বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) ২০২২ সালে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। এরপর দেখতে দেখতে প্রায় আড়াই বছর অতিক্রান্ত। এখনও জেলমুক্তি হয়নি। এবার তাঁকে নিয়েই বিস্ফোরক দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate)। সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পঞ্চম অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেখানেই এই চাঞ্চল্যকর দাবি করা হয়েছে।
কীভাবে দুর্নীতির টাকা ‘সাদা’ করতেন পার্থ (Partha Chatterjee)?
জানা যাচ্ছে, নিয়োগ মামলার পঞ্চম সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে ইডির দাবি, একাধিক সংস্থার মাধ্যমে ‘আর্থিক তছরুপ’ করেছেন পার্থ। কীভাবে তিনি টাকা বিনিয়োগ করতেন, সেটাও বিশদে তুলে ধরা হয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সির চার্জশিটে। ইডির দাবি, লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে ফ্ল্যাটের অগ্রিম বুকিং করে রাখতেন। তবে কোনও ফ্ল্যাটই পুরোপুরি কিনতেন না প্রাক্তন মন্ত্রী।
তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এভাবে অগ্রিম দিয়ে ফ্ল্যাট বুকের মাধ্যমে সম্পত্তির পরিমাণ বাড়াতেন পার্থ (Partha Chatterjee)। সেই সঙ্গেই দুর্নীতির টাকাও ‘সাদা’ করে ফেলতেন। এটি তাঁর অন্যতম ‘কৌশল’ ছিল বলে দাবি করেছে ইডি। বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
আরও পড়ুনঃ ‘৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত..,’ মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট! RG Kar কান্ডের প্রতিবাদ আন্দোলনে বিরাট নির্দেশ
ইডির (ED) কথায়, একাধিক নির্মাণ সংস্থাকে অ্যাডভান্স দিয়েছিলেন পার্থ। কলকাতার পাশাপাশি শহরতলিতেও বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট বুকিং করে রেখেছিলেন। তবে কোনও ফ্ল্যাটই পুরোপুরি কেনেননি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, এই ফ্ল্যাট বিষয়ক লেনদেনের জন্য ইম্প্রোলাইন কনস্ট্রাকশনস প্রাইভেট লিমিটেড ও এইচআরআই ওয়েলথ ক্রিয়েশন রিয়েলটরস প্রাইভেট লিমিটেড নামক দু’টি সংস্থার মালিকানা গ্রহণ করেছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এর মাধ্যমেই রাজ্যের নানান প্রান্তে লাখ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে ফ্ল্যাট বুক করে রাখতেন তিনি।
জানা যাচ্ছে, কোনও ফ্ল্যাট বুক করার ক্ষেত্রেই নিজের নাম ব্যবহার করতেন না পার্থ (Partha Chatterjee)। রাজীব দে নামের একজনকে দিয়ে এই সংক্রান্ত কাজ করাতেন। জেরার সময় রাজীব নিজে কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাছে একথা স্বীকার করেছেন বলে খবর। সেই সঙ্গেই চার্জশিটে সুরঞ্জিতা জানা নামের একজন মহিলারও উল্লেখ রয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ফ্ল্যাট সংক্রান্ত সংস্থাগুলির তিনি ডিরেক্টর ছিলেন। ফ্ল্যাট বুকিংয়ের যে সকল কাগজপত্র ছিল, সেখানে এই সুরঞ্জিতাই সই করতেন বলে খবর। জানা যাচ্ছে, রাজীবকে জেরা করে উক্ত দুই সংস্থার ডিরেক্টর থেকে শুরু করে অগ্রিমের মাধ্যমে ফ্ল্যাট বুকিংয়ের ‘কৌশল’ সম্বন্ধে বিশদে জানতে পারে ইডি।
পার্থ (Partha Chatterjee) কেন এই ‘কৌশল’ ব্যবহার করতেন, এই বিষয়ে ইডি সূত্র উদ্ধৃত করে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, একটি ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে কোটি টাকা ব্যয়ের চেয়ে অল্প অল্প অগ্রিম দিয়ে একাধিক সম্পত্তি বুক করে রাখার সুবিধা অনেক বেশি। এর ফলে যেমন ওই অর্থের ‘সদ্ব্যবহার’ হয়, তেমনই সম্পত্তির পরিমাণও বৃদ্ধি পায়।