বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময় ক্যান্সারের (Cancer) বাড়বাড়ন্ত নিয়ে চিন্তিত প্রায় অনেকেই। ক্যান্সার রুখতে নিত্য নতুন আবিষ্কার করে চলছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার ওষুধ আনলেন চিকিৎসকেরা। ক্যান্সারের চিকিৎসায় কার-টি সেল থেরাপির কথা অনেকেই শুনেছেন। এই চিকিৎসা ব্যবস্থার মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধের চেষ্টা করা হয়। তাতে অনেকটাই সফলতা পান বলে জানা যায়। তবে এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে চিন্তাভাবনা চিকিৎসকদের। এই নতুন চিকিৎসা ব্যবস্থায় সুস্থ হবেন ক্যান্সার রোগীরা। কি সেই ব্যবস্থা?
ক্যান্সার (Cancer) রোগীদের জন্য নতুন চিকিৎসা ব্যবস্থা:
জানা যাচ্ছে, কার-টি সেল থেরাপিরই একটি নতুন পদ্ধতি আনা হয়েছে দেশে। যার নাম হচ্ছে “কোয়ার্টেমি”। এই বিশেষ পদ্ধতির প্রয়োগে অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থা। জানা গিয়েছে, কার-টি সেল থেরাপির এই নতুন চিকিৎসা ব্যবস্থা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ক্যান্সার (Cancer) রোগীদের উপর প্রয়োগ করা হয়েছে। এমনকি দাবি করা হচ্ছে এই চিকিৎসা পদ্ধতি সাফল্যও পেয়েছে। তবে এই চিকিৎসা ব্যবস্থা মূলত রক্তের ক্যান্সার রোগীদের উপর প্রয়োগ করা যাবে। এখনও পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর নারায়ণা হাসপাতাল, চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো ক্যানসার হাসপাতাল ও চণ্ডীগড়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চে রক্তের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রায় ৮৫ শতাংশ রোগ সেরে উঠছে।
কি এই কোয়ার্টেমি চিকিৎসা ব্যবস্থা: চিকিৎসকদের মতে, কোয়ার্টেমি তৈরি হচ্ছে রোগীর কোষ থেকেই। আক্রান্ত রোগীদের শরীর থেকে কোষ নিয়ে তাতে নানা রকম বদল ঘটানো হচ্ছে। অত্যন্ত উন্নত পদ্ধতির মাধ্যমে এই কাজ করা হচ্ছে। এরপর সেই পরিবর্তিত কোষ ফের রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। বলা হয়েছে, এই কোষটি যখন রোগীর শরীরে প্রবেশ করবে তখন ক্যান্সারের (Cancer) বিরুদ্ধে লড়াই করবে। আর এটাই হচ্ছে কার-টি সেল থেরাপির নতুন চিকিৎসা ব্যবস্থা কোয়ার্টেমি।
আরও পড়ুন: বড় খবর! ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই UPI পেমেন্টের নিয়মে বিরাট বদল! এখনই নিন জেনে
কিভাবে কাজ করবে এই নতুন থেরাপি: রক্তের মধ্যে দ্রুত ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ করবে এই নতুন থেরাপি। এই থেরাপির পুরো নাম হচ্ছে ‘চিমেরিক অ্যান্টিজেন রিসেপ্টর টি-সেল থেরাপি’। এই থেরাপির মাধ্যমে শরীরে প্রতিরক্ষা কোষ গুলিকে সক্রিয় করে তোলা হয়। আর তার জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে রক্তের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর শরীর থেকে টি কোষ সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই টি-কোষটিকে গবেষণাগারে বিশেষ পদ্ধতিতে শক্তিশালী করে তোলা হয়। এতে করে ওই কোষের মধ্যে নিজস্ব রিসেপটর তৈরি হয়। যা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে। পরবর্তীতে ওই কোষ ফের ক্যান্সার রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।
চিকিৎসকদের মতে এই কোষগুলি রোগীর শরীরে প্রবেশ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলির বিভাজন ও বৃদ্ধির কাজ বন্ধ করে দেয়। যার ফলে শরীরে ক্যান্সার ধীরে ধীরে নির্মূল হতে থাকে। চিকিৎসকরা আরও দাবি করছেন, এতে করে আগামী দিনে ক্যান্সার (Cancer) ফিরে আসার সম্ভাবনাও কমে যায়। তবে রক্তের ক্যানসার অনেক রকমের হয়। যার মধ্যে ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া ও নন-হজকিন লিউকেমিয়ায় মৃত্যুর হার বেশি। এবার সেই রোগকেই নিয়ন্ত্রণ করবে এই থেরাপি।
আরও পড়ুন: সন্দেশখালি গণধর্ষণ কাণ্ডে নতুন মোড়! বিরাট নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য কত টাকা খরচ করতে হবে: কার-টি-সেল থেরাপির এই নতুন চিকিৎসা পদ্ধতিতে ভারতে খরচ পড়বে ৩৫ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা। কিন্তু আমেরিকায় এই চিকিৎসা করাতে গেলে খরচ পড়বে প্রায় ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার মত। অর্থাৎ ভারতের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি খরচ হবে। যদিও জানা গিয়েছে, ভারতে এই চিকিৎসা ব্যবস্থার খরচ পরবর্তীতে আরও কমানো হতে পারে।
Made in India