মাত্র ৬ টাকার মিড ডে মিলেই ভরপুর পুষ্টি! বুদ্ধিতেই বাজিমাত বাঁকুড়ার এই শিক্ষকের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের (West Bengal) শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা নিয়ে রাজ্যবাসীর অভাব-অভিযোগের শেষ নেই। কোথাও শিক্ষকের অভাব তো কোথাও হাতেগোনা কয়েকজন পড়ুয়া নিয়ে চলে পড়াশোনা। আবার কোথাও পড়াশোনার উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। তবে এদিক দিয়ে গোটা পশ্চিমবঙ্গকে একেবারে নতুন করে পথ দেখাচ্ছে বাঁকুড়া এক প্রি-প্রাইমারি তথা বুনিয়াদি স্কুল।

সারা বাংলাকে (West Bengal) নতুন দিশা দেখাচ্ছেন বাঁকুড়ার এই স্কুল

ছোট ছোট বাচ্চাদের শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যের (West Bengal) এই স্কুলটি সবাইকে নতুন করে পথ দেখাচ্ছে। জানলে অবাক হবেন এই বিদ্যালয়ের মধ্যেই  রয়েছে মানবতার দেয়াল, সততা স্টোর। বিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় নাম প্রেজেন্ট করার মেশিন। এসবের পাশাপাশি বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহি নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ে চলছে মাশরুম চাষ। তাও আবার শ্রেণীকক্ষের পাশেই হচ্ছে এই বড় মাপের মাশরুম চাষ।

মূলত ঠান্ডা বাড়লে ওয়েস্টার মাশরুম চাষ করা সম্ভব হয়। এই কারণেই প্রায় ৩০ টি বেড ওয়েস্টার মাশরুম চাষ করেছেন এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দন দত্ত। তারপর কোথায় যায় এই মাশরুমগুলি? জানা যাচ্ছে, স্কুলে চাষ করা এই মাশরুমগুলিই ব্যবহার করা হচ্ছে শিশুদের মিড ডে মিলে। প্রথমে আমন ধানের খড়কে স্টেরিলাইজ করে, সামান্য আদ্রতা বজায় রেখে খড়টাকে শুকিয়ে নেওয়া হয়। এরপর মাশরুমের বীজ লাগিয়ে পলিথিন ব্যাগ বন্দি করে দিলেই ১৫ দিন পর থেকে জল দেওয়া আরম্ভ করলে শুরু হয়ে যাবে মাশরুম প্রোডাকশন।

আরও পড়ুন: বাতিল হচ্ছে চাকরি? ‘আসল তথ্য জানা প্রায় অসম্ভব’ প্রধান বিচারপতির মন্ত্যব্যের পরেই শোরগোল

সপ্তাহের প্রায় দুই থেকে তিন দিন খাদ্য তালিকায় পুষ্টি যোগ করার জন্য এমনই এক অভিনব সিদ্ধান্ত স্কুলের নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। কারণ বাজার দর  অনুযায়ী মিডডে মিলের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৬ টাকা ১৯ পয়সা। কিন্তু এই টাকায় বাচ্চাদের মুখে সবসময় সুষম খাদ্য মুখে তুলে দেওয়া সম্ভব হয় না।  সেই কারণে কোন অজুহাত না দিয়ে নিজেরাই বিদ্যালয়ের মধ্যে মাশরুম চাষ শুরু করেছেন শিক্ষকরা।

West Bengal

প্রসঙ্গত স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ বলে গিয়েছেন, ‘খালি পেটে ধর্ম হয় না।’ আবার শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য পুষ্টিকর খাদ্য দেওয়াও জরুরী। বাঁকুড়া জেলায় শিশুদের পড়াশোনার ভীত তৈরি হয় এই ধরনের নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলগুলি থেকে। ছোট ছোট শিশুদের মনের বিকাশ হয় এই বিদ্যালয় থেকেই। সেই কারণেই বাচ্চাদের বিদ্যালয় মুখী করার পাশাপাশি তাদের পুষ্টিতেও নজর দেওয়া হচ্ছে। বাঁকুড়ার এই নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে যাতে পড়ুয়াদের সার্বিক বিকাশ হতে পারে নজর দেওয়া হচ্ছে সেদিকেও। 

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর