বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিরলতম অপরাধ! বটতলার পথ শিশুকে যৌন নির্যাতনের (Rape Case) ঘটনায় ৪০ দিনের মাথায় ফাঁসির সাজা দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। একইসাথে নির্যাতিতা শিশুর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গত বছরের শেষের দিকে ৩০ নভেম্বর যৌন লালসার শিকার হয়েছিল মাত্র ৭ মাসের এক দুধের শিশু। মাঝরাতে ওই পথশিশুকে ফুটপাত থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন করেছিল এক যুবক। এই ঘটনাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে দাবি করে আদালতের সাওয়াল করেছিলেন সরকারি আইনজীবী। ঘটনার ৪০ দিনের মাথায় আজ অপরাধীকে ফাঁসির শাস্তি দিলেন বিচারক। তবে, অপরাধী চাইলে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যেতে পারে।
বড়তলার শিশুকে যৌন নির্যাতনের (Rape Case) ঘটনায় ফাঁসির সাজা দিল আদালতের
সোমবার এই মামলায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন বিচারক। পুলিশ তার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৩৭(২) ধারায় অপহরণ, ৬৫(২) ধারায় ১২ বছরের কমবয়সি শিশুকে ধর্ষণ (Rape Case) এবং পকসো-র ৬ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করেছিল। পুলিশ সূত্রে খবর গত বছর এক শুনশান শীতের রাতে চুপিসারে ওই ৭ মাসের পথশিশুকে ঘুমন্ত অবস্থায় বটতলা থানা এলাকার ব্রিডন স্ট্রিটের ফুটপাথ থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল বছর চৌত্রিশের রাজীব ওরফে গোবরা। পরদিন সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় অন্য একটি ফুটপাত থেকে উদ্ধার করা হয় ওই শিশুকন্যাকে।
অন্যদিকে রাতভর খোঁজ না পেয়ে বটতলা থানায় শিশুর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন এক দম্পতি। তাঁরাই ওই শিকন্যার বাবা-মা। তদন্তে নেমে সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ। ওই ফুটেজেই দেখা যায় এক যুবক সন্দেহভাজন ভাবে খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে হাঁটছে। পাশাপাশি শিশুটিকেও তার সাথেই দেখা যায়। ওই যুবকের বিরুদ্ধে ৭ মাসের শিশু কন্যাকে যৌন হেনস্তার (Rape Case) অভিযোগ ওঠে। এরপর অভিযুক্তের খোঁজে সিসিটিভি ফুটেজ ছড়িয়ে দেওয়া হয় রাজ্যের সব থানায়।
আরও পড়ুন: এরাজ্যে ২কোটির বেশি বেকার! কেন্দ্রের সাথে রাজ্যের DA-র ফারাক নিয়ে বিস্ফোরক শুভেন্দু
ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর থেকে খোঁজ মেলে অভিযুক্ত রাজীবের। পুলিশের জেরার মুখে পড়ে নিজের দোষ স্বীকার করেছিল অভিযুক্ত। এই ঘটনার ২৬ দিনের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের ডিসি নর্থ জানিয়েছেন, ‘৭ মাস বয়সের শিশুর সাথে যে নৃশংস (Rape Case) ঘটনা ঘটেছে তা জানার সাথেই আমরা কলকাতা পুলিশ, ডিডি বটতলা থানা নর্থ ডিভিশন সবাই মিলে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। শিশুটি এখনও হাপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে। আমরা জানি না সে আর কখনও তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে কিনা! কিন্তু তাকে আমরা ন্যায় বিচার এনে দিতে পেরেছি।’
অন্যদিকে বিশেষ সরকারি কৌশলী বিভাস চাট্যার্জি জানিয়েছেন, ‘কলকাতা পুলিশের এই মামলাটা আজ একটা ইতিহাস গড়ল। এই ধরণের মামলায় যেখানে নির্যাতিতা জীবিত রয়েছেন সাধারণত সেই মামলায় আদালত ফাঁসির সাজা দেয় না। কিন্তু মেয়েটি যদি সুস্থ হয়ে পরবর্তীকালে বাড়ি ফিরেও আসে তাহলেও ওকে সারাজীবন এই মানসিক যন্ত্রনা বয়ে বেড়াতে হবে। আদালত এই কেসকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে মেনে নিয়ে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছে।’