বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মাল্টি ডিপেন্সারি বা বহুক্ষেত্রীয় বিষয় পড়ানো নিয়ে নতুন কেন্দ্রীয় নীতির ধাক্কায় এবার প্রশ্নের মুখে রাজ্যের (West Bengal) একাধিক ডি এল এড এবং বিএড কলেজের অস্তিত্ব। যার ফলে আগামী দিনে আলাদা করে আর এই সমস্ত কলেজের কোন অস্তিত্ব থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নীতি মেনে এবার থেকে এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলিকে সাধারণ ডিগ্রী কলেজের মতো বিএ,বিএসসি বা বিকম-এর মতো কোর্স করাতে হবে। তা না হলে নতুন পদ্ধতির শিক্ষক-শিক্ষণ কোর্স আইটিপি চালুর অনুমতি পাওয়া যাবে না। এরফলে রাজ্যের প্রায় ১২০০ সরকারি এবং বেসরকারি বিএ, ডিএলএড কলেজ বন্ধ হওয়ার মুখে।
বন্ধ হয়ে যাবে রাজ্যের (West Bengal) ১২০০ কলেজ?
সম্প্রতি শিক্ষক শিক্ষণের কেন্দ্রীয় নিয়মক সংস্থা এনসিটিই একটি খসড়া নীতি প্রকাশ করেছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকেই নতুন পদ্ধতির কোর্স গুলি চালু করা হবে। যদিও এখনো পর্যন্ত দেশজুড়ে মোট ৬৫টি প্রতিষ্ঠানে এমন কোর্স চালানোর জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো রয়েছে। ওই সমস্ত কলেজগুলিতে অন্যান্য বিষয় এবং শাখার ডিগ্রী কোর্স চলে।
আইটিইপি কোর্স চালু করার জন্য এনসিটিই যে যোগ্যতা বিধি বেঁধে দিয়েছে তা অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই উত্তীর্ণ হতে পারবে না। এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে একাধিক বিষয়। বিল্ট আপ এরিয়া ছাড়াও বিপুল পরিমাণে জমি (ছাত্রসংখ্যা এবং কোর্সের ধারণ অনুযায়ী পরিবর্তন সাপেক্ষ), অন্যান্য পরিকাঠামো, বহু সংখ্যক শিক্ষক থাকার কথাও বলা হয়েছে। এগুলি রাজ্যের (West Bengal) অধিকাংশ সরকারি বা বেসরকারি কলেজে নেই। ফলে আগামী দিনে ওই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
আগামী দিনে শিক্ষক-শিক্ষণের কেন্দ্রীয় নিয়ামক সংস্থা এনসিটিই-র নির্দেশ মতো এই নতুন নীতি লাগু হওয়ার ফলে ইন্টিগ্রেটেড টিচার এডুকেশন প্রোগ্রাম বা আই টি পি বিকল্প হয়ে উঠবে ডি এল এড কোর্সের জন্য। জানা যাচ্ছে, দ্বাদশ শ্রেণী পাস করার পর চার বছরের এই কোর্স করলে তা ডি এল এড বা বিএড-এর সমতুল্য বলে গণ্য করা হবে। উপরন্তু বিএডের জন্য এক বছর সময় বাঁচবে।
কোন কোন বিষয়ে এই কোর্স করা যাবে?
আর্টস, সায়েন্স, ফিজিক্যাল এডুকেশন, যোগা প্রভৃতি বিভিন্ন শাখায় আইটিইপি করা যাবে। এর পাশাপাশি, এক বছরের বিএড চালু হচ্ছে। ফলে, পুরনো পদ্ধতির বিএড-এমএড কোর্সগুলি আপাতত চালু থাকলেও তা নিয়ে আগ্রহ থাকবে না। ২০৩০ সালের পরে ডিএলএড বলে কোনও কোর্স থাকবে না। কলেজগুলিকে ২০২৮’এর মধ্যে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছে এনসিটিই।
আরও পড়ুন: আবাসের তালিকায় বিরাট চমক! সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেল কোন জেলা? জানলে চমকে যাবেন
জানা যাচ্ছে আর্টস, সায়েন্স, ফিজিক্যাল এডুকেশন, যোগা প্রভৃতি বিভিন্ন শাখায় আইটিপি কোর্স করা যাবে। পাশাপাশি এক বছরের বিএড কোর্সও চালু হচ্ছে। ফলে পুরনো পদ্ধতির বিএড-এমএড কোর্সগুলি আপাতত চালু থাকলেও তা নিয়ে আর আগ্রহ থাকবে না। জানা যাচ্ছে ২০৩০ সালের পর ডিএলএড বলে আর কোন কোর্স থাকবে না। ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে এনসিটিই জানিয়েছে কলেজ গুলিকে ২০২৮ সালের মধ্যে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে।
অন্যদিকে শিক্ষক মহলের একাংশের দাবি, কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির মাল্টিডিসিপ্লিনারি নীতিটিই গোলমেলে। বিশেষ পরিকাঠামো উন্নয়ন না করেই ভারতের মতো দেশে এই পদ্ধতি কার্যকর করার বিষয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এছাড়া প্রশ্ন উঠেছে একক বিএড বা ডিএলএড কলেজে ডিগ্রি কোর্স চালু হলে প্রথাগত ডিগ্রি কলেজগুলি কী করবে তা নিয়েও। প্রসঙ্গত ইতিমধ্যে বেশ কিছু আইআইটিতেও শিক্ষক-শিক্ষণ কোর্স চালু রয়েছে। এরফলে তাদের সঙ্গে অন্য প্রতিষ্ঠান গুলির প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠা কঠিন। সবমিলিয়ে এই জটিল পরিস্থিতি একটা বড় অংশকে কর্মহীনতার মুখে ঠেলে দিচ্ছে।