৫ বছর জেলবন্দি! অবশেষে মিলল জামিন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তোলপাড় দেশ

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ খুনের মামলায় যুব তৃণমূলের দাপুটে নেতা আনিসুর রহমান (Anisur Rahman) জেলবন্দী ছিলেন পাঁচ বছর। দীর্ঘদিন ধরে একাধিক আদালতে ঘুরে ঘুরেও জামিন পাননি তিনি। অবশেষে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি অভয় এস ওকা ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মসীহ্-র বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করেছেন। তবে জামিন মিললেও আদালত নির্দেশ দিয়েছেন আনিসুর পূর্ব মেদিনীপুরে ঢুকতে পারবে না। একই সাথে তাকে রোজ পুলিশের কাছে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশে জামিন পেল আনিসুর

সালটা ছিল ২০১৯, ওই বছরের ৭ অক্টোবর পাঁশকুড়ার মাইশোরায় দলীয় কার্যালয়েই খুন হন পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কুরবান শা (Kurban Shah)। এই মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে নাম উঠে আসে আনিসুরের। যদিও সেই সময় তিনি ছিলেন বিজেপিতে। বিশেষ তদন্তকারী দল সিট গ্রেফতার করেছিল তাকে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকার এই কুরবান হত্যা মামলা প্রত্যাহার করার সুপারিশ করে। তারপর আনিসুরও বিজেপি ছেড়ে আবার তৃণমূলে ফিরে আসার কথা ঘোষণা করে।

পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) হস্তক্ষেপে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারের সুপারিশ বাতিল করে এবং নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের নজরদারিতেই কলকাতা নগর ও দায়রা আদালতে ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার চলবে। সুপ্রিম কোর্টে আনিসুরের জামিন মঞ্জুর হওয়ার পর তার আইনজীবী অমরজিৎ সিংহ বেদী জানিয়েছেন বিগত পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে আনিসুর জেলবন্দি। মূল সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করার পরেও আনিসুরকে দোষী সাব্যস্ত করার মতো কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন: রাজ্যের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট হাইকোর্ট! হলফনামা সমেত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ

প্রয়াত কুরবান শা-র পরিবারের আইনজীবীদের অভিযোগ ছাড়া পাওয়ার পর পূর্ব মেদিনীপুর গিয়ে মামলার নিষ্পত্তিতে প্রভাব খাটাতে পারে আনিসুর। তাই সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) নির্দেশ দিয়েছে জামিন পেলেও আনিসুর পূর্ব-মেদিনীপুরে ঢুকতে পারবে না। সেই সাথে দৈনিক তাকে পুলিশের কাছে হাজিরাও দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আনিসুর জামিন পাওয়ার পর তমলুকের জেলা তৃণমূল সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এখন জামিনের শর্ত থাকায় উনি জেলায় ফিরতে পারবেন না। তবে একদিন শর্ত উঠে যাবে। তখন উনি আবার দলের কাজে যুক্ত হবেন।’

Supreme Court

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে আনিসুর প্রথমে ছিলেন সিপিএমে তারপর তৃণমূল এবং শেষে যান বিজেপিতে। কিন্তু সংশোধনাগারে থাকাকালীন সমাজ মাধ্যমে আনিসুরের নামে পোস্টে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার পুরনো সম্পর্কের কথা তুলে ধরা হয়। পরে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনিসুরের গ্রেপ্তারিকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছিলেন। আর এর জন্য তিনি দায়ী করেন বঙ্গ বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। লোকসভা ভোটের প্রচারে পাঁশকুড়ায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘আমার একজন পছন্দের লোককে ওই গদ্দার জেলে রেখে দিয়েছে। আগামী দিনে আমি ওকে বার করবই।’

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর