বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর মেডিকেল কলেজের তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) প্রাক্তন সংসদ শান্তনু সেন (Santanu Sen)। যার জেরে ক্রমশ দলের সাথে দূরত্ব বেড়েছে তাঁর। আরজিকর কান্ডে (RG kar case) মন্তব্য করে একের পর এক পদ খুইয়েছেন তিনি। তবে এরই মধ্যে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (IMA) রাজ্য শাখার সম্পাদক হিসেবে আরও একবার জয়লাভ করলেন ডাক্তার শান্তনু সেন।
দল বহিষ্কার করলেও বিরাট কামব্যাক শান্তনুর (Santanu Sen)
যদিও প্রথমে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলেই ঠিক করেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মত বদল করেন এবং ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আরও একবার ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখার সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন শান্তনু (Santanu Sen)। এই নিয়ে তিনি পরপর সাতবার আইএমএ বেঙ্গলের রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন হয়েছেন তিনি।
বুধবার আইএমএ-র রাজ্য শাখার ভোট গণনাতে লাইভ স্ট্রিমিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এদিন ভোট গণনার পর দেখা যায় রাজ্য সম্পাদক পদে শান্তনু সেন (Santanu Sen) পেয়েছেন মোট ৪৩০ টি ভোট। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী চিকিৎসক সুকান্ত চক্রবর্তীর পেয়েছেন ১১৬টি ভোট। তাঁরা দুজনেই আরজিকরের প্রাক্তনী। এই নির্বাচনের মূল লড়াই ছিল তৃণমূল পন্থী চিকিৎসক প্যানেলের সঙ্গে বামপন্থী ও বিজেপিপন্থী চিকিৎসকদের। বিগত প্রায় দু’মাস ধরে এই আইএমএ শাখার নির্বাচন পর্ব চলেছে।
রাজ্য দপ্তরেই এই ভোটের গণনা ছিল। আরজিকর কান্ডের পর নির্বাচনের সময় জল্পনা তৈরি হয়েছিল উত্তরবঙ্গের চিকিৎসক গোষ্ঠীর পাশাপাশি শান্তনু (Santanu Sen) বিরোধী ডাক্তার সুদীপ্ত রায় এবং ডাক্তার সুশান্ত রায়রা বামপন্থী ও বিজেপি পন্থীদের সমর্থন করেছেন। যদিও গণনার পর আমূল বদলে গিয়েছে ছবিটা। আরও একবার বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন তৃণমূল পন্থী চিকিৎসক শান্তনু। আগামী দুই বছরের জন্য এই সম্পাদক পদে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। অন্যদিকে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ডাক্তার সুভাষ চক্রবর্তী ও ডাক্তার চন্দন ঘোষাল।
বিপুল ভোটে জয়লাভ করার পর তৃণমূল পন্থী চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আরজিকর কান্ডের পর যে সমস্ত বামপন্থী চিকিৎসকরা আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থন করে সরকার বিরোধী আন্দোলনকে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই এই নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়েছেন। এই সমস্ত বামপন্থী চিকিৎসকদের মধ্যে অন্যতম ডাক্তার কাজল বণিক, ডাক্তার পবিত্র গোস্বামী, ডাক্তার সুকান্ত চক্রবর্তী, ডাক্তার সুরজিৎ ঘোষরা। অন্যদিকে শিলিগুড়ি থেকে যে সমস্ত বিজেপি প্রার্থী চিকিৎসকরা দাঁড়িয়েছিলেন তাদের প্রত্যেকেরই জামানত জব্দ হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাইস্কুলের মতোই পুজোয় লম্বা ছুটি প্রাইমারিতে! বছর শেষের আগেই বড় ঘোষণা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের
জানা যাচ্ছে এই আই এম এ নির্বাচনে প্রায় ১৭ হাজার চিকিৎসকদের এই সংগঠনের মোট ভোটার সংখ্যা ৭৯৩। মোট ভোট পড়েছে ৬৩৩টি। তবে সর্বাধিক ভোটে জয়লাভ করেছেন তৃণমূলের প্রাক্তন সংসদ তথা সম্পাদক পদপ্রার্থী ডাক্তার শান্তনু সেন। এই জয়কে তিনি দেশের সমস্ত নির্যাতিত ও অত্যাচারিত চিকিৎসকদের উৎসর্গ করেছেন। একইসাথে দাবি করেছেন চিকিৎসক এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া গুন্ডাগিরির বিরুদ্ধে এবং ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বিল আনতে হবে।
একই সাথে রাজ্য বিধানসভায় পেশ হওয়া অপরাজিতা বিলকেও অবিলম্বে কেন্দ্রের অনুমোদনের দাবি করেছেন তিনি। প্রশ্ন তুলেছেন আরজিকর কান্ডের ৯০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কেন সিবিআই চার্জশিট পেশ করতে পারল না। সিবিআই-এর এই ব্যর্থতাকে তুলে ধরতেই আগামী ২৩ ডিসেম্বর আইএমএ-এর রাজ্য শাখা সিবিআই অফিস অভিযানের ডাক দিয়েছে। একই সাথে রাজ্য সরকারকে সহযোগিতা করার কথাও শোনা গিয়েছে, শান্তনু সেনের মুখে। তিনি জানিয়েছেন আইএমএ রাজ্য সরকারের যে কোনো ভালো কাজে সদর্থক ভূমিকা নিয়ে সাহায্য করবে।