বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কারখানায় কাজ করে সংসার চালাতে হিমশিম খেয়ে যেতেন। সেই সঙ্গেই রয়েছে মেয়ের আলাদা খরচ। এমতাবস্থায় স্ত্রী কিডনি (Kidney) বিক্রি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাতেই রাজি হয়ে গিয়েছিলেন সাঁকরাইলের ধুলোগড় ব্যানার্জি পোল নিবাসী ৩৮ বছরের পিন্টু বেজ। নিজের কিডনি বিক্রি করে ১০ লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছিলেন স্ত্রীয়ের হাতে। তবে সেই টাকা নিয়েই প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গেলেন পিন্টু-পত্নী! ইতিমধ্যেই এই জল গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) অবধি।
সব শোনার পর হাইকোর্ট (Calcutta High Court) কী বলল?
জানা যাচ্ছে, প্রায় ১৬ বছর আগে পাঁচলার গঙ্গাধরপুরে একটি বিয়ে বাড়িতে সুপর্ণার (পিন্টুর স্ত্রী) সঙ্গে প্রথম আলাপ হয়েছিল পিন্টু বেজের। অল্প সময়ের মধ্যেই সেই আলাপ ভালোবাসার আকার নেই। মাস ছয়েক প্রেম করার পর মন্দিরে গিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তাঁদের একটি মেয়ে হয়। কারখানায় কাজ করেই সংসার চালাতেন পিন্টু।
সাঁকরাইল নিবাসী ওই ব্যক্তি জানান, কয়েক মাস আগে সংসারের অনটন দূর করতে তাঁর স্ত্রী তাঁকে কিডনি বিক্রয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ১০ লক্ষ টাকা পাওয়ার আশ্বাসে স্ত্রীয়ের কথায় রাজি হয়ে যান। এরপর প্রথমে তাঁকে ৫০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এরপর গত বছর নভেম্বর মাসে নিজের একটি কিডনি বিক্রি করে দেন পিন্টু। এরপর সুপর্ণার হাতে ১০ লক্ষ টাকা তুলে দেন সেই কিডনির গ্রাহক।
আরও পড়ুনঃ অঙ্গনওয়াড়ির খাবারে এবার বিরিয়ানি-চিকেন ফ্রাই! খুদের আবদার রাখতে বড় সিদ্ধান্তের পথে রাজ্য
পিন্টু জানান, তিনি বাড়িতে বিশ্রামে থাকাকালীন গত ২২ ডিসেম্বর বাজারে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরোন তাঁর স্ত্রী। এরপর আর ফিরে আসেননি। বাড়িতেই নিজের মোবাইল ফোন রেখে গিয়েছিলেন সুপর্ণা। এরপর সাঁকরাইল থানায় (Sankrail Police Station) মিসিং ডায়েরি করেন পিন্টু। জানতে পারেন, ব্যারাকপুরের রবি দাস নামের একজন ব্যক্তির সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে তাঁর স্ত্রীর পরিচয় হয়েছিল এবং পরবর্তীতে প্রেম হয়। বর্তমানে সেই ব্যক্তির সঙ্গেই থাকছেন সুপর্ণা।
একথা জানার পর মেয়ে ও পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে রবির বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন পিন্টু। তবে তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শেষ অবধি কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সুপর্ণা স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছেন। ফলে পুলিশের এই বিষয়ে কিছু করার নেই।
এদিকে কিডনি বিক্রি করে দেওয়ার পর দুর্বলতার কারণে এখন কাজকর্ম করতে পারেন না পিন্টু। অধিকাংশ সময় ঘরেই শুয়ে কাটান। তাঁর কথায়, ১৬ বছর একসঙ্গে থাকার পর তাঁর স্ত্রী বিশ্বাসভঙ্গ করেছে। তাঁর সকল টাকা-পয়সা, গয়না নিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন সুপর্ণা। পিন্টু চান, এর জন্য সুপর্ণা ও তাঁর প্রেমিকের সাজা হোক। ভালোবেসে বিয়ে করা স্ত্রীকে তো আর ফিরে পাবেন না, তবে নিজের কিডনি বিক্রি করে যে ১০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন, সেটা ফেরত চান ওই ব্যক্তি। ইতিমধ্যেই এই জল গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) অবধি।