বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২২ সালের মার্চ মাসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী ছিল রামপুরহাটের বগটুই (Bogtui Incident)। সেই ঘটনায় মা, স্ত্রী, মেয়ে, দিদি, বোন, জামাই সহ ১০ জন আত্মীয়কে হারিয়েছিলেন মিহিলাল শেখ। এরপর তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) ‘টিভি বিস্ফোরণে’র মন্তব্যে ফুঁসে উঠেছিলেন তিনি। শনিবার তাঁকেই কেষ্টর সামনে দেখা গেল সম্পূর্ণ ‘অন্য’ রূপে।
অনুব্রতকে (Anubrata Mondal) সামনে পেয়ে কী করলেন ‘সেই’ মিহিলাল?
বগটুই কাণ্ডের পর প্রায় আড়াই বছর অতিক্রান্ত। এই ঘটনার পর রামপুরহাটের ওই গ্রামে তৃণমূলের (Trinamool Congress) প্রতি এক প্রকার ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল। কেষ্টর ‘টিভি বিস্ফোরণ’ মন্তব্য নিয়ে স্বজনহারাদের পাশাপাশি ফুঁসে উঠেছিলেন বহু গ্রামবাসী। ১০ জন আত্মীয় স্বজনকে একত্রে হারানো মিহিলালের নামও ছিল সেই তালিকায়। কিন্তু শনিবার রামপুরহাটের তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে তাঁকেই অনুব্রতর সামনে হাত জোড় করে দেখা গেল।
কারণ ব্যাখ্যা করে এরপর মিহিলাল বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের স্থায়ী চাকরি করতে হবে। যাদের দ্বারা সেটা হবে, তাঁদের প্রতি রাগ করে থাকলে কি হবে?’ এদিন মিহিলাল যখন অনুব্রতকে (Anubrata Mondal) হাতজোড় করে নমস্কার করছিলেন, তখন তাঁর পাশে বসে ছিলেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। বগটুইয়ে প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ডের বর্ষপূর্তিতে এই স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক যখন গ্রামে গিয়েছিলেন, সেই সময় তাঁকে ঘরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। তাঁর সঙ্গে দেখা করতেও অনেকে অস্বীকার করেছিলেন।
এদিকে একসময় যে অনুব্রতর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন। এখন তাঁর প্রতি রাগ কমে গিয়েছে কিনা জানতে চাওয়ায় মিহিলালের (Mihilal Sheikh) উত্তর আসে, ‘পরবর্তীতে উনি জানিয়েছিলেন ওনার ওই কথা বলা ঠিক হয়নি। আমি এখন ওই বিষয় নিয়ে মাতামাতি করতে যাচ্ছি না। এখন যেগুলো কাজ রয়েছে সেগুলো ওদের দিয়েই করতে হবে’।
বগটুইকাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজে ওই গ্রামে গিয়েছিলেন। পরিজনহারাদের চাকরির পাশাপাশি সাহায্য ঘোষণা করেছিলেন তিনি। এরপরেও অবশ্য অনেকের মনে শাসকদলের প্রতি ক্ষোভ থেকে গিয়েছিল। পরবর্তীতে সেটাকে কাজে লাগিয়ে একাধিক স্বজনহারাকে নিজেদের শিবিরে টেনে নেয় বিজেপি।
গতবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় মিহিলালের পরিবারের ৩ জন সদস্য পদ্ম শিবিরের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাঁদের হয়ে ভোট প্রচারে নেমেছিলেন মিহিলাল নিজে। এদিন অনুব্রতর (Anubrata Mondal) সামনে করজোড়ে দাঁড়ালেও তিনি দাবি করেন, এখনও বিজেপিতেই রয়েছেন। সেই সঙ্গেই মিহিলাল বলেন, ‘আমি দল নিয়ে মাতামাতি করছি না’। তাঁর কথায়, ‘যেটা হয়েছে সেটা ভোলার নয়। এখন আমাদের নিয়ে সবাই রাজনীতি করছে। যেখানে সুবিধা হবে আমায় সেখানে যেতে হবে। আমার কাজটা যদি উদ্ধার হয়ে যায়, সেই জন্য আমায় যেতে হবে’।