বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অনুপ্রবেশ ইস্যুতে শুরু থেকেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে এসেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। আর এবার অসমে বন্দি থাকা ঘোষিত বিদেশীদের তাঁদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) হলফনামা জমা দিল কেন্দ্র। আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে কেন্দ্র স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে এত অল্প সময়ের মধ্যে বিদেশীদের ফেরত পাঠানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
বিদেশিদের প্রত্যাবর্তন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) হলফনামা দিল কেন্দ্র
প্রসঙ্গত চলতি মাসের শুরুতেই অনুপ্রবেশকারীদের দেশে পাঠানো নিয়ে কেন্দ্র এবং অসম সরকারকে একযোগে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। অবৈধ বিদেশী বিতরণ নিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ।
অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ‘বিদেশি’ হিসাবে চিহ্নিত করার পরেও কেন তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানো যাচ্ছে না? সরাসরি এই প্রশ্ন তুলেছিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। জানা যাচ্ছে, এই মুহূর্তে অসমের বিভিন্ন বন্দিশিবিরে ২৭০ জন বন্দি আটক রয়েছেন। এদের মধ্যে ৬৩ জনকে ইতিমধ্যেই বিদেশি নাগরিক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বন্দিপক্ষের আইনজীবীদের দাবি, আটক ব্যক্তিদের বিদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হলেও আদতে তাঁরা কোন দেশের মানুষ, তা প্রমাণের অভাবে এখনও নির্ধারণ করতে পারেনি সরকার। এছাড়া যাঁদের বাংলাদেশি বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার তাঁদের নিজেদের দেশের নাগরিক বলে মানতে বা সে দেশে ফেরাতে নারাজ।
আরও পড়ুন: ফের সেই RG Kar! হাসপাতালে চরম হয়রানি রোগীদের, হঠাৎ কি হল?
আদালত জানায়, একবার কাউকে বিদেশি বলে চিহ্নিত করা হলে অবিলম্বে তাঁকে তাঁর নিজের দেশে ফেরানোর দায়িত্ব সরকারের। তাই এক্ষেত্রে ঠিকানা না জানা অজুহাত হতে পারে না। এপ্রসঙ্গে বিচারপতিরা সাফ জানান যিনি যে দেশের নাগরিক সেখানকার রাজধানীতে তাঁকে পাঠাতে হবে। এরপর ওই ব্যক্তিকে নিজের ঠিকানায় পাঠানোর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট দেশের। কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র ভর্ৎসনা করে আদালত জানায় সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনও বিদেশিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক রাখা যায় না। এটা মৌলিক অধিকার বিরোধী। তাঁদের জন্য এই ভাবে বছরের পর বছর সরকারি অর্থের অপচয় করাও মানা যায় না।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে আদালতে দাখিল করা হলফনামায় বলা হয়েছে, ধৃত কোনও বিদেশির কাছ যদি তাঁর নিজের দেশের পরিচয় সংক্রান্ত কোনও নথিপত্র থাকে তাহলে তাঁর দ্রুত প্রত্যর্পণ হতে পারে। কিন্তু কারও সঙ্গে কোনও কাগজপত্র না থাকলে সংশ্লিষ্ট বিদেশি দূতাবাস থেকে তাঁর পরিচয় যাচাই করা বাধ্যতামূলক। একইসাথে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে সেই দেশের বিদেশ মন্ত্রক যদি ঠিকানা ও পরিচয় নিশ্চিত করে ওই ব্যক্তিকে ফেরত নিতে রাজি হয়, তবেই তাঁকে পাঠানো সম্ভব। আর এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। জানা যাচ্ছে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।