বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রেশন দুর্নীতি কাণ্ড (Ration Scam) নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই মামলায় নাম জড়িয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) সহ একাধিক হেভিওয়েটের। তাঁদের মধ্যে অনেকে জামিনও পেয়ে গিয়েছেন। এই আবহে সম্প্রতি ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate) তথা ইডি। এবার এই গ্রেফতারি নিয়েই আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
বিচারকের প্রশ্নের মুখে ইডি (Enforcement Directorate)!
রেশন দুর্নীতি মামলায় সোমবার গভীর রাতে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ইডি (ED)। মঙ্গলবার তাঁদের আদালতে তোলা হয়। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন চালকল মালিক হিতেশ চন্দক। জানা যাচ্ছে, গতকাল তাঁকে আদালতে তুলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে দাবি করা হয়, ভার্চুয়াল ও ভুয়ো কিছু অ্যাকাউন্ট খুলে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডের টাকা নয়ছয় করতেন তিনি।
হিতেশের বালিগঞ্জের বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি হয়েছে। ডিজিটাল এভিডেন্স রয়েছে বলে জানায় ইডি (Enforcement Directorate)। দাবি করা হয়, ধৃত এই চালকল মালিকের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকেও চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ ঘনাচ্ছে রহস্য! ওসির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ! মমতাকে চিঠি মন্দারমণিতে ‘নিহত’ TMC নেতার স্ত্রীর
রেশন দুর্নীতি মামলায় হিতেশের পাশাপাশি সুব্রত ঘোষ এবং শান্তনু ভট্টাচার্যকেও গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এর মধ্যে সুব্রতও একটি মিলের কর্ণধার। জানা যাচ্ছে, ধৃত ৩ জনের বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয় এবং তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। এদিন এই ৩ জনের গ্রেফতারি নিয়েই আদালতের তরফ থেকে প্রশ্ন তোলা হয় বলে খবর।
হিতেশের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে নগর দায়রা আদালতের বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় জিজ্ঞেস করেন, ‘এক বছর আগে তাঁর নাম এসেছিল। তখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক বছর পর তাহলে কেন গ্রেফতার?’ পাল্টা তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়, তদন্তে সময়সাপেক্ষ। নানান বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ধৃত হিতেশের আইনজীবী আদালতে বলেন, এক বছর আগে অভিযান এবং জেরা করেছে ইডি (Enforcement Directorate)। এখন তো আর নতুন কিছু পাওয়ার নেই। অন্যদিকে ধৃত সুব্রতর আইনজীবীর সওয়াল শোনার পর আবার ইডির কাছে বিচারক জিজ্ঞেস করেন, ইতিমধ্যেই যে মামলায় অনেকে জামিন পেয়েছেন, অনেকে আবার জামিনের আবেদন করেছেন, সেখানে আচমকা এতদিন পর কেন গ্রেফতার?
কোম্পানির সিএ শান্তনুর আইনজীবী আবার বলেন, গত বছর ২৮ বার তাঁর মক্কেলকে ইডি দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। জ্যোতিপ্রিয়র থেকে শান্তনু যে ২.৪৪ কোটি টাকা নিয়েছিলেন, সেটাও ড্রাফটের মাধ্যমে ইডিকে ফেরত দিয়েছেন। তদন্তে সহযোগিতার পাশাপাশি কোনও সাক্ষীকে প্রভাবিত করেননি। তা সত্ত্বেও কেন গ্রেফতার করা হল?
রেশন দুর্নীতি মামলায় এতদিন পর ৩ জনকে গ্রেফতার করা নিয়ে এদিন বিচারকের জোরালো সওয়ালের মুখে পড়ে ইডি (Enforcement Directorate)। কেন্দ্রীয় এজেন্সির তরফ থেকে ধৃতদের ১০ দিনের জন্য ইডি হেফাজতের আবেদন জানানো হয়। আগামী বছরের ২ জানুয়ারি অবধি তাঁদের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।