তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি, এটাই পৃথিবীর শীতলতম শহর! ঠান্ডা থেকে বাঁচতে পরতে হয় ১০ কেজির পোশাক

বাংলা হান্ট ডেস্ক: গ্রীষ্মকালের চাঁদিফাটা গরম থেকে বাঁচতে সকলেই শীতের মন্ত্র আওড়াতে থাকেন। ইতিমধ্যেই বঙ্গজুড়ে শীতের ইনিংস চলছে। ১৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কাঁপছে গোটা রাজ্যবাসী। কিন্তু আপনি কি জানেন পৃথিবীর সবচেয়ে শীতলতম শহর (Coldest City) কোনটি? সেখানে তাপমাত্রা শুনলে মাথায় হাত পড়বে আপনাদের। শোনা যায়, সেখানকার বাসিন্দারা প্রতিদিন ১০ কেজি শীতের পোশাক পরেন। নাহলে সারা শরীর বরফের মতো শক্ত হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, এখানে ফুটন্ত গরম জল খোলা আকাশে ছুঁড়ে দিলে সেকেন্ডের মধ্যে বরফ হয়ে যায়। ১০ মিনিটের বেশি কেউ বাইরে থাকতে পারে না। কোথায় রয়েছে এই শহর?

বিশ্বের শীতলতম শহরের (Coldest City) নাম:

সম্প্রতি সমাজ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখান থেকে জানা গিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে শীতলতম (Coldest City) শহর হচ্ছে ইয়াকুটস্ক। জানা গিয়েছে, এই শহরটি রাশিয়ার সাইবেরিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। বলা যায়, শহরটি সারাবছর বরফেই ঢাকা থাকে। শহরের তাপমাত্রা থাকে মাইনাস ডিগ্রিতে। জানা গিয়েছে, এই শহরের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা -৪৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখনও পর্যন্ত এখানে রেকর্ড সর্বনিম্ন তাপমাত্রা -৭১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই ঠান্ডায় বাইরে বেরোতে হলে কমপক্ষে ১০ কেজি শীতের পোশাক পরে বেরোতে হয়।

This is the coldest city in the world.

ইয়াকুটস্কে কি কি সমস্যা হয় এই শীতের কারণে: রাশিয়ার একেবারে পূর্বে রাজধানী মস্কো থেকে পাঁচ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইয়াকুটস্ক। এখানকার মানুষজন অত্যন্ত কষ্টের সাথে দিনযাপন করে থাকেন। জানা গিয়েছে, এখানে কোন মানুষ যদি ১০ মিনিটের বেশি বাইরে থাকে তবে সেই ব্যক্তির ফ্রস্ট বাইট হতে পারে। রাস্তায় বেরোনোর আগে শুধুমাত্র চোখ ছাড়া গোটা শরীর ঠান্ডা পোশাকে ঢাকা থাকে। নইলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আরও পড়ুনঃ আরো কাছাকাছি এভি-কথা, গল্পের গতি বাড়িয়ে মা হবেন নায়িকা! বড় টুইস্ট আসছে সিরিয়ালে

এখনাকার জীবনযাত্রা অত্যন্ত কষ্টের: শীতলতম শহর (Coldest City) ইয়াকুটস্কে নিরামিষভোজীদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ এখানে টাটকা শাকসবজি পাওয়া প্রায় দুষ্কর বলা চলে। এই ঠান্ডায় সবজি বরফ হয়ে যাওয়ার মতো দশা। তবে আমিষভোজীদের জন্য খুব একটা সমস্যা হয় না। মাছ, মাংস বাজারে ভালোই বিক্রি হয়। যদিও এখানে কোন কিছুই টাটকা থাকে না, সবই তাপমাত্রার কারণে শক্ত হয়ে যায়। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, রাস্তায় বেরোলে মোবাইল নিয়েও বেশিক্ষণ থাকা যায় না। এখানকার মাইনাস ডিগ্রি তাপমাত্রা সহ্য করতে অক্ষম ডিভাইসগুলি।

আরও পড়ুনঃ আর নয় দার্জিলিং! পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন উত্তরবঙ্গের এই নতুন ভিউ পয়েন্টে, মন ভোলাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা

ইয়াকুটস্কের মাটি বরফের কারণে এতটাই জমাট বাঁধা থাকে যে মৃতদেহদের কবর দেওয়ার আগে আগুন জ্বালিয়ে বরফ গলাতে হয়। তারপর খনন কাজ করা যায়। এখানে জীবন জীবিকা এতটা সংকীর্ণ হওয়ার পরও, জনসংখ্যা ৩ লক্ষেরও বেশি। বলা যায় এখানকার মানুষেরা এই তাপমাত্রার সাথে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। যার ফলে খুব একটা সমস্যা হয় না। বিশ্বের শীতলতম শহর (Coldest City) ইয়াকুটস্কে একবার গেলে আর জীবনেও যাওয়ার নাম নেবেন না।

Sunanda Manna
Sunanda Manna

সুনন্দা মান্না, বাংলা হান্টের স্ক্রিপ্ট রাইটার। গুরুদাস কলেজ থেকে সাংবাদিকতা করার পর থেকেই সংবাদ মাধ্যমে কাজ শুরু। দেশ থেকে বিদেশ, রাজনীতি, বিনোদন বিভিন্ন তথ্যই আপনাদের কাছে তুলে দেওয়া আমার মূল লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর