বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজিকরের (RG Kar) তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের চার মাস অতিক্রান্ত। এখনও মেলেনি বিচার। অন্যদিকে এই মামলায় অভিযুক্ত আরজিকর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ রায় এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মন্ডলও সম্প্রতি জামিন পেয়ে গিয়েছে। ৯০ দিনের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট পেশ করতে না পারায় শর্তসাপেক্ষ জামিন পেয়েছে তারা। তারই প্রতিবাদে চিকিৎসকদের সংগঠন ‘জয়েন্ট ডক্টর প্ল্যাটফর্ম’ আরও একবার নতুন করে অবস্থান বিক্ষোভ করতে চলেছেন।
তবে এবার এই ধর্ণা মঞ্চের জন্য অনুমতি পাওয়া নিয়েই তৈরি হয়েছে জটিলতা। চিকিৎসকরা প্রথমে ধর্ণা মঞ্চের জন্য পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু যথারীতি পুলিশের তরফে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এর পরেই ওই চিকিৎসক সংগঠন দ্বারস্থ হয় কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। হাইকোর্টের তরফে চিকিৎসকদের ধর্ণায় অনুমতি মিললেও কাটছে না জটিলতা।
রাজ্যকে ধমক হাইকোর্টের (Calcutta High Court)
কথা দিয়ে আবার কথার খেলাপ করায় এবার রাজ্যের উপর রীতিমতো বিরক্ত কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ (Tirthankar Ghosh)। চিকিৎসকদের এই ধর্ণা মঞ্চ নিয়ে রাজ্যের তরফে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু শর্ত। যা নিয়ে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে চিকিৎসক সংগঠনের আইনজীবী জানিয়েছেন, ‘গতকাল অনুমতি দেওয়া হলেও কোন কাজ করা যাচ্ছে না। প্রচুর গাড়ি আটকে রয়েছে। ঢোকাও যাচ্ছে না। একথা শুনে জাস্টিস ঘোষ প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা কি ভিতরে যেতে পারছেন না? পুলিশ আপনাদের বাধা দিচ্ছে কেন?’
জবাবে রাজ্যের আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সিনিয়র অফিসাররা বিষয়টি দেখছেন কিন্তু একই সাথে তিনি বলেন, ‘রাজ্য জানতে চায় এই ধর্ণা বা বিক্ষোভ কত দিন চলবে?’ সেই সাথে শর্ত দেওয়া হয়েছে আগামী ২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর যেন এই অবস্থান বিক্ষোভ না হয়। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের বক্তব্য, ‘যদি এটা চলতেই থাকে তাহলে সমস্যা হবে। এটার শেষ দিন কবে তা জানাতে হবে।’ একইসাথে চিকিৎসকদের অবস্থান বিক্ষোভে ভীড় নিয়ন্ত্রণ করার যুক্তি উত্থাপন করে এই অবস্থান ওয়াই চ্যানেলে করার দাবি জানিয়েছে রাজ্য।
আরও পড়ুন: তাঁর স্ত্রীর…! বস্তা ভর্তি টাকা কীভাবে ‘সাদা’ করতেন পার্থ? বড় ‘রহস্য’ ফাঁস করল পার্থরই জামাই
তারপরেই এদিন আদালতে (Calcutta High Court) বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানতে চান বৃহস্পতিবার আদালত রায় দেওয়ার পর কেন নিজেদের মত বদলাতে চাইছে রাজ্য? তাতেই বেজায় বিরক্ত হয়ে জাস্টিস ঘোষ বলেন, ‘এরা চিকিৎসক। আমি নিজেই নির্দেশ দিয়েছি গতকাল। আপনাদের সাথে কথা বলেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বড়জোর একটা গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দিন। তার মধ্যে যতজন থাকবে তাদেরই অনুমতি দেওয়া হোক। তা নাহলে ভুল বার্তা যাবে’।
অন্যদিকে চিকিৎসকদের আইনজীবীর তরফে জানানো হয় তারা ওয়াই চ্যানেলে যাবে না। কারণ এটা ওদের (রাজ্যের) ইগো প্রবলেমে পরিণত হয়েছে। শুক্রবারেই আধঘন্টা সময়ের মধ্যে রাজ্যকে নতুন নকশা নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। শেষে বিচারপতি ঘোষ বলেন, ‘আমি চাই প্রোগ্রাম সফল হোক।’ সেই সাথে ২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর সংগঠনের পক্ষ থেকে যাতে সাধারণ মানুষকে আসার জন্য কোনো অনুরোধ না করা হয় সে কথাও জানিয়েছে হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।