বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হাতে আর মাত্র দু মাস! তারপরেই শেষ হয়ে যাবে চলতি অর্থ-বর্ষ। অথচ কলকাতা পুরসভার (KMC) কোষাগারের অবস্থা বড়ই শোচনীয়। জানা যাচ্ছে, গত অর্থবর্ষের তুলনায় চলতি অর্থ-বর্ষে দক্ষিণ কলকাতায় সম্পত্তিকর সংগ্রহের পরিমাণ কমে গিয়েছে অনেকটা। বিশেষ করে দক্ষিণ কলকাতা, টালিগঞ্জ ও গড়িয়া এলাকা এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। পুরসভার কর-রাজস্ব দফতর সূত্রে খবর এসি বা অ্যাসেসর কালেক্টর (সাউথ) বিভাগে গত অর্থবর্ষের ১ এপ্রিল থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যন্ত যে পরিমাণ সম্পত্তিকার জমা পড়েছিল তার তুলনায় চলতি অর্থ বর্ষের একই সময়ে সম্পত্তিকর আদায়ের পরিমাণ এক ধাক্কায় কমে গিয়েছে ১২ কোটি ৮৯ লক্ষ ৭৩৬১ টাকা। একইভাবে টিডিটি বা টলি ট্যাক্স বিভাগে টালিগঞ্জ এলাকায় গত অর্থবর্ষের তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে ৪ কোটি ৭৭ লক্ষ ৩৪৩২৬ টাকা কম সম্পত্তিকর জমা পড়েছে।
বেতন দিতেই নাজেহাল কলকাতা পুরসভা (KMC)
এমনিতেই কলকাতা পুরসভার (KMC) অবস্থা ‘ভাঁড়ে মা ভবানী!’ যার ফলে গত প্রায় এক বছর ধরে প্রাপ্ত টাকা পাচ্ছেন না কলকাতা পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। জানা যাচ্ছে গত বছরের মার্চ মাস থেকে অবসর নেওয়া পুরকর্মীরা এখনও পর্যন্ত তাদের অবসরকালীন থোক টাকা (গ্র্যাচুইটি ও কমিউটেশন) পাননি। একইভাবে গত দু’বছর ধরে কলকাতা পুরসভার কাছে ঠিকাদারদের বকেয়া রয়েছে হাজার কোটি টাকারও বেশি।
প্রশ্ন উঠছে কলকাতা পুরসভার (KMC) কোষাগারের এমন শোচনীয় অবস্থা হল কি করে? আসলে পুরসভার আয়ের অধিকাংশই আসে সম্পত্তিকর থেকে। কলকাতা পুরসভার সমস্ত এলাকার হিসাব ধরলে গত অর্থবর্ষের বর্ষের ১ এপ্রিল থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে যে পরিমাণ সম্পত্তিকার আদায় হয়েছিল তার তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে সম্পত্তিকর বাবদ আয় বেড়েছে মাত্র ২১ কোটি ২৬ লক্ষ ৩৬ হাজার ৭৮ টাকা। যদিও এই আদায়ে সন্তুষ্ট নন পুরসভার আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: ‘সরস্বতী কামের দেবী’, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত অম্বরীশের! আইনি হুঁশিয়ারি BJP নেতার
পুরসভার (KMC) এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘সম্পত্তিকর বাবদ কয়েক হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়ে গিয়েছে। বড় অংকের করখেলাপিরা দীর্ঘদিন সম্পত্তিকর দেননি। যার ফল ভুগছে কলকাতা পুরসভা।’ তাছাড়া বিগত কয়েক বছরে কলকাতা পুরসভার আয়ের তুলনায় বেড়েছে ব্যয়ের বহর। রাজ্য সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খরচও বহন করতে হচ্ছে কলকাতা পুরসভাকে। এই অবস্থায় আগামী দিনে কলকাতায় পুরসভার পুরকর্মীদের বেতন দিতে গিয়েই নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হতে চলেছে পুরসভার।
সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভায় স্থায়ী কর্মী রয়েছেন ১৬ হাজার। প্রায় সমপরিমাণ সংখ্যায় রয়েছে অস্থায়ী কর্মীও। প্রসঙ্গত পুরসভার এই সমস্ত স্থায়ী কর্মীদের বেতনের ৮৫ শতাংশ দেয় রাজ্য। আর বাকিটা বহন করে কলকাতা পুরসভা। তবে অস্থায়ী কর্মীদের ক্ষেত্রে তাঁদের বেতনের পুরোটাই দেয় কলকাতা পুরসভা। এক পুরো আধিকারিকের কথায়, ‘অবসর নিতে নিতে স্থায়ী কর্মীদের সংখ্যা অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে। তুলনায় বাড়ছে অস্থায়ী কর্মীদের সংখ্যা। যার ফলে তাঁদের বেতন দিতে গিয়েই হিমশিম খেতে হচ্ছে।’