বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বঞ্চিত রাজ্যবাসীর মাথার ওপর পাকা ছাদ তৈরি করে দিতে বদ্ধপরিকর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কেন্দ্রের মোদি সরকার আবাস যোজনায় টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে অনেক দিন। তাই নিজস্ব কোষাগার থেকে বাংলার মানুষদের জন্য ‘বাংলার বাড়ি’ (Banglar Bari) প্রকল্পে এই টাকা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত বছরের শেষের দিক থেকেই এই প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার।
‘বাংলার বাড়ি’ (Banglar Bari) প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি টাকা পেল কারা?
ইতিমধ্যেই মোট ১২ লক্ষ পরিবারের জন্য প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার করে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে আরেও ১৬ লক্ষ পরিবারকে বাড়ি বানানোর টাকা দেওয়া হবে বলে, বাজেটে অঙ্গীকার করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ইতিমধ্যেই মোট ১২ লক্ষ উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যানের হিসেবে রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রামীণ আবাস যোজনা প্রকল্পে (Banglar Bari) বাড়ি তৈরির টাকা পেয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। অন্যদিকে সবচেয়ে কম বরাদ্দ পেয়েছে পশ্চিম বর্ধমান। বিগত কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা মানেই অভিষেকের জেলা বলেই পরিচিত। কারণ এই জেলাতেই রয়েছে অভিষেকের নির্বাচন কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবার। এর আগে এই জেলাতেই পর্যবেক্ষক ছিলেন তিনি। আর এখন তিনি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এই অঞ্চলের অর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সামগ্রিক দেখভালের ক্ষেত্রে তিনি ব্যাপক সক্রিয়। কিন্তু এই জেলার অন্যান্য ব্যাপারগুলিতে অতটাও সক্রিয় নন তিনি। তবে রাজ্য রাজনীতিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনাকে অভিষেকের জেলা বলেই মনে করেন অনেকে।
কোন জেলায় কত বেশি বাড়ি বরাদ্দ করা হয়েছে?
দক্ষিণ ২৪ পরগনা – ১,৬৩,৯৩০ টি বাড়ি
কোচবিহার – ১,১৩,৩২৮ টি বাড়ি
উত্তর ২৪ পরগনা– ৮০,৯৩১ টি বাড়ি
কোন জেলায় সবচেয়ে কম বাড়ি বরাদ্দ করা হয়েছে?
পশ্চিম বর্ধমান – ৭,৯১৩ টি বাড়ি
ঝাড়গ্রাম – ২১,২৫২ টি বাড়ি
মালদা – ২৯,৭১৬ টি বাড়ি
কোন জেলায় এখনও বকেয়া টাকা অনুমোদন পায়নি?
জানা যাচ্ছে, আবাস প্রকল্পের (Banglar Bari) প্রথম পর্যায়ে বেশ কিছু জেলায় এখনও অনেক বাড়ি অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়ার কারণেই অনুমোদন আটকে আছে বলে খবর। তবে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কোনও আবেদন পেন্ডিং নেই।
কোন জেলায় পেন্ডিং অনুমোদন বেশি?
উত্তর ২৪ পরগনা – ১,১৯৭
কোচবিহার – ৪১৩
হুগলি – ২২৫
মুর্শিদাবাদ – ৪৫১
আরও পড়ুন: সদ্য পেয়েছেন জামিন! নিয়োগ দুর্নীতিতে ফের শিরোনামে কালীঘাটের কাকু, যোগ এই BJP নেতার সাথে?
প্রসঙ্গত আবাসের বাড়ি (Banglar Bari) তৈরির এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। পরিসংখ্যান দেখে বিজেপি নেতা সজল ঘোষের কটাক্ষ, ‘ভাইপোর জেলার জন্য আলাদা সুবিধা দিচ্ছেন পিসি।’ একই সুরে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘প্রকৃত গরিব মানুষের ঘর পাওয়া উচিত, কিন্তু কোনও পক্ষপাত যেন না হয়।’
যদিও আবাস যোজনা (Banglar Bari) প্রকল্পে অনিয়ম রুখতে শুরু থেকেই বদ্ধপরিকর রাজ্য। তাই এই প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের দাবি, কোনও পক্ষপাত নেই, সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়াতেই উপভোক্তাদের নির্বাচন করা হয়েছে। আর আর্থিক পরিসংখ্যান প্রসঙ্গে রাজ্যের দাবি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জন ঘনত্ব বেশি। এই জেলা আর্থিক ভাবে অনগ্রসর মানুষের সংখ্যাও বেশি। তাই এরমধ্যে কোনও রাজনীতি বা পক্ষপাত নেই বলেই দাবি করা হয়েছে।