একি কাণ্ড! সুলভ শৌচালয় বদলে হয়ে গেল তৃণমূলের পার্টি অফিস! যা হচ্ছে চোপড়ায়…

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বুধবার চোপড়ার একটি দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করেছেন বিধায়ক হামিদুল রহমান সহ স্থানীয় তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতারা। এবার ওই দলীয় কার্যালয় ঘিরে উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যাচ্ছে, যেখানে তৃণমূলের নতুন পার্টি অফিস তৈরি হয়েছে, আগে সেখানেই ছিল একটি শৌচালয়। রাতারাতি চোপড়ার এই শৌচালয় পার্টি অফিসে বদলে যাওয়ায় তৈরী হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক। এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে এবার সরব রাজ্যের বিরোধী দলগুলিও।

শৌচালয় ভেঙে তৃণমূলের (Trinamool Congress) কার্যালয়!

চোপড়ার ঘিরনিগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের লালবাজার এলাকার যে কার্যালয়টি ঘিরে বিতর্ক তৈরী হয়েছে, বলা হচ্ছে আগে পূর্ত দপ্তরের ওই জায়গায় একটি শৌচালয় ছিল। সেই শৌচালয়ের একাংশ দখল করে পার্টি অফিস তৈরি করেছেন স্থানীয় তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতারা। স্থানীয় সূত্রে খবর দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকাতে একটি শৌচালয় ছিল,তবে সেটি জীর্ণ হয়ে পড়ায় তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরে তার জায়গায় তৈরি করা হয় নতুন শৌচালয়।

লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে সরকারি জায়গায় কিভাবে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় গড়ে উঠলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী শিবির। এসবের পিছনে কারা রয়েছে? এমনকি প্রশ্ন উঠেছে ব্লক প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। অভিযোগ সামনে আসতেই চোপড়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মহম্মদ মসিরউদ্দিন বলেছেন, দুদিন আগেও সেখানে সুলভ শৌচালয় লেখা ছিল। এলাকার সাধারণ মানুষও সেটা জানেন। রাতারাতি সেই পুরনো লেখা মুছে দেওয়া হয়েছে। শৌচালয় রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছে ঘিরনিগাঁও অঞ্চলের তৃণমূল (Trinamool Congress) কার্যালয়ে।

ক্ষোভ উগরে দিয়ে এক কংগ্রেস নেতা বলেছেন, ‘বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এনেছি’। তৃণমূলের বিরুদ্দে সরব হয়েছেন স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বও। দলের নেতা আনসারুল হক জানিয়েছেন, ‘শৌচালয়টি নির্মাণ করতে প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতি। এখন তারই একাংশ তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে রূপান্তরিত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সরব হয়েছি।’

আরও পড়ুন: Budget 2025: বাজেটে সস্তা হল কোন জিনিস, দাম বাড়ল কীসের?‌ দেখুন একঝলকে

অন্যদিকে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফজলুল হক। তিনি জানিয়েছেন সরকারি শৌচালয় যেখানে থাকার কথা সেখানেই আছে। সেখানে কোনো কিছুর পরিবর্তন হয়নি। তবে দলীয় (Trinamool Congress) কার্যালয় তৈরীর বিষয়টি তিনি বেশ কৌশলেই এড়িয়ে গিয়েছেন। বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিধায়ক হামিদুলও। তিনি জানিয়েছেন এইসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।  সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিরোধীরা এইসব বলছেন। দলীয় কার্যালয় ঘিরে এমন বিতর্ক হওয়ায় এবার স্থানীয়রাও সমালোচনা শুরু করেছেন।

Trinamool Congress

চোপড়ার বিডিও সমীর মন্ডল বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন তাঁর কাছে সংশ্লিষ্ট শৌচাগার প্রসঙ্গে কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে কোন জায়গায়, কোন নির্মীয়মান শৌচালয় দখল হয়েছে তা তিনি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন। একই সাথে তিনি জানিয়েছেন নির্মীয়মান শৌচাগার এখনও সরকারিভাবে হস্তান্তর হয়নি,তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত আগেও একবার এই একই ঘটনা ঘটেছিল মালদহ’তে। ২০২১ সালে মালদহ জেলায় এক শৌচালয়ের জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছিল পার্টি অফিস।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর