বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ঘটনার সূত্রপাত সেই আগস্ট মাসেই। আরজিকর কান্ডে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যা কান্ডের পর বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছিল গোটা বাংলা। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ পথে নেমে সামিল হয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ আন্দোলনে। রাজনীতির রঙ না দেখেই তিলোত্তমার নির্মম হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলেন কেউ কেউ।
পদ হারিয়ে কি প্রতিক্রিয়া শান্তনু সেনের (Shantanu Sen)?
তাঁদের মধ্যেই অন্যতম রাজ্যের শাসক দল তথা তৃণমূল কংগ্রেসের তৎকালীন মুখপাত্র শান্তনু সেন (Shantanu Sen)। তারপর থেকেই নিজের মতামত জানানোর জন্য মাশুল গুনতে হচ্ছে এই তৃণমূল নেতাকে। রাতারাতি মুখপত্রের পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দিয়ে দল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, ‘সংবাদমাধ্যমে শান্তনু সেনের (Shantanu Sen) বক্তব্য দলের নয়’।
শুধু তাই নয় রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদের নিরাপত্তাও প্রত্যাহার করে নিয়েছে রাজ্য সরকার। আর অতি সম্প্রতি, রাজ্য মেডিক্য়াল কাউন্সিল থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তারপর থেকেই বঙ্গ রাজনীতির অন্দরে ফিসফাস শান্তনুকে (Shantanu Sen) পদ থেকে সরিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় নাকি আসলে তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পথটাই পরিষ্কার করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ‘সারপ্রাইজ দেব’! চরম ঘনিষ্ঠ মুহূর্তেই প্রেমিকের যৌনাঙ্গে কোপ প্রেমিকার, চাঞ্চল্য ডোমজুড়ে
তবে কি সত্যিই এবার অভিমানী শান্তনুও যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে? কি প্রতিক্রিয়া শান্তনু সেনের? এপ্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে এই তৃণমূল নেতা বলেছেন, ‘অনেক সুবিধাবাদী আছে, যাঁরা নির্বাচনের আগে পাঁচিলের উপর উঠে যায় অথবা অন্য দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ফিরে আসে। কেউ আবার দলকে ব্ল্যাকমেইল করার জন্য, বাড়ির চারপাশে বিজেপির পতাকা দিয়ে মুড়ে ফেলে। তারপর সেই তৃণমূলের টিকিটেই বিধানসভার প্রার্থী হয়। শান্তনু সেন সেই দলের লোক নয়। শান্তনু সেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে আদর্শে অনুপ্রাণিত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে বিশ্বাসী একজন অনুগত তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক আছে আর আগামী দিনেও থাকবে’।
এখানেই শেষ নয় এদিন পদ খোয়ানোর পর বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তৃণমূল নেতা,তথা রাজ্য়সভার প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন। এদিন তিনি বলেন, ‘ব্য়াথার বহিঃপ্রকাশ ঘরের কোণে হয়, ক্যামেরার সামনে হয় না’।
পদ হারানোর পরেও নিজেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক বলে দাবি করে শান্তনু এদিন আরও বললেন,’নেত্রী এবং আমার দল, আমার নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন আমাকে যে দায়িত্ব দেবেন, যে কাজ করতে বলবেন আমি সেটাই করব। তৃণমূলের একজন সৈনিক হিসেবে আমি তৃণমূলের হয়ে লড়াই করে যাব’।
অতীত মনে করিয়ে দিয়ে রদিন তিনি বলেছেন, ‘প্রথম দিন শান্তনু সেন থেকে তৃণমূল কংগ্রেস করেছে। তৃণমূল কংগ্রেস করতে গিয়ে প্রচুর মারও খেয়েছে। শান্তনু সেন বিধানসভা নির্বাচনের আগে কিন্তু পাঁচিলের উপর দু’দিকে পা ঝুলিয়ে বসে থাকেনি। শান্তনু সেন কখনও ব্ল্যাকমেইল করে লোকসভা বা বিধানসভার টিকিট পাওয়ার চেষ্টা করেনি। শান্তনু সেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে, আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে আস্থা রেখে, তৃণমূল কংগ্রেসকে বুকে আগলে রেখে, পতাকা হাতে নিয়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে’।