বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্বামীর বিরুদ্ধে মহিলা সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়ায় (Extra Marital Affair) লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন স্ত্রী। জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) অবধি। এবার সেই মামলার শুনানিতেই বিরাট নির্দেশ দিয়ে দিল উচ্চ আদালত। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের তরফ থেকে এই রায় দেওয়া হয়েছে।
ডিভোর্স মামলায় কী রায় দিল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
স্ত্রী তাঁর ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে, এই কারণ দেখিয়ে ডিভোর্সের (Divorce) আবেদন করেছিলেন এক ব্যক্তি। জানা যাচ্ছে, প্রথমে হিন্দু বিবাহ আইনের (১৯৫৫) অধীন একটি পারিবারিক আদালতে ডিভোর্সের আবেদন করেছিলেন তিনি। তবে সেখানে তাঁর আর্জি খারিজ হয়ে যায়। এরপর উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি। স্বামীর সেই আবেদন মঞ্জুর করে বিচারপতি ভট্টাচার্য ও বিচারপতি কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ।
আবেদনকারী ব্যক্তির অভিযোগ ছিল, কোনও রকম প্রমাণ ছাড়াই ক্রমাগত তাঁর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ আনতেন তাঁর স্ত্রী। আত্মীয়স্বজন, সহকর্মীদের সামনে এই ধরণের অভিযোগ এনে তাঁকে অপদস্থ করা হতো। এর ফলে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। এছাড়া তাঁর ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলাও দায়ের করেছিলেন তাঁর স্ত্রী। এমনই অভিযোগ এনেছেন ওই ব্যক্তি। তাঁর দাবি, ওই মামলাগুলি ভিত্তিহীন।
আরও পড়ুনঃ রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ফের অ্যাকশনে ED! এবার ‘এই’ ৩ জনের বাড়িতে হানা! জোর শোরগোল
এবার এই মামলার শুনানিতেই বড় নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। উচ্চ আদালতের কথায়, স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী যে অভিযোগগুলি এনেছিলেন, সেগুলি কেবল ভিত্তিহীন নয়, একজন পুরুষের ওপর মানসিক নির্যাতনের সমান। নির্দেশ দিতে গিয়ে আদালত জানায়, ‘মহিলা সহকর্মীর সঙ্গে স্বামীর বন্ধুত্ব ও ওই ব্যক্তির অস্ত্রোপচারের সময় ওই সহকর্মীর যাওয়া আসা দেখে স্ত্রী ধরে নিয়েছিলেন, দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে ওই দম্পতির মধ্যে নিয়মিত বাড়িতে অশান্তি হতেই থাকতো। তার আগেই অবশ্য স্বামীর বিরুদ্ধে অন্য মামলা করে রেখেছিলেন স্ত্রী। তবে এই অভিযোগ প্রমানে কোনও রকমের সাক্ষী অথবা প্রমাণ ছিল না। ফলে এই অবস্থায় এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেই ধরে নিতে হবে’।
হাইকোর্ট (Calcutta High Court) আরও জানিয়েছে, ‘পণ চেয়ে অত্যাচার, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের মতো যে সকল অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী এই সকল মামলা করেছেন, তার কোনোটির ক্ষেত্রেই তিনি যথাযথ প্রমাণ পেশ করতে পারেননি। অথচ ওই মামলাগুলির জেরে ওই ব্যক্তির সাজার মুখে পড়ার আশঙ্কা তো ছিলই, সামাজিকভাবেও তিনি অপদস্থ হয়েছেন। যে ক্ষতি কোনোদিনই পূরণ হওয়ার নয়’।