বিশ্বের বৃহত্তম নৌবহর, বিপুল ফৌজি বল! কিন্তু আমেরিকার ধারে কাছে নেই চিন, জানেন কেন?

বাংলাহান্ট ডেস্ক : গত কয়েক দশকে আমেরিকা ও চিনের (USA-China) মধ্যে ঠান্ডা যুদ্ধের উত্তাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। বিশ্ব মানচিত্রে নিজেদের জয়দ্ধজা ওড়াতে একের পর এক প্রস্তুতি নিচ্ছে দুই দেশই। অদূর ভবিষ্যতে এই দুই দেশ যদি সম্মুখ সমরে আসে তাহলেও অবাক হওয়ার মতো কিছুই নেই। সামরিক শক্তির দিক থেকে একে অপরকে পাল্লা দিতে কসুর করছে না কেউই।

আমেরিকা ও চিনের (USA-China) ফৌজি বল

‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’ ১৪৫ টি দেশের ফৌজিশক্তির একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকার একদম প্রথম স্থানেই জায়গা করে নিয়েছে আমেরিকা (United States of America)। তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে চিন (China)। ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’ -এর তথ্য বলছে দুই দেশের মধ্যে ফৌজিশক্তির পার্থক্য কমছে লক্ষণীয়ভাবে।

আরোও পড়ুন : উড়ল রাতের ঘুম! সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা খেল পশ্চিমবঙ্গ সরকার, কোন মামলায়?

সামরিক বাজেট, অস্ত্রশস্ত্র এবং সৈন্যসংখ্যার নিরিখে এই তালিকা প্রকাশ করেছে ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’। শূন্য সূচকের কাছাকাছি যে দেশ যতটা অগ্রসর হতে পেরেছে, সেই দেশ তালিকায় স্থান পেয়েছে তত উপরে। ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’ অনুযায়ী, আমেরিকার ফৌজের (US Military) প্রাপ্ত নম্বর ০.০৭৪৪।

USA-China Military Power

অন্যদিকে, লাল ফৌজ (Chinese Military) পেয়েছে ০.০৭৮৮ নম্বর। এই তালিকায় আমেরিকার ঘাড়ে চিন নিঃশ্বাস ফেললেও দুই দেশের সামরিক বাজেটের মধ্যে কিন্তু রয়েছে বিস্তর ফারাক। ২০২৪-’২৫ আর্থিক বছরে আমেরিকা প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ করেছিল প্রায় ৯০ হাজার কোটি ডলার। সেই একই আর্থিক বছরে চিন সরকার প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করে প্রায় ২৭ হাজার কোটি ডলার।

আরোও পড়ুন : জলসার ঘরের মেয়ের সঙ্গে জুটি বাঁধছেন জি এর জনপ্রিয় নায়ক! ধামাকা প্রোমো আসছে নতুন ধারাবাহিকের

সৈন্য সংখ্যার দিক থেকে আমেরিকার থেকে কিন্তু বহুগুণ এগিয়ে রয়েছে চিন। বর্তমানে প্রায় ২০ লক্ষ সৈনিক রয়েছে বেজিঙের ‘পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি’তে (পিএলএ)। অন্যদিকে, ১৪ লক্ষর কাছাকাছি সৈনিক রয়েছে ওয়াশিংটনের প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনের কাছে। ৭.৯৯  লক্ষ রিজার্ভ সৈনিক নিয়ে চিনের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে আমেরিকা।

USA-China Military Power

চিনের রিজার্ভ বাহিনীতে সৈনিকের সংখ্যা ৫.১ লক্ষের কাছাকাছি। এখানে একটি উল্লেখ্য বিষয় এই যে আমেরিকার কাছে বর্তমানে কোনো আধা সৈনিক নেই। তবে ড্রাগনের দেশে আধা সৈনিকের সংখ্যা ৬.২৫ লক্ষ।বোমারু বিমান ও লড়াকু জেট নিয়ে বর্তমানে ১৩ হাজার ৪৩টি যুদ্ধবিমান রয়েছে আমেরিকার বায়ুসেনার কাছে।

আরোও পড়ুন : DA অতীত! একধাক্কায় ২৫% বাড়ল রাজ্য সরকারি কর্মীদের ‘এই’ ভাতা! জারি নয়া বিজ্ঞপ্তি

অন্যদিকে, PLA বায়ুসেনার কাছে যুদ্ধবিমানের সংখ্যা ৩,৩০৯টি। পেন্টাগনের কাছে ফৌজি হেলিকপ্টারের সংখ্যা প্রায় ৫৮৪৩টি। অপরদিকে, চিনের কাছে রয়েছে ৯১৩টি হেলিকপ্টার। আমেরিকার স্থল বাহিনীর কাছে বর্তমানে রয়েছে ৪,৬৪০টি ট্যাঙ্ক, ৩ লক্ষ ৯১ হাজার ৯৬৩টি সাঁজোয়া গাড়ি। সেখানে চিনের ফৌজের কাছে ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া গাড়ির সংখ্যা যথাক্রমে ৬,৮০০টি ও ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ১৭টি।

লাল ফৌজের কাছে চাকাযুক্ত কামানের সংখ্যা ৩,৪৯০টি, এছাড়াও হাজারটির মতো অন্যান্য কামান রয়েছে চিনের কাছে। অন্যদিকে, ৬৭১টি মতো চাকাযুক্ত কামান রয়েছে আমেরিকার বাহিনীর হাতে। এছাড়াও তাদের কাছে রয়েছে ১,২১২টি অন্যান্য কামান। ৭৫৪টি রণতরী নিয়ে বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম নৌবহরের অধিকারী চিন। অন্যদিকে, আমেরিকার নৌবাহিনীর কাছে রয়েছে ৪৪০টি যুদ্ধ জাহাজ।

USA-China Military Power

আমেরিকার গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ দাবি করেছে, অন্তত ৬০০টি পরমাণু ওয়ারহেড রয়েছে চিনের কাছে। তবে পরমাণু অস্ত্রের নিরিখে চিনের থেকে অনেকটাই এগিয়ে আমেরিকা (USA-China)। সাড়ে তিন হাজারের বেশি আণবিক অস্ত্র নিয়ে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর হিসাবে নিজেদের গরিমা টিকিয়ে রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

আরোও পড়ুন : হাইকোর্টের নির্দেশ! TET নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নোটিশ জারি করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফৌজি শক্তিতে আমেরিকা ও চিন (USA-China) টক্কর দিলেও, ‘প্র্যাকটিকাল’ যুদ্ধের অভিজ্ঞতায় চিনের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে আমেরিকা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ছোট-বড় একাধিক রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হতে দেখা গেছে আমেরিকাকে। সেই অর্থে চিনা ফৌজের কিন্তু বাস্তবিক অভিজ্ঞতা ততটা নেই। সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হলে আমেরিকার সেনাবাহিনী যে চিনকে নাস্তানাবুদ করতে পারবে এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর