বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর অক্টোবর নাগাদ হু হু করে বেড়েছিল আলুর (Potato) দাম। যে কারণে ফাঁপরে পড়েছিল সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আসরে নামে সরকার (Government of West Bengal)। রাজ্যের তরফ থেকে ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোয় লাগাম টানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরকার স্পষ্ট জানায়, রাজ্যবাসীর চাহিদা না মিটিয়ে বাইরের রাজ্যে আলু পাঠানো যাবে না। সরকারের সেই সিদ্ধান্তের ‘ফল’ এখন ভুগতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের!
সরকারের (Government of West Bengal) সিদ্ধান্তের ফলে বিপাকে আলু ব্যবসায়ীরা!
গত বছর এক সময় দেখা যায়, খোলা বাজারে আলুর দাম ৪০ টাকা/কেজি ছাড়িয়ে গিয়েছে। যা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, ব্যবসায়িক স্বার্থে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বাংলার বাইরে বেশি করে আলু পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এর ফলে চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে খোলা বাজারে বাড়ছে আলুর দাম।
এদিকে এখন জানা যাচ্ছে, গত মরসুমের কমপক্ষে ২ লক্ষ টন আলু এখনও রাজ্যের হিমঘরগুলিতে রয়েছে। আগামী মরসুমের জন্য রক্ষণাবেক্ষণের বাধ্যবাধকতায় হুগলি এবং বর্ধমানের হিমঘরের মালিকরা মজুত আলু হিমঘরের বাইরের শেডে বের করে দিয়েছেন। বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে আবার এত বেশি আলু জমে রয়েছে যে শেডে রাখা যায়নি।
আরও পড়ুনঃ অ্যাকাউন্টে ৬০,০০০ ঢুকলেও শান্তি নেই! এবার জোর বিপাকে আবাস যোজনার গ্রাহকরা
এই আবহে আলু ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকারের (Government of West Bengal) তরফ থেকে বাইরের রাজ্যে আলু পাঠাতে না দেওয়ার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে সার্বিকভাবে যেমন তাঁদের ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়েছে, তেমনই জলদি আলুর মরসুমে চাষিরাও আলুর মূল্য পেলেন না।
এই বিষয়ে রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্য প্রশাসনের কাছে তথ্যের গরমিল ছিল। আমাদের আশঙ্কা সত্যি করে রাজ্যের হিমঘরগুলিতে এখনও অন্তত ২ লক্ষ টন আলু থেকে গেল। বর্ধমান, হুগলিতে হিমঘরের মালিকরা শেডের বাইরে আলু বের করে দিয়েছেন। বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশিরভাগ আলুই ভিন রাজ্যে পাঠানোর ছিল। পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে সেখানকার আলু শেডে বের করা যায়নি। বাজার জুড়ে এই আলু থাকার কারণে মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়ায় জলদি আলু উঠলেও চাষিরা মূল্য পেলেন না’।
এদিকে গত বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলুর দাম (Potato Price) বৃদ্ধি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করার পর পদক্ষেপ নেয় রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন। ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অসমের সীমানায় আলুর ট্রাক আটকানো হয়। ব্যবসায়ীরা সেই সময় বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, যদি আগাম ঘোষণা ছাড়া রফতানি বন্ধ করা হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ করার দায়ে তাঁরা অভিযুক্ত হবেন। পাশাপাশি ভিন রাজ্যে যে আলু পাঠানো হচ্ছে সেগুলির খোসা মোটা। এই রাজ্যের মানুষ সেই ধরণের আলু খেতে অভ্যস্ত নন। রাজ্য অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড় ছিল।
এদিকে আলু ব্যবসায়ীদের অনুযোগ, রাজ্য (Government of West Bengal) সেই সময় বাইরের রাজ্যে আলু পাঠাতে না দেওয়ার কারণে বর্তমানে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতরের একজন কর্তা বলেন, ‘রাজ্যের বাজারে আলুর জোগান নিশ্চিত করতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জোগানের সমতা বিঘ্নিত হয়, রাজ্য সরকার এমন কোনও পদক্ষেপ নিতে চায়নি’।