বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের (West Bengal) ছোট ও প্রান্তিক চাষীদের জন্য এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল কৃষি বিপণন দপ্তর। সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে রাজ্যের হিমঘর গুলিতে এবার থেকে অন্তত ৩০ শতাংশ জায়গায় ছোট ও প্রান্তিক চাষীদের উৎপাদিত আলু রাখতে হবে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে একজন চাষী সর্বাধিক ৩৫ কুইন্টাল অর্থাৎ ৭০ বস্তা আলু রাখতে পারবেন। এই পুরো ব্যবস্থা দেখশোনার দায়িত্ব রয়েছে জেলাশাসকদের ওপর।
আলু চাষীদের জন্য এই ব্যবস্থা চালু করছে রাজ্যের (West Bengal) কৃষি বিপণন দপ্তর
জানা যাচ্ছে প্রথমবার রাজ্যের (West Bengal) আলু চাষীদের জন্য এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। অনুকূল আবহাওয়ায় অন্যান্যবারের তুলনায় এবার অনেক বেশি জমিতে আলু চাষ হয়েছে। তাই তুলনামূলকভাবে ফলনও বেশি হবে বলেই মনে করছে রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে ছোট ও প্রান্তিক চাষীরা হিমঘরে আলু রাখতে গিয়ে যাতে কোন সমস্যার সম্মুখীন না হয় তার জন্যই আগাম এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত অধিক ফলন হলে ব্যবসায়ী ও ফড়েরা চাষীদের কাছ থেকে কম দামে প্রচুর পরিমাণে আলু কিনে নিয়ে তা হিমঘরে মজুত করে রাখে। পরে সেই আলু বেশি দামে বাজারে বিক্রি করে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করাই লক্ষ্য তাদের। যার ফলে বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হন চাষীরা। এবার এই ব্যবস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতেই উদ্যোগী রাজ্য (West Bengal) সরকার। তার জন্যই এই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
চাষীদের নাম করে যাতে অন্য কেউ আর হিমঘরে কোন আলু রাখতে না পারেন তার জন্যই এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী এবার থেকে হিমঘরে আলু রাখার জন্য কৃষাণ ক্রেডিট কার্ড বা কৃষক বন্ধু প্রকল্পের পরিচয়পত্র চাষীকে দেখাতে হবে। এছাড়া আলু চাষীকে বাংলা শস্য বীমা প্রকল্পেও নাম নথিভুক্ত করতে হবে। জানা যাচ্ছে এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার জন্য এই প্রথম কোনো আলু চাষীকে ব্যক্তিগত খরচ বহন করতে হয়নি। এই বীমার প্রিমিয়ামের পুরোটাই দিয়েছে রাজ্য (West Bengal) সরকার।
আরও পড়ুন: বাজারে গেলেই হাত পুড়ছে মধ্যবিত্তের! মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম বন্ধ করতে বিরাট উদ্যোগ রাজ্যের
প্রত্যেক বছর ১ মার্চ থেকে হিমঘরে আলু সংরক্ষণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে চাষীদের জন্য হিম ঘরে ৩০ শতাংশ জায়গা সংরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এবছর আলুর ফলন বৃদ্ধির সাথেই রাজ্যের (West Bengal) হিমঘরগুলিতে আলু মজুত করার ক্ষমতাও বেড়েছে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে রাজ্যের ৪৯৬ টি হিমঘরে ৮১ লক্ষ টন আলু মজুত করা যায়। আরও ১২ টি নতুন হিমঘর চালু হওয়ায় এবার সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়ল ১ লক্ষ ৩৭ হাজার টন। অর্থাৎ এবার সারা রাজ্যে সবমিলিয়ে ৮২ লক্ষ ৩৭ হাজার টন আলু রাখা সম্ভব হবে।
হিমঘর মালিক সংগঠনের কর্তা পতিতপাবন দে এপ্রসঙ্গে জানিয়েছেন চাষীদের জন্য ৩০ শতাংশ জায়গা কি পদ্ধতিতে সংরক্ষিত করা হবে তা এখনও জানানো হয়নি। তবে আগেও চাষিরা, প্রথমে এলে হিমঘরের পুরো জায়গাতেই নিজেদের চাষের আলু রাখতে পারতেন।