বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে তৃণমূলের হাটে হাঁড়ি ভেঙে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। তিনি দাবি করেছিলেন ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তৃণমূলের জেলা কমিটিতে পদ পাওয়া যাচ্ছে। জেলাস্তরের নেতাদের একাংশ এই কাজে জড়িত থাকতে পারে বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে চারিদিকে। এবার মদন মিত্রের মন্তব্যকে সমর্থন করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
মদনের মন্তব্যকে সমর্থন করে বিস্ফোরক শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)
বিজেপি নেতার দাবি মদন মিত্র একদম ঠিক কথা বলেছেন। তাঁর দাবি শাসকদলের পদের জন্য টাকা নেওয়া শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগেই। এখন বিরোধী দলের সদস্য হলেও শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) একসময় তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা ছিলেন। সামলেছেন একাধিক পদের দায়িত্ব। একসময় তৃণমূল যুবর’ও দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু। তবে সেসব এখন অতীত। ২০২০ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি।
পুরনো দলের নেতা মদন মিত্র তৃণমূলের টাকা নিয়ে পদ দেওয়ার বিষয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করতেই এবার তাঁর সমর্থনে সুর চড়ালেন শুভেন্দুও (Suvendu Adhikari)। টাকা নিয়ে তৃণমূলের পদ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে মদন মিত্র নিশানা করেছিলেন আইপ্যাককেও। কামারহাটির বিধায়কের কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনো দুর্নাম ছিল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়ে যেটুকু কালি লেগেছে তা প্যাকওয়ালাদের জন্য। পদ পেতে হলে টাকা দিতে হবে, প্যাকের জন্যই এই টাকার প্রশ্ন এল।’
মদন মিত্রের বক্তব্যকে সমর্থন করে শুভেন্দু অধিকারী বললেন, ‘একদম ঠিক কথা বলেছেন মদন মিত্র। কাকদ্বীপের এক ঠিকাদার ২০২১ সালে আইপ্যাকের অ্যাকাউন্টে ১১ কোটি টাকা দিয়েছেন। ওই টাকা আইপ্যাকের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। আমার কাছে নথি রয়েছে।’সেই সাথে শুভেন্দু জানিয়েছেন তৃণমূলে কবে থেকে টাকা দিয়ে পদ পাওয়া শুরু হয়েছে সে কথাও। তাঁর স্পষ্ট দাবি, ‘ষোলোর পর থেকে শুরু হয়েছে। আঠারোর পর থেকে প্রধান, অঞ্চল সভাপতির পদ-সহ সব বিক্রি হয়েছে।’
২০১১ সালে যুব তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন শুভেন্দু। সেই সময় যুবা তৃণমূল গঠন নিয়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা এদিন বলেন, ‘আমাকে তাড়িয়ে এগারো সালে যুবা তৃণমূল হয়। তারাই এই টাকা সংগ্রহ করে। সব জেলায় তিন চারজন করে নাম রয়েছে। যারা যুবা তৃণমূলের। যেমন হুগলিতে শান্তনু, কুন্তল ছিল।’ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ শানান শুভেন্দু।
অন্যদিকে তৃণমূল সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দেওয়ার পর সোমবার রাতে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে চিঠি দিয়ে মদন মিত্র জানিয়েছেন, সংবাদ মাধ্যমের একাংশে তাঁর বক্তব্যকে বিকৃতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁকে ভুল না বোঝার জন্য দলের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।