বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে রীতিমতো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলাদেশ। ঠিক এই আবহেই ওই দেশ থেকে ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির (Gautam Adani) কোম্পানির প্রসঙ্গে একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, বাংলাদেশ সরকার আদানি পাওয়ার থেকে কেনা বিদ্যুতের পরিমাণ কমিয়ে অর্ধেকে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আদানির (Gautam Adani) কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার প্রসঙ্গে কি জানাল বাংলাদেশ:
আসলে, আমেরিকায় গৌতম আদানির (Gautam Adani) বিরুদ্ধে তোলা ঘুষের অভিযোগের মধ্যে, বাংলাদেশ সরকার আদানি গ্রুপের সাথে চুক্তি পর্যালোচনা করার কথা বলেছিল। তবে, এবার পড়শি দেশ বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পাশাপাশি, শীতের মরশুমে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ সরকার। জানিয়ে রাখি যে, গৌতম আদানি এবং তাঁর সংস্থা আমেরিকার করা সমস্ত অভিযোগকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ওই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছে।
রয়টার্সের রিপোর্টে বলা হয়েছে, গৌতম আদানির (Gautam Adani) বিদ্যুৎ কোম্পানি আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে কেনা বিদ্যুৎ অর্ধেকে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। শীতের মরশুমে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়া এবং ইতিমধ্যে বিপুল বকেয়া পাওনা পরিশোধে বিলম্বের কারণে বাংলাদেশের সরকার এই বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। আদানি পাওয়ার ২০১৭ সালে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বাংলাদেশের সাথে ২৫ বছরের চুক্তি করেছিল।
আরও পড়ুন: জীবনের নতুন ইনিংসের পথে পিভি সিন্ধু! চলতি মাসেই হবে বিয়ে, হবু স্বামীর IPL-এর সাথে রয়েছে যোগ
আদানি পাওয়ার এই পদক্ষেপ নিয়েছে: এদিকে, সঙ্কটের মধ্যে থাকা বাংলাদেশ বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে। যার ফলে অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে। গৌতম আদানির (Gautam Adani) কোম্পানি আদানি পাওয়ারের ওই দেশের কাছে বিশাল ঋণ পাওনা রয়েছে এবং তা পরিশোধে ক্রমাগত বিলম্ব হচ্ছে। এই কারণে বকেয়া পরিশোধে বিলম্বের কারণে ৩১ অক্টোবর আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে সরবরাহ করা বিদ্যুতের পরিমাণ কমিয়ে অর্ধেক করে দেয়।
অর্থ মেটানোর প্রসঙ্গে কি জানিয়েছে বাংলাদেশ: সরকারি আধিকারিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্সের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশ এখন আদানি পাওয়ারকে আপাতত অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বলেছে। যদিও তারা তার পুরোনো বকেয়া পরিশোধ করতে থাকবে। সরকার পরিচালিত বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (BPDB) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, “আদানি পাওয়ার যখন আমাদের সাপ্লাই কমিয়ে দেয়, তখন আমরা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছিলাম। কিন্তু এখন শীতকালে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ায় আমরা তাদের বলেছি যে প্ল্যান্টের দু’টি ইউনিটই চালানোর প্রয়োজন নেই।”
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর ক্রমবর্ধমান অত্যাচারে উদ্বিগ্ন ইস্টবেঙ্গল! নিতে চলেছে বড় পদক্ষেপ
এখান থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়: জানিয়ে রাখি যে, আদানির কোম্পানি ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডে ২ বিলিয়ন ডলারের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এটির দু’টি ইউনিট রয়েছে। যার প্রতিটির ক্ষমতা প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের ২৫ বছরের চুক্তি হয়েছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময়। আদানির কোম্পানি সরবরাহ অর্ধেক করার পর ১ নভেম্বর থেকে একটি প্ল্যান্ট বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশের কাছে আদানির কোম্পানির পাওনা কত: BPDB-র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রেজাউল করিমের মতে, গৌতম আদানির কোম্পানি আদানি পাওয়ারের কাছে বাংলাদেশের প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫,৫০৭ কোটি টাকা) পাওনা রয়েছে। তিনি বলেন যে গত নভেম্বরে কোম্পানিকে প্রায় ৮৫ মিলিয়ন ডলার এবং অক্টোবরে ৯৭ মিলিয়ন ডলার প্রদান করা হয়েছিল। এদিকে, রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই দেশে কোম্পানিটির ঋণ এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০০ মিলিয়ন ডলারে। আদানি পাওয়ারও বাংলাদেশের ঋণকে উদ্বেগের বিষয় বলে বর্ণনা করেছে।