‘কি কাজ করে?’ ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট, নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে আদালতের প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি পাহাড়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সমতলের এসএসসি শিক্ষক নিয়োগের নিয়ম কি পাহাড়েও কাজ করে? এবার এই প্রশ্নের জবাব চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। আসলে সমতলের শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে পাহাড়ের শিক্ষক নিয়োগের কোন মিল নেই। এই কারণেই এবার এমন প্রশ্ন তুলেছে আদালত। এই মামলা চলাকালীন গোর্খা টেরিটোরিয়াল প্রশাসন (জিটিএ)-র  শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি।

পাহাড়ে শিক্ষক নিয়োগের নিয়ম নিয়ে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট (Calcutta High Court)

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আমি দেখেছি শিক্ষক নিয়োগের জন্য পাহাড়ে কোনো নিয়ম মানা হয় না। সারা রাজ্যে বিজ্ঞপ্তি যারা জারি করা হয় অথচ, পাহাড়ে কেন হয় না? পাহাড়ে কি এসএসসি রয়েছে? তারা কি কাজ করে?’ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা চলাকালীন এই মন্তব্য করেছেন হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি বসু। একইসাথে তিনি জানিয়েছেন প্রয়োজনে একজন আদালত বান্ধব নিয়োগ করা হবে। তাঁর কাছেই  পাহাড়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ার যাবতীয় তথ্য জানতে চাওয়া হবে।

সম্প্রতি বিচারপতি এজলাস পরিবর্তন হয়েছে। তাই আদালতে (Calcutta High Court) রাজ্যের এজি জানিয়েছেন, জাস্টিস বসু এখন পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি করতে পারবেন না। বিচারপতি বসু জানান, পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলায় এই আদালত সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এখন ওই একই ধরনের মামলা ওই বেঞ্চ শুনতে পারবে কি না, তা নিয়ে রাজ্যের বক্তব্য জানাতে চাওয়া হয়েছে।

জানা যাচ্ছে আগামী মার্চ মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। প্রসঙ্গত, জিটিএ নিয়োগ দুর্নীতির একটি মামলায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি বসু। কিন্তু সেই তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তুষ্ট আদালত। তাই এবার আদালত (Calcutta High Court) বান্ধব নিয়োগ করে ওই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

আরও পড়ুন: অস্বস্তিতে মহুয়া!

রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে জিটিএ মামলায় বিধাননগর উত্তর থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। সেখানে অভিযুক্তদের তালিকায় নাম ছিল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জিটিএ নেতা বিনয় তামাং,এবং তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য-সহ আরও অনেকের। সিবিআইকে ওই অভিযোগ অনুসন্ধান করে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি বসুর সিঙ্গল বেঞ্চ। কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করা হয়েছিল।

calcutta high court mp

পরবর্তীতে আদালতের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই উচ্চতর বেঞ্চে যায় রাজ্য। কিন্তু সেখানে খারিজ হয় রাজ্য সরকারের আবেদন। কারণ ২০২৪ সালের ১৯ এপ্রিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি মধুরেশ প্রসাদের ডিভিশন বেঞ্চ-ও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রাখে। একইসাথে রাজ্য পুলিশকেও তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি গবইয়ের বেঞ্চ রাজ্যের যুক্তি মেনে নিয়ে জানিয়েছিল, হাই কোর্ট তাড়াহুড়ো করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। পাহাড়ে শিক্ষক নিয়োগের ওই মামলাতেই এবার ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারপতি বসু।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর