বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বছর শেষ হওয়ার আগেই এল বিরাট সুখবর। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে রাজ্যের অসংখ্য বেকারদের মুখে ফুটতে চলেছে হাসি। বিগত ২ বছর ধরে অর্থাৎ ২০২২ সাল থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে রোজগার মেলার আয়োজন করা হয়। ওই কর্মসূচিতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত থেকেই নিয়োগপত্র পান চাকরিপ্রার্থীরা। দেশ জুড়ে একাধিক রাজ্যের চাকরি প্রার্থীরা এই নিয়োগ মেলায় অংশগ্রহণ করতে পারলেও এক্ষেত্রেও বঞ্চিত বাংলা।
হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে এবার নিয়োগপত্র দিতে পারবেন মোদী
চলতি বছরে আগামী ২৩ ডিসেম্বর ওই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে আধাসামরিক বাহিনীর এই ৪৬ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ সম্পন্ন হতে চলেছে। এতদিন মামলার জটেই আটকে ছিল পশ্চিমবঙ্গের চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া। বাকিরা সুযোগ পেলেও পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা চাকরিপ্রার্থীরা সুযোগ পাচ্ছিলেন না। তাঁদের মধ্যেই ৩৮ জন সুযোগ না পেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) মামলা করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার ওই মামলারই শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। সেখানেই অবশেষে কাটল জট। এদিন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রোজগার মেলায় চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র দিতে পারবেন। দেশ জুড়ে আধাসামরিক বাহিনীতে ৪৬ হাজার ৬১৭ শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত দিয়ে এদিন কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়েছে আধাসেনা বাহিনীর ওই নিয়োগের মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে।
এছাড়া মূল মামলাকারীরা পরবর্তী কালে যোগ্য বলে বিবেচিত হলে তাঁরাও মেধা তালিকায় স্থান পাবেন। প্রসঙ্গত প্রথমে সুযোগ না পেয়ে ওই মামলাকারীরা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তখন তাঁদের সিঙ্গল বেঞ্চ জানায়, মামলাকারীদের বিষয়টি বিবেচনা না করে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
আর ঠিক ১০ দিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা। এই পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তড়িঘড়ি ডিভিশন বেঞ্চে যায় কেন্দ্র। সেখানে দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়। এরপরেই বৃহস্পতিবার ডিভিশন বেঞ্চ সেনা বাহিনীর ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সবুজ সংকেত দিয়ে দেয়। তাই এবার আর কোনো বাধাই রইল না!
আরও পড়ুন: এত্ত ‘চুরি’! এবার কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর, জানেন কোন জেলায় ‘বদনাম’ সবথেকে বেশী?
অন্যদিকে আধাসেনার ৪৬ হাজার ৬১৭ শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে পশ্চিমবঙ্গের কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী দাবি করেন নিয়ম অনুযায়ী, আধাসেনার পদে চাকরি পেতে গেলে ১৭০ সেন্টিমিটার উচ্চতা হতে হয়। কিন্তু দেখা যায় তাঁদের উচ্চতা ‘আধ সেন্টিমিটার’ কম। এই সামান্য কম উচ্চতার যুক্তি খাঁড়া করেই চাকরির সুযোগ থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়। যদিও নিয়ম অনুযায়ী, ‘আধ সেন্টিমিটার’ উচ্চতা কম হলেও আবেদনকারীকে ওই পদের যোগ্য বলে বিবেচনা করতে বলা হয়।
এই মামলায় বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ জানিয়েছিল, ৩৮ জন মামলাকারীর বিষয়টি বিবেচনা করে তাঁদের আবার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসার সুযোগ দিতে হবে। আর তত দিন পর্যন্ত এসএসসিও মেধাতালিকা প্রকাশ করতে পারবে না। সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নির্দেশ পরিবর্তন করে এদিন দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে, তবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরবর্তী পর্যায়ে মামলাকারীরা উত্তীর্ণ হলে তারাও মেধাতালিকায় জায়গা পাবেন।