বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নতুন বছরেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar) ক্যাম্প। রাজ্যজুড়ে চালু থাকা একাধিক সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এবার এই দুয়ারে সরকার ক্যাম্প ঘিরেই তৈরী হয়েছে এক নতুন বিতর্ক। অভিযোগ, বনগাঁর গোপালনগর এলাকায় দুয়ারে সরকার শিবিরের সুবিধা পাওয়ার জন্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে একটি বিশেষ শর্ত। এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূল-বিজেপির চাপানউতর।
দুয়ারে সরকার ক্যাম্প (Duare Sarkar) ঘিরে বিতর্কের কারণ কী?
বুধবার বনগাঁ ব্লকের গোপালনগর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের দুয়ারে সরকার শিবির (Duare Sarkar) থেকে অভিযোগ উঠেছে শুধুমাত্র পঞ্চায়েতের বকেয়া কর মেটালে তবেই সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যাবে। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য পঞ্চায়েতের কর মেটানো বাধ্যতামূলক করার অভিযোগ উঠতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে চারিদিকে। জানা যাচ্ছে, বনগাঁর গোপালনগর হরিপদ ইনস্টিটিউশনে দুয়ারে সরকার শিবির চলছিল। কিন্তু সেখানে আচমকাই ছন্দপতন। বলা হয় দুয়ারে সরকার প্রকল্পে সরকারি পরিষেবা পেতে গেলে আগে মেটাতে হবে পঞ্চায়েতের করের টাকা।
বনগাঁর ওই দুয়ারে সরকার শিবিরে (Duare Sarkar) পঞ্চায়েত আধিকারিকদের রীতিমতো টেবিল পাতিয়ে বাসিন্দাদের কাছ থেকে বকেয়া নিতে দেখা গিয়েছে। সেখানেও পড়ে যায়, বাসিন্দাদের লম্বা লাইন। আর এই নিয়েই তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ পঞ্চায়েতের তরফ থেকে তাদের জানানো হয়েছে করের টাকা না মেটালে এই প্রকল্পের পরিষেবা পাওয়া যাবে না।
সাধারণত দুয়ারে সরকার (Duare Sarkar) শিবির থেকে বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা সহ অন্যান্য সমস্ত সরকারি প্রকল্পের পরিষেবা পেতে পঞ্চায়েতের শংসাপত্র লাগে। কিন্তু এবার তার জন্য আগেই মেটাতে হচ্ছে করের টাকা। তারপর দেওয়া হচ্ছে পঞ্চায়েতের শংসাপত্র। এই ঘটনা সামনে আসতেই প্রশ্ন তুলছে বিরোধী শিবির। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া বলেছেন, ‘এটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প। দুয়ারে সরকার সাধারণ মানুষের অভিযোগ শোনার জায়গা। তাদের চাহিদা পূরণ করার জায়গা। কিন্তু আমরা দেখছি গোপালনগর এক পঞ্চায়েতের দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে কর জমা নেওয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: সন্দেশখালি গণধর্ষণ কাণ্ডে নতুন মোড়! বিরাট নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট
ক্ষোভ উগরে দিয়ে ওই বিজেপি বিধায়কের প্রশ্ন, ‘করের টাকা সংগ্রহের জন্যই কি ফাঁদ পেতেছে তৃণমূল?’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত প্রধান মুক্তি হালদার এ প্রসঙ্গে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বিরোধীরা ভুল প্রচার করছেন। অনেকের অনুরোধে ক্যাম্পের পাশে ট্যাক্স নেওয়ার একটি জায়গা করা হয়েছে। যারা মনে করছেন তারা বকেয়া করের টাকা জমা দিচ্ছেন।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই পঞ্চায়েতে গিয়ে করের টাকা জমা দিতে পারেননি। দুয়ারে সরকারের আশেপাশে ক্যাম্প থাকলে সেখানেই তারা বকেয়া করের টাকা জমা দিতে পারবেন, সেই চিন্তা করেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেই দাবি করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে বনগাঁর সাংগঠনিক তৃণমূল জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।