বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমরা এতদিন জানি স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষা দেওয়া হয় সামাজিক শিক্ষা, কর্মশিক্ষা এবং পাঠ্য বইয়ের শিক্ষা নিয়ে। তবে কখনো কি শুনেছেন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেমের শিক্ষা দেওয়া হয়? এবার এমনই শিক্ষা দিতে চলেছে চীনের (China) কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় গুলি। সম্প্রতি চীনের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদেরকে প্রেমের শিক্ষা দিয়ে শিক্ষিত করার। তাই জন্য কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে এর উপর নতুন কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
চীনের (China) কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে দেওয়া হবে প্রেমের পাঠ:
জানা গিয়েছে চীনের (China) সরকার যে ভালোবাসার শিক্ষার পাঠ পড়াবে তাতে, দেশের নয়া প্রজন্মকে নারী-পুরুষের প্রেমের ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা হবে। এই শিক্ষার মাধ্যমে একে অপরের প্রতি তীব্র ভালবাসা, চাহিদা, আকাঙ্ক্ষা, রাগ-অনুরাগ ইত্যাদির পাঠ শেখানো হবে। সম্পর্ক এমন হবে না যে আজ ভালবাসো পরিণতি কাল ছেড়ে দেওয়া। বরং, ভালোবাসার পরিণতি বিয়েতে রূপ নেবে। পাশাপাশি সুখী দম্পতি হিসাবে সংসার করবে এবং সন্তান-সন্ততির জন্ম দেবে। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এই নতুন শিক্ষার নাম হবে “লাভ এডুকেশন”। তবে এই শিক্ষার পিছনে রয়েছে বিশেষ কারণ। জনসংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যেই চীনের সরকার এমন নয়া নীতি শুরু করেছে।
জনসংখ্যা বাড়ানোই একমাত্র উদ্দেশ্য: জানা গিয়েছে, চীন (China) যে লাভ এডুকেশন সিস্টেম চালু করতে চলেছে তার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র ভালোবাসা আদান-প্রদান নয়। এই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। জনসংখ্যার দিক থেকে চীন পৃথিবীর মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে। কিন্তু সূত্র মারফত জানা যায়, গত দু বছরে চীনের জনসংখ্যা ক্রমশ কমতে শুরু করেছে। আর জনসংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে চিন্তিত হয়ে পড়েছে সরকার। তাই তরুণ-তরুণীদের লাভ এডুকেশনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্কে অবগত করবে। আর বেশি বেশি করে প্রেমে পড়ার আহ্বান জানাবে। এতে করে, বিয়ের সংখ্যা বাড়বে, সন্তান-সন্ততি জন্ম দেবে এবং জনসংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।
কেন জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে চিনে (China): বিশিষ্ট গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, চীনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির মূল কারিগর হচ্ছে তরুণ-তরুণীরা। বর্তমানে তরুণ তরুণীদের মধ্যে বিরাট পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। বর্তমানে কর্মজগতের ব্যস্ততা, মানসিক চাপের তরুণ তরুণীরা প্রেমে বিমুখী হয়ে উঠেছে। সংসার তো দূর বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত দেখা যাচ্ছে সকলের মধ্যে। এমনকি একটি সমীক্ষা থেকে উঠে এসেছে, বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ শতাংশ পড়ুয়ারা প্রেমের প্রতি এখন আগ্রহী নয়। কারণ ক্যারিয়ার কর্মজগৎ সামলে আলাদা করে সঙ্গীকে সময় দেওয়ার অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে বিয়ে না করার প্রবণতাই সকলের মধ্যে দেখা দিচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ বৃন্দা অতীত! এবার আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে লড়বেন এই হেভিওয়েট আইনজীবী
আর তরুণ তরুণীদের এমন সিদ্ধান্তের কারণেই চীনের জনসংখ্যায় বেশ প্রভাব পড়েছে। পাশাপাশি জানা গিয়েছে জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চীন। তাই এই ক্ষতি আগেভাগে মেটাতেই চীনের সরকার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এবং তরুণ তরুণীদের মানসিক পরিবর্তনের জন্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে “লাভ এডুকেশন”এর মত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে। এতে করে নতুন প্রজন্মকে ভালোবাসা যেমন পাঠ পড়ানো যাবে তেমনি বিবাহ, সংসার, পরিবার ইত্যাদি সম্পর্কেও ইতিবাচক ধ্যান ধারণা তৈরি হবে।
আরও পড়ুনঃ বাংলা ছবিতে বড়সড় বিনিয়োগ, শিবপ্রসাদ-নন্দিতার উইন্ডোজের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ আদানি
তবে বর্তমানে তরুণ তরুণীদের এ প্রেমের প্রতি বিমুখী শুধু চীনেই (China) নয় এশিয়ার আরো বিভিন্ন দেশেও দেখা যাচ্ছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া। আর এমন অনিচ্ছা দেশকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যদিও সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, নতুন প্রজন্মের এমন অনাগ্রহীতা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক অবস্থা, বেকারত্ব এবং মানসিক চাপের কারণে। তবে চীন জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিকল্প খুঁজলেও অন্যান্য দেশগুলির কি অবস্থা সেটা এখনো জানা যায়নি।