নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি! এবার সেই ‘কালীঘাটের কাকু’কে নিয়ে বড় খবর

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘদিন ধরেই শিরোনামে রয়েছেন ‘কালীঘাটের কাকু’ (Kalighater Kaku) ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। দিনের পর দিন আদালতে হাজিরা এড়ানোর পর এবার ‘ভদ্র কাকু’র অসুস্থতা ঘিরে ঘনিয়ে উঠেছে নতুন রহস্য। ঘটনাক্রম দেখে অনেকেই বলছেন কালীঘাটের কাকুর এই অসুস্থতার আখ্যানের সামনে ফেল সিনেমার চিত্রনাট্যও।

‘কালীঘাটের কাকু’র (Kalighater Kaku) পেসমেকারের সমস্যা নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় চার্জ গঠনের ঠিক আগেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujay Krishna Bhadra)। বর্তমানে আইসিউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। নিয়োগ মামলার চার্জ গঠনের দিন প্রথমেই তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে আদালতে কালীঘাটের কাকুর (Kalighater Kaku) আইনজীবী তাকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার আবেদন জানিয়েছিলেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করতেই এসএসকেএম হাসপাতাল থেকেই কাকুকে স্থানান্তরিত করা হয় আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। পরে জানানো হয় সেখানে কাকুর জন্য, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। তাই আবার বাইপাসের ধারের অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে কালীঘাটের কাকুকে।

বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের সাবাল-জবাব শোনার পরেই তার অসুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতের বিচারক। তিনি সরাসরি জানতে চান, ‘কাকুর কি হয়েছে?’ সেই সময় আদালতে দাঁড়িয়ে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের (Kalighater Kaku) আইনজীবী জানিয়েছিলেন দশ বছরের বেশি হয়ে যাওয়ায় কাকুর পেসমেকারের ব্যাটারি নাকি আর কাজ করছে না। এরপর আইনজীবীর এই বক্তব্য ঘিরে ‘ভদ্র কাকু’র অসুখ নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন রহস্য।

প্রসঙ্গত, এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে পরে কাকুকে যখন বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল তখন কারণ হিসেবে একটি মেডিকেল রিপোর্ট জমা দিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছিল সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কোন হার্টের সমস্যা নেই। তার অন্য রোগের চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন। তাই আলিপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে কাকুকে নিয়ে যাওয়া হয় বাইপাসের অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে।

আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর! আলুর কালোবাজারি’র সাথে জড়িত কারা? মমতাকে সব বলে দিলেন বেচারাম

এখন প্রশ্ন উঠছে যদি কাকুর কার্ডিওলজির কোন সমস্যাই যদি না থাকে তাহলে পেসমেকার বিকল হওয়ার কথা আদালতে কেন বললেন আইনজীবী? তাহলে আলিপুরের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের রিপোর্টে কি কোন ভুল আছে? এবার বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে উঠে আসছে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের পেসমেকারে কোন সমস্যা নেই। ওই পেসমেকার নাকি এখনও আড়াই বছর চলবে। আর এটা কারও মুখের কথা নয়। পরীক্ষা করেই এই দাবি করেছে ওই সংশ্লিষ্ট পেসমেকার কোম্পানি। জানা যাচ্ছে, ২০১১ সালে ‘সেন্ট জুড’ নামে একটি সংস্থার পেসমেকার বসানো হয়েছিল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের হার্টে।

Kalighater Kaku

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে থাকাকালীনও পেসমেকার-এর উপর নির্ভর ছিলেন না কাকু। এই বক্তব্যকে মান্যতা দিয়েছে এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর সংজ্ঞাহীন অবস্থায় রোগী দেখে তার পেসমেকার পরীক্ষা করানো হয়। এস‌এসকেএম-এর এই পরীক্ষাতেও কাকুর পেসমেকারে কোন‌ও সমস্যা ধরা পড়েনি। এই প্রসঙ্গে আরও একটি প্রশ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই পেসমেকারের সমস্যার দাবি যদি ভুয়ো হয় তাহলে কাকু সংজ্ঞাহীন হলেন কেন? বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর বর্তমানে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের শারীরিক অবস্থা, ‘স্থিতিশীল তবে সংকটজনক’।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর