শৈশবে হয় পোলিও, পেট চালাতে রাস্তায় বিক্রি করতেন চুড়ি! আজ IAS হয়ে নজির গড়েছেন রমেশ

বাংলাহান্ট ডেস্ক : দারিদ্রতার কাছে হার মেনে নিলে জীবন বিনষ্ট হয়ে যায় সফল (Success Story) হওয়ার আগেই। তবে এমন কিছু কিছু মানুষ থাকেন যারা নিজেদের দারিদ্রতাকে হাতিয়ার করেই এগিয়ে চলেন নিজের লক্ষ্যে। আইএএস (IAS) অফিসার রমেশ ঘোলাপের জীবন কাহিনি অনেকটা সেরকমই। ছোটবেলা থেকেই দারিদ্রতা ছিল রমেশের নিত্য সঙ্গী।

রমেশের দুর্দান্ত সাফল্যের কাহিনি (Success Story)

রমেশের বাবার ছোট্ট একটা সাইকেলের দোকান থাকলেও বাবা ছিলেন ঘোর মদ্যপ। ছোট্ট রমেশের বাবার মদ্যপানের অভ্যাস আকুল পাথারে এনে ফেলেছিল গোটা পরিবারকে। অতিরিক্ত মদ্যপানের জন্য একদিন হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় রমেশের বাবাকে। তারপর গোটা সংসারের দায়িত্ব এসে পরে রমেশের মায়ের কাঁধে।

আরোও পড়ুন : হয়ে যান সতর্ক! ১ তারিখ থেকেই বদলে যাচ্ছে বিমা সংক্রান্ত এই নিয়ম, আগেভাগে নিন জেনে

সংসার চালানোর তাগিদে রমেশের মা তার দুই সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে শুরু করেন চুড়ি বিক্রি। নিয়তির পরিহাসে ছোটবেলায় পোলিও আক্রান্ত হন রমেশ। তবে সেই প্রতিকূলতাকে সঙ্গী করেই মায়ের সাথে ঘুরে ঘুরে চুড়ি বিক্রি করতে শুরু করেন রমেশও। এতকিছুর পরেও রমেশ অবশ্য মুখ ঘোরাননি পড়াশোনা থেকে।

আরোও পড়ুন : হাইকোর্ট সহ রাজ্যের সকল আদালতের আইনজীবীদের ধর্মঘটের ডাক! হঠাৎ কী হল? জোর শোরগোল

গ্রামের স্কুলের পাঠ শেষ করে রমেশ বড় স্কুলে ভর্তি হওয়ার উদ্দেশ্যে গিয়ে থাকতে শুরু করেন মামাবাড়ির গ্রামে। ২০০৫ সালে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়াকালীন মৃত্যু হয় রমেশের বাবার। সেই সময়ে বাড়ি ফেরার সামান্য ২ টাকা বাস ভাড়াও ছিল না রমেশের কাছে। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় মামা বাড়ির গ্রাম থেকে নিজের গ্রামে এসে শেষবারের মতো মৃত বাবাকে দেখেন রমেশ।

৮৮.৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এডুকেশনের উপর ডিপ্লোমা করেন মেধাবী এই ছাত্র। এর সাথে বিএ ডিগ্রি সম্পন্ন করে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন গ্রামের একটি স্কুলে। শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও রমেশের লক্ষ্য ছিল আরও বড় কিছু করা। সেই ভাবনা থেকেই রমেশ সিদ্ধান্ত নেন ইউপিএসসি (UPSC) পরীক্ষায় বসার।

Success Story of IAS Ramesh Gholap

২০১২ সালে ইউপিএসসি (Union Public Service Commission) পরীক্ষায় বসে গোটা ভারতের মধ্যে ২৮৭ তম স্থান অর্জন করে তাক লাগিয়ে দেন সবাইকে। আইএএস হিসাবে কর্মরত রমেশের বাবা-মা ছিলেন নিরক্ষর। সংসার চালাতে গিয়ে যে ছেলে একটা সময়ে রাস্তায় রাস্তায় চুড়ি বিক্রি করেছেন, সেই ছেলেই আজ সফল (Success Story) আইএএস অফিসার হয়ে তৈরি করেছেন নতুন উদাহরণ।

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর