বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় সরকারের মতের সাথে অমিল দেখা যায় রাজ্যের। কিন্তু সম্প্রতি সব পুর এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিধি মেনেই হকার সমীক্ষার প্রস্তাব মেনে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই পুর এলাকায় নথিভুক্ত প্রত্যেক হকার ও তার পরিবারের অর্থ সামাজিক সংক্রান্ত খুঁটিনাটি তথ্য নেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছে নবান্ন (Nabanna)।
পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) হকার নথি মিললে লাভবান হবেন কারা?
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করায় রাজ্যের (West Bengal) জন্য বরাদ্দ একাধিক প্রকল্পের টাকা আটকে গিয়েছে আগেই। তাই এবার আর কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে কেন্দ্রের সাথে সহমত পোষণ করেছে রাজ্য। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে হকার সমীক্ষা। বৈধ হকারদের জন্য সুলভ ঋণ-সহ একাধিক সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে কেন্দ্র। তাই এই প্রকল্পের বাস্তব রূপায়ণের জন্য এই সমীক্ষা করা প্রয়োজন। তা না হলে নগরোন্নয়নের অন্যান্য ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আটকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তবে এক্ষেত্রে রাজ্যের (West Bengal) নিজস্ব তাগিদও রয়েছে। প্রসঙ্গত গত বছর জুন মাসে কলকাতার ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের চেষ্টা করেছিল পুরসভা। তবে অতীতের মত গত বছরেও একই অবস্থা হয়েছে। তাই বছর ঘোরার আগেই অবস্থা আবার যেই কে সেই! অর্থাৎ কিছুদিন ভাঙচুর প্রতিবাদ শোরগোলের পর আবার হকাররা ফিরে এসেছেন নিজের স্থানে। শহরের বেশ কয়েকটি এলাকাকে হকারদের জন্য নিষিদ্ধ করার বিষয়ে যে সমস্ত সরকারি নীতির কথা বলা হয়েছিল তার ছাপ নেই শহরের কোথাও।
ফুটপাতের দুই-তৃতীয়াংশ ছেড়ে রাখা থেকে শুরু করে,কোনও দোকানের প্রবেশদ্বারের সামনে বসা এসবের কোন কিছুরই তোয়াক্কা করছেন না অধিকাংশ হকাররা। তাই এবার বৈধ হকারদের সমীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন হল যদি হকার সমীক্ষার পর কিছু হকারকে ‘বৈধ’ বলে চিহ্নিত করা হয় তাহলে তার থেকে কি কোন লাভ আশা করা যেতে পারে?
আরও পড়ুন: RG Kar মামলা নিয়ে বিরাট সিদ্ধান্ত! সুপ্রিম কোর্টে আবেদন নির্যাতিতার পরিবারের
সুবিধার কথা বললে বৈধ হকারের শংসাপত্র পাওয়া হকাররা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ঋণ এবং অন্যান্য সুবিধার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্রে খবর এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) তিন লক্ষ হকার ঋণের জন্য আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে ২ লক্ষ উপভোক্তা ঋণ পেয়েছেন। শুধু কলকাতাতেই হকারদের সংখ্যা রয়েছে ২ লক্ষের বেশি। যদিও এই সংখ্যা খুব একটা আশাব্যাঞ্জক নয়। কেন্দ্রের নির্দিষ্ট সমীক্ষার পর সংখ্যাটা কিছুটা বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও একথা একপ্রকার নিশ্চিত সেই অনুদান প্রাপ্তদের পিছনে থেকে যাবেন অসংখ্য ‘অবৈধ’ হকার।
জানা যাচ্ছে,সরকারি এই প্রকল্পের টাকা কারা পাবেন ইতিমধ্যেই সেই নামের তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে এরফলে হকার বা নাগরিকদের প্রধান সমস্যা মিটবে না। প্রসঙ্গত শহরের বিস্তীর্ন এলাকাজুড়ে থাকে হকারদের কারণে নাগরিকদের যাতায়াতে ব্যাপক সমস্যা হয়। বিশেষ করে ফুটপাত এবং রাস্তায় অতিরিক্ত হকারের উপস্থিতিতে পথচারী,গাড়ি চালক, সকলেরই গতি কমে যাওয়ায় ঝুঁকি বেড়ে যায়।
প্রতিদিন কম খরচে এবং সহজে কেনাকাটা, কিংবা খাওয়াদাওয়ার জন্য শহরের বহু মানুষ এই হকারদের উপরেই নির্ভরশীল। তাই কোনও রাস্তা হকারশূন্য হলে, বা হকার বেশি দূরে চলে গেলেও সমস্যায় পড়বেন উপভোক্তারাই। অন্য দিকে, হকাররাও স্বস্তিতে জীবিকা অর্জনের জন্য পুলিশি হয়রানি, তোলাবাজি, হঠাৎ-উচ্ছেদ থেকে রেহাই চান। কিন্তু আইন করে সেই সুরক্ষা দেওয়াও কার্যত অসম্ভব। তাই বলা হচ্ছে, বৈধতার শংসাপত্র থাকলে পুনর্বাসনে অগ্রাধিকার থাকতে পারে, তবে উচ্ছেদ থেকে নিস্তার পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই।
বীরভূমে তৃণমূলের পার্টি অফিসে মদ্যপানের আসর! অনুব্রতকে নিশানা করে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য কাজলের