বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ মঙ্গলবার লোকসভায় পেশ হতে চলেছে ‘এক দেশ এক ভোট’ (One Nation One Election) সংক্রান্ত বিল। এখন গোটা দেশের নজর রয়েছে সেদিকেই। শুরু থেকেই এক দেশ এক ভোট বিল নিয়ে গোটা দেশবাসীর মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। গত কয়েকদিন ধরেই এই বিল কবে কার্যকর হবে তা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা। প্রশ্ন উঠছে এই বিল সংসদে পেশ করার পর তা কবে আইনে পরিণত হবে তা নিয়েও। তবে বিল সংসদে পাশ হওয়ার পরেও তা কার্যকর হতে বেশ অনেকটাই সময় লেগে যেতে পারে।
লোকসভায় পেশ হচ্ছে এক দেশ এক ভোট বিল (One Nation One Election)
যদি কোন পরিবর্তন বা সংশোধনী ছাড়া এই বিলগুলি সংসদে পাশ হয়েও যায় তাহলে এক দেশ এক ভোট (One Nation One Election) ২০৩৪ সাল থেকে কার্যকর করা যেতে পারে। নিয়ম অনুযায়ী লোকসভায় কোন বিল পেশ হওয়ার পর তা আইনে পরিণত হওয়ার আগে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোতে হয়। প্রথমত লোকসভায় কোন বিল পেশ হওয়ার পর পাঠানো হয় সংসদীয় যৌথ কমিটিতে। প্রথমে ওই কমিটি বিলগুলি বিবেচনা করে দেখবে। এক্ষেত্রে যৌথ কমিটিতে কোন দলের কতজন সদস্য থাকবেন তা নির্ভর করে লোকসভার ওই দলের মোট সংসদের উপর।
সূত্রের খবর এই যৌথ কমিটির মেয়াদ থাকতে পারে নব্বই দিন। যদিও পরে প্রয়োজন হলে সেই মেয়াদ আরো বাড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে। সাধারণত বিলগুলির (One Nation One Election) কোথাও কোন সংশোধন কিংবা সংযোজন -বিয়োজনের প্রয়োজন হলে তা বিবেচনা করে দেখার দায়িত্বে থাকে এই সংসদীয় যৌথ কমিটি। এরপর পরবর্তী পর্যায়ে এই বিলগুলি নিয়ে ভোটাভুটি হয় লোকসভায়। সেখানে বিল পাশ হওয়ার পর তা যায় রাজ্যসভায়। এরপর রাজ্যসভা থেকে বিল পেশ হওয়ার পর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা পাঠানো হয় রাষ্ট্রপতির কাছে।
অনেকদিন ধরেই এই নিয়ম কার্যকর করতে একটু একটু করে পদক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। আমাদের দেশে এই এক দেশ এক নির্বাচন (One Nation One Election) ব্যবস্থা চালু হলে তা কতটা কার্যকর হবে তা বিবেচনা করার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ অবিনদের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গত মার্চ মাসে কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন এই কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে একটি রিপোর্ট জমা দিয়ে এসেছিল।
কোবিন্দের কমিটির সেই সুপারিশের সাথে সাযুজ্য বজায় রেখেই এই, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ সংক্রান্ত বিলগুলি তৈরি করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, মোট দুটি বিল রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে, ‘এক দেশ, এক ভোট’ (One Nation One Election) বিষয়ক— সংবিধান (১২৯তম সংশোধনী) বিল এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আইন (সংশোধনী) বিল। সূত্রের খবর এই বিলগুলিতে যে সংশোধনের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে একটি হলো রাজ্য বিধানসভা গুলির মেয়াদ এবং লোকসভার মেয়াদকে একই সময়ের মধ্যে শেষ করা অর্থাৎ লোকসভা এবং বিধানসভা একইসঙ্গে শুরু হবে এবং শেষ হবে একই সাথে।
আরও পড়ুন: শেষ মুহূর্তে বাতিল ‘ইউনিক আইডি’! এবার আবাস প্রকল্পে এই নিয়মে দেওয়া হবে টাকা
তবে এই সমস্ত নিয়মগুলি ২০৩৪ সালের আগে কার্যকর করার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ যে কমিটি গঠন করেছিলেন সেই কমিটির সুপারিশে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট ডেট-উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচনের পরে নতুন লোকসভার প্রথম অধিবেশনের সময় রাষ্ট্রপতি একটি দিন ঘোষণা করেছিলেন। ওই দিনের পর থেকে গঠিত রাজ্য বিধানসভা গুলির মেয়াদ লোকসভার সঙ্গেই শেষ হবে।
এর ফলে নতুন লোকসভা গঠন করা করতে সময় লাগবে আরও ৫ বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল। এরফলে ২০৩৪ সালের আগে এই বিল কার্যকর করার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে যদি ২০২৯ সালে লোকসভা গঠনের পর রাষ্ট্রপতি এই দিন ঘোষণা করেন তবে ওই তারিখের পর যে সমস্ত রাজ্য সরকার গুলি গঠিত হবে সেগুলির মেয়াদ লোকসভার মেয়াদের সঙ্গেই শেষ হয়ে যাবে। এর ফলে অনেক রাজ্যেই সে সময় ৫ বছরের পূর্ণ মেয়াদ বিধানসভা গুলি না পেতেও পারে।