শরীরে নেই সুতোটুকুও! ঘন্টার পর ঘন্টা নামজপ, ঠাণ্ডায় কীভাবে নিজেদের শরীরকে গরম রাখেন নাগা সাধুরা?

বাংলাহান্ট ডেস্ক : শুরু হয়ে গিয়েছে মহাকুম্ভ। দীর্ঘ ১৪৪ বছর পর ২০২৫ সালে প্রয়াগরাজে ত্রিবেণী সঙ্গমে আয়োজিত হয়েছে বিশ্বের অন্যতম সর্ববৃহৎ এই ধর্মীয় মেলা। শুধু ভারত নয়, সমগ্র বিশ্ব থেকে নানা জাতির, নানান বর্ণের মানুষ হাজির হয়েছেন এই মেলায়। ‘বাবা’দের ভিড়ে মাথা ঘুরিয়ে যাওয়ার জোগাড়! তবে সকলের মাঝে বিশেষ ভাবে যাঁরা নজর কাড়েন, তাঁরা হলেন নাগা সন্ন্যাসী (Naga Sadhu)। কুম্ভমেলা বা মহাকুম্ভের এঁরাই নিঃসন্দেহে সবথেকে বড় আকর্ষণ। তাঁদের তপস্যা, সাধনা মার্গ সবটাই অসীম কৌতূহলে আকর্ষণ করে সাধারণ মানুষকে।

নাগা সাধুর (Naga Sadhu) অর্থ কী

‘নাগা’ এসেছে ‘নাগ’ থেকে, সংস্কৃতে যার অর্থ পাহাড়। আদিগুরু শঙ্করাচার্য বলেছিলেন, নাগা হল এমন একজন যিনি পাহাড়ের মতোই অচল, স্থিতধী। নাগা সন্ন্যাসীরা (Naga Sadhu) পরিচিত তাঁদের অত্যন্ত প্রতিকূল জীবনযাত্রার জন্য। শ্রী দিগম্বর নাগা সাধুরা শরীরে একটা সুতোও রাখেন না। অন্যদিকে দিগম্বর নাগা সন্ন্যাসীরা (Naga Sadhu) কোমরে এক টুকরো বস্ত্র রাখেন শুধু। মাখেন ভস্ম, যা কখনো চিতা থেকে আসে, কখনো বা ধুনি থেকে।

How do naga sadhu keep themselves warm in winter

ঠাণ্ডায় কীভাবে থাকেন নাগা সাধুরা: কিন্তু অনেকের মনেই যে প্রশ্ন ওঠে, প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় বিনা বস্ত্রে কীভাবে থাকেন নাগা সাধুরা (Naga Sadhu)? বিশেষ করে প্রয়াগরাজে বর্তমানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ১০-১১ ডিগ্রির আশেপাশে। এই কনকনে ঠাণ্ডায় সাধারণ মানুষ যখন দু তিনটে সোয়েটার চাপিয়েও জবুথবু, সেখানে নাগা সন্ন্যাসীরা (Naga Sadhu) এমন অবিচল কীভাবে থাকেন? মহাকুম্ভে এই প্রশ্নই করা হয়েছিল কয়েকজন নাগা সাধুকে। কী জবাব দিলেন তাঁরা?

আরো পড়ুন : বিয়েকেও টেক্কা দেবে রিসেপশন, প্রকাশ্যে শ্বেতা-রুবেলের নজরকাড়া বৌভাতের কার্ড, কোথায় হচ্ছে অনুষ্ঠান?

কী জানালেন সাধুরা: সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নে একজন নাগা সন্ন্যাসীকে (Naga Sadhu) বলতে শোনা যায়, “সাধনার পথে চলে আসছে ঠাণ্ডার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। সবকিছূই ত্যাগ করে আর ঠাণ্ডা কীভাবে লাগবে?” তিনি আরো বলেন, “ভক্তিতে অনেক শক্তি রয়েছে। ভগবানের নাম করলে কোনো ঠাণ্ডাই লাগে না”।

আরো পড়ুন : নতুন সিরিয়াল আনছে ‘বেঙ্গল টপার’এর প্রোডাকশন হাউজ, প্রথমবার জুটিতে এই নায়ক-নায়িকা

শরীরে তাঁরা যে ভস্ম লাগান, তাতে কি কোনো প্রভাব পড়ে ঠাণ্ডায়? নাগা সাধু (Naga Sadhu) উত্তর দেন, “অবশ্যই। এটা একরকম বস্ত্রের মতো। আপনারা পোশাক পরেছেন, আমরা ভস্ম লাগিয়ে রেখেছি। আমরা অঘোরী বাবা, এই ভস্ম শরীরে লাগিয়ে রাখি, এতে শীত কম লাগে। ঠাণ্ডাকে আটকায় ভস্ম”। আরেকজন বললেন, “ভগবানের নাম জপ করো, এটাই সবথেকে বড় অস্ত্র ঠাণ্ডার।” শুধু তাই নয়, তিনি আরো বলেন, ১২-১৪ ঘন্টা একভাবে বসে থাকলে পায়ে ব্যথা হবেই, পেটও শুকিয়ে যাবে। তপস্যা যে হাতের মোয়া নয়, সেটা স্পষ্টই বুঝিয়ে দিয়েছেন ওই নাগা সন্ন্যাসী।

Niranjana Nag
Niranjana Nag

নীরাজনা নাগ, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। নারুলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করার পর সাংবাদিকতার সফর শুরু। বিগত ৫ বছর ধরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর