee) জানিয়ে দিলেন,’দল আমি আর বক্সীদাই দেখব’। অর্থাৎ ২০২৬ এর আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও দলের রাশ  থাকছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাতেই। সেকথাই এদিন একেবারে স্পষ্টাস্পষ্টি  জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুঝিয়ে দিলেন দলে তিনিই শেষ কথা। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল দলের চেয়ারম্যান তথা সুপ্রিমো হিসাবে তাঁকে এমন কথা বলারই বা দরকার পড়লো কেন?

শুধু তাই নয় এদিন নেত্রী জানিয়েছেন দলের ছাত্র ও যুব সংগঠন-ও তিনি নিজে হাতে সাজাবেন। তাহলে কি জল্পনাই সত্যি হতে চলেছে? সত্যিই দলে ক্রমশ গুরুত্ব হারাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়? প্রসঙ্গত একসময় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন মুকুল রায়। যদিও পরবর্তীতে বিগত কয়েক বছর ধরে সেই দায়িত্ব হস্তান্তরিত হয়ে এসেছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে।

তারপর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা হিসাবে গুরুত্ব বাড়তে থাকে অভিষেকের। আর হাতে ক্ষমতা আসার পর থেকেই প্রবীনদের বদলে নবীণদের  হয়ে বেশি সুর চরাতে দেখা গিয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু আচমকাই ছন্দপতন। দলে আবার গুরুত্ব বাড়তে শুরু করেছে প্রবীণ নেতৃত্বদের। বিশেষ করে কালীঘাটের জাতীয় কর্ম সমিতির বৈঠকেও ধরা পড়ে সেই একই ছবি। কালীঘাটের জাতীয় কর্ম সমিতির বৈঠকের পর দেখা যায় দলের মুখপত্রদের তালিকাতেও এসেছে বিরাট বদল।

আরও পড়ুন: মর্মান্তিক! কালীপুজোর প্রসাদ খাওয়ার পর গায়ে এঁটো জল ফেলার শাস্তি! পিটিয়ে খুন করা হল প্রৌঢ়কে

বাদ পড়েছে একাধিক পুরনো নাম। আর তাতেই এক ধাক্কায় দলে গুরুত্ব বেড়েছে প্রবীণ নেতাদের। আর তারপর থেকেই জল্পনা তৈরী হয়েছে দলে ক্রমশ কোণঠাসা করা হচ্ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। একই দাবি করেছিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। যার জন্য ইতিমধ্যেই শোকজ করা হয়েছে তাকে। ধমক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

Mamata Banerjee

আর আজ সোমবার বিধানসভা থেকে মমতা যে কথা বলে দিলেন তাতে বিরোধীরা বলছেন এবার লড়াইটা হচ্ছে, ‘কালীঘাট আর ক্যামাক স্ট্রিটের। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কথার রেশ টেনেই কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ প্রশ্ন তোলেন, ‘দলে তো উনিই শেষ কথা। এটা আলাদা করে বলতে হচ্ছে কেন? আসলে উনি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও কালীঘাট আর ক্যামাক স্ট্রিটের লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। এই লড়াই আর থামানো যাবে না। এটাই শেষের শুরু।’

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর