বাংলাহান্ট ডেস্ক : বর্তমানে ভারত বাংলাদেশের (Bangladesh) পারস্পরিক সম্পর্কের উত্থান পতন আন্তর্জাতিক মহলের বিশেষ মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি, বাংলাদেশে (Bangladesh) ভারত বিরোধী স্লোগানের মাঝেই এবার ঢাকা থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছোলেন ১০ জনের প্রতিনিধি দল। আবার ভারতীয় সেনার আট জন প্রাক্তন আধিকারিকও গিয়েছেন ঢাকায়। আবার কি নতুন করে কোনো সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠল?
দাপট দেখিয়ে বাংলাদেশ (Bangladesh) স্বাধীন করেছিল ভারত
না, সমস্ত উত্তর লুকিয়ে রয়েছে আজকের তারিখটায়। ১৬ ই ডিসেম্বর, ৫৩ বছর আগে ১৯৭১ সালে আজকের দিনেই স্বাধীন হয়েছিল বাংলাদেশ (Bangladesh)। বর্তমানে ওপার বাংলায় স্বাধীনতার সংজ্ঞা বদলালেও ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে, এদিন ভারত এবং বাংলাদেশের যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তানি সেনা। এইদিন বাংলাদেশের স্থানীয় সময় ৪ টে ৩১ মিনিটে ভারত এবং বাংলাদেশের (Bangladesh) যৌথ বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার পাশে বসে আত্মসমর্পণের দলিলে সাক্ষর করেছিলেন পাকিস্তানি সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজি। সেই ঐতিহাসিক দৃশ্যের ছবি ইন্টারনেটে রয়েছে ভারতের দাপট এবং বিজয়ের প্রতীক হিসেবে।
ইউনূসের আমলেও বজায় রইল রীতি: সেই দিনের পর থেকে প্রতি বছরই এদিনে দুই দেশের প্রতিনিধিরা সীমান্ত পেরিয়ে গিয়ে যোগ দেন ‘বিজয় দিবস’ উদযাপনে। তবে এ বছর পরিস্থিতি অন্য রকম। হাসিনা সরকারের পতন এবং ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের উত্থানের পর থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের (Bangladesh) সম্পর্কের রসায়ন বদলেছে। সরাসরি উঠেছে ভারত বিরোধিতার ডাক। তবুও এদিন রীতি বজায় রেখেই মুক্তিযোদ্ধা এবং অবসরপ্রাপ্ত বাংলাদেশি সেনা আধিকারিকদের মধ্যে ১০ জনের প্রতিনিধি দল এল কলকাতায়।
আরো পড়ুন : বছর ঘুরলেই শুভদিন, নিন্দুকদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাগদান-আশীর্বাদ সারলেন শ্বেতা-রুবেল
দুই দেশের সম্পর্কে বদল: ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতা এবং ঢাকায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন তাঁরা। প্রতি বছর এই দিনে মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করা আধিকারিকরা ভারত এবং বাংলাদেশের (Bangladesh) মধ্যেকার বন্ধুত্বের সম্পর্ককে তাজা করে তোলে। মুক্তিযুদ্ধ ভারত এবং বাংলাদেশের আত্মবলিদানের প্রতীক হয়ে রয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের (Bangladesh) এক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রির বাংলাদেশ সফরের পরেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আগের তুলনায় কিছুটা সহজ হয়েছে।
আরো পড়ুন : ঘটল না কোনো মিরাকল, বিভ্রান্তি কাটিয়ে চিরশান্তির দেশে পাড়ি দিলেন শিল্পী জাকির হুসেন
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের বিজয় দিবসের স্মৃতিচারণ করে এদিন ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে জানানো হয়, ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর সকাল ৯ টা পর্যন্ত আকাশপথে সাময়িক ভাবে অপারেশন বন্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু ভারত বাংলাদেশের যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের বিষয়ে সেনাদের জানানোর জন্য কিছুটা সময় লাগায় পাক সেনার আর্জিতে সেই সময় বাড়িয়ে দুপুর ৩ টে করা হয়েছিল। ৯৩,০০০ পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণ করেছিল ভারতের কাছে। তবে এর সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব সীমানায় অ্যাকশন বন্ধ হলেও পশ্চিম সীমানায় তা জারি ছিল। ১৭ ই ডিসেম্বর রাত আটটায় পশ্চিম সীমানায় অ্যাকশন শেষ হয়েছিল বলে জানানো হয় ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে।