বীরভূমে তৃণমূলের পার্টি অফিসে মদ্যপানের আসর! অনুব্রতকে নিশানা করে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য কাজলের 

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তৃণমূলের পার্টি অফিসে চলছে দেদার মদ্যপান! সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই মদ্যপানের একটি ভিডিও (ভিডিওটির  সত্যতা যাচাই কারনি বাংলা হান্ট)। বীরভূমের ময়ূরেশ্বর-২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল (Trinamool Congress) সভাপতি প্রমোদ রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল দলীয় কার্যালয়ে বসে মদ্যপান করার।

অনুব্রতকে নিশানা করে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য কাজলের (Trinamool Congress)

অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই শোরগল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ এই ঘটনা নতুন নয়। প্রায় একই সুরে এই ঘটনার কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখও (Kajal Sheikh)। নাম না করেই এই ঘটনায় তিনি অভিযোগ এনেছেন বীরভূম  তৃণমূলের (Trinamool Congress) জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) ওরফে কেষ্টর বিরুদ্ধে।

প্রকাশ্যে আসা ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কয়েক জন টেবিল ঘিরে বসে রয়েছেন।তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ময়ূরেশ্বর-২ নং ব্লকের তৃণমূল সভাপতি প্রমোদ রায়। টেবিলের উপর রয়েছে কয়েকটি  প্লাস্টিকের গ্লাস রয়েছে। অভিযোগ করা হচ্ছে ওই গ্লাস গুলিতে মদ রয়েছে। এছাড়াও কিছু প্লাস্টিকের জলের বোতলও রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এই ঘটনা এক দিনের নয়, এমনটা তাঁরা হামেশাই দেখেন। কোনো একজন ব্যক্তি তৃণমূলের (Trinamool Congress) কার্যালয়ে বসেই ওই ভিডিওটি তুলেছেন। সূত্রের খবর, যিনি ভিডিও তুলেছেন, তিনিও দলীয় কর্মী।

প্রসঙ্গত বীরভূমের এই দুই নেতার মধ্যে ‘সুসম্পর্ক’ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কম জল্পনা হয় না। এরই মধ্যে আনন্দবাজার অনলাইনে বিস্ফোরক অভিযোগ জানিয়ে কাজল বলেছেন গত দু’বছরে বীরভূম জেলায় কোন কিছু ঘটেনি। তবে ইদানিং ‘অসামাজিক কাজকর্ম’ চলছে। ঘটনা চক্রে দু’বছর জেলে থাকার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে জেলমুক্তি হয়েছে অনুব্রতর। তাই প্রশ্ন উঠছে এই ভাবে নাম না করেই কি কেষ্টকে নিশানা করলেন কাজল শেখ?

তৃণমূলের (Trinamool Congress) পার্টি অফিসে মদ্যপানের আসর প্রসঙ্গে কাজল বলেছেন, ‘দু’বছর বীরভূম জেলায় কোনও অসামাজিক কাজ হয়নি। ২০২৩-সালের পঞ্চায়েত ভোটেও একজন মানুষও  প্রাণ হারাননি। ২০২৪-এ লোকসভা ভোট হয়েছে। কোনও হানাহানি হয়নি। তবে ইদানীং কিছু অসামাজিক কাজ হচ্ছে। কেন হচ্ছে,তা বলতে পারব না।’

কাজল এদিন কারও নাম না নিলেও তাঁর ইঙ্গিত কোন দিকে, তা বুঝতে কারও বাকি নেই। প্রসঙ্গত  কাজল-ঘনিষ্ঠ কলকাতার এক তৃণমূল নেতা এপ্রসঙ্গে বলেছেন, ‘বীরভূমের কয়েকটা ব্লকে এখনও কেষ্টর লোকেরা যা ইচ্ছা তা-ই করতে চাইছে। তার মধ্যে ময়ূরেশ্বর অন্যতম। কিন্তু খুব অল্প দিনেই সে সব বন্ধ হয়ে যাবে।’

আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে চলছে মামলা! এরই মধ্যে ভুয়ো কাস্ট সার্টিফিকেট দেখিয়ে ৩০ জনের সরকারি চাকরির অভিযোগ

প্রসঙ্গত অনুব্রত মন্ডলের জেলমুক্তির পর একাধিকবার দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁদের একসাথে দেখা না যাওয়ায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। তবে সব জল্পনায় জল ঢেলে গত ১৩ জানুয়ারি জয়দেব-কেঁদুলির মেলায় দুই নেতা একই মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন। ওই মঞ্চে কেষ্টর পা ছুঁয়ে প্রণামও করেন কাজল। সেসময় দুই নেতার সৌজন্য বিনিময়কে ‘ইঙ্গিতবহ’ বলে মনে করেছিলেন অনেকে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার তৃণমূল কার্যালয়ে মদ্যপানের অভিযোগ নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন কাজল।
Trinamool Congress leader Kajal Sheikh touches Anubrata Mondal feet

এই সুযোগে সরব হয়েছে রাজ্যের বিরোধী পক্ষ বিজেপিও। তাঁদের অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়কে তৃণমূলের নেতারা এখন ‘পার্টি’ করার জায়গায় পরিণত করেছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব বলেছেন, ‘এটাই তৃণমূলের কালচার। তাঁরা মানুষের উপকার কী করবেন? নিজেরা উপকার নিতেই ব্যস্ত। প্রত্যেক পার্টি অফিসে ঠাঁই হয়েছে দুষ্কৃতীদের।’

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর