বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অনেকদিন পর টানা জেলা সফরে বেরিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আজ বুধবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রশাসনিক বৈঠক ছিল তাঁর। সেই বৈঠক থেকেই রাজাভাতখাওয়াতে আসা পর্যটকদের জন্য দারুণ সুখবর দিলেন তিনি। এ যেন বছরে শুরুতেই একেবারে কল্পতরু মুখ্যমন্ত্রী। স্পষ্ট বার্তা দিয়ে এদিন তিনি জানালেন রাজাভাতখাওয়াতে আসা পর্যটকদের কাছ থেকে আর টাকা নেওয়া যাবে না।
আলিপুরদুয়ার বনবিভাগকে কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee)
আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষকেও কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মমতা (Mamata Banerjee)। শুধু তাই নয় আজকের বৈঠক থেকেই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কচিকাঁচাদের প্রকৃতিপাঠ শিবির ও পিকনিক করতেও এবার থেকে আর কোনো বাধা দেওয়া যাবে না। এদিন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল ওই বৈঠক থেকেই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একরাশ অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
বিধায়কের অভিযোগ, পর্যটকরা রাজাভাতখাওয়া এলেই তাঁদের থেকে প্রচুর টাকা নেয় বনবিভাগ। একই সুরে বনবিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগের ঝুলি উপুর করে দেন প্রকাশ চিক বড়াইকও। এরপর সকলের সামনেই আলিপুরদুয়ার বনবিভাগকে কার্যত তুলোধনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। বৈঠক থেকেই তিনি স্পষ্ট জানান, তাঁর কাছে অভিযোগ এসেছে ফরেস্টের রাস্তা দিয়ে গেলেই অত্যাচার হয়। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আমার কাছে অভিযোগ এসেছে কেউ যদি ভুল করেও এই ফরেস্টের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করেন। তাহলে আপনারা স্ট্রং অ্যাকশন নেন। মানুষ এসব পছন্দ করে না। আলিপুরদুয়ারের বেশ কিছু অভিযোগ আছে। পিকনিক করতে গেলে কয়েকজনকে বাধা দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: চরম বিপাকে সঞ্জয়! আর জি কর ইস্যুতে বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে CBI, এবার হবে ফাঁসির সাজা?
রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ মুখ্যমন্ত্রীকে (Mamata Banerjee) জানান, এই বিষয়টি নিয়ে সাংসদ বৈঠক করার পর সমস্যা মিটে গিয়েছে। কিন্তু তারপরেও থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। পাল্টা জবাবে তিনি বলেছেন, ‘বনবিভাগ নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলে এটা হবে না। আমার উপর সব দায় আসবে। আমরাও কিন্তু ছেড়ে কথা বলব না’। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন হোম স্টে নিয়ে একই সমস্যা। হোমস্টে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই এই নিয়ে তিনি আদালত পর্যন্ত যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন।
হোমস্টেতে টাকা নেওয়ার বিষয়েও একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জবাব চেয়ে বললেন, ‘রাজাভাতখাওয়ার হোমস্টেতে পর্যটকদের ঢুকতে গেলে প্রচুর টাকা দিতে হয় ৷ এসব কার অনুমতিতে হচ্ছে? কে টাকা ফিক্স করেছে? সরকারকে না জানিয়ে তারা টাকা ফিক্সড করছে কেন? ওটা এখনই পাল্টাতে হবে। পর্যটকরা কোন ফিস দেবেন না। আমরা কোন ফিস নিই না। কেন নেবেন?’ এরপরেই আবার বনবিভাগকে একহাত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বললেন, ‘বনবিভাগ নিজেদের কী ভাবে, কে জানে! এতে সমস্যা হচ্ছে সাধারণ মানুষের ৷ আমাকে দোষ দিচ্ছে তারা। শীতের মরশুমে প্রকৃতিপাঠ শিবিরে কোনও টাকা নেওয়া হবে না।’
বৈঠক থেকেই এদিন হোম ট্যুরিজম বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসাথে এদিন মমতা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় আর কোনও রকম বড় বিল্ডিং প্ল্যান পঞ্চায়েত থেকে দেওয়া হবে না। এছাড়া জয়ন্তী থেকে বোল্ডার তোলার পক্ষেও এদিন সওয়াল করেছেন তিনি।