বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার রাজ্যের চিকিৎসকদের নিয়ে মেগা বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বান্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ওই বৈঠক থেকেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করলেন মমতা। মেদিনীপুর মেডিক্যালের গাফিলতির কথা মেনে নিয়েই তিনি বললেন জুনিয়র চিকিৎসকদের ঘাড়ে পুরো দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া উচিত হয়নি।
জুনিয়র ডাক্তারদের সাসপেনশন বাতিল করলেন মমতা (Mamata Banerjee)
স্যালাইন কাণ্ডে ‘শাস্তি’ পাওয়া জুনিয়র ডাক্তারদের সাসপেনশনও প্রত্যাহার করলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। মেগা বৈঠক থেকেই আজ তৃণমূল সুপ্রিমো বললেন, ‘নেগলিজেন্স তো ছিল নিশ্চই। তদন্ত শেষ হওয়ার পর বলব। এখনও হয়তো তাঁরা পাকাপোক্ত হয়নি। এইভাবে ওদের হাতে সবটা ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি। সাসপেনশনটা তুলে নেওয়া হল।’
প্রসঙ্গত চলতি বছরের শুরু দিকে গত ৮ জানুয়ারি, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্যালাইনের বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছিল কেশপুরের বাসিন্দা প্রসূতি মামনি রুইদাসের। হাপাতালে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। ৯ জানুয়ারি রাতে মৃত্যু হয় তাঁর। এছাড়াও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন আরও ৪ জন প্রসূতি। এই প্রসূতি মৃত্যু এবং অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা বাংলা।
অভিযোগ ওঠে, নিষিদ্ধ রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইনের বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে প্রসূতির। এই ঘটনায় স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে রিপোর্ট তলব করে নবান্ন। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখতে ১৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে স্বাস্থদপ্তর। পাশাপাশি এই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডিকে। গতকাল এই স্যালাইকাণ্ডের তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে।
আরও পড়ুন: গত বছর থেকে বন্ধ কেন্দ্রের বরাদ্দ! এই প্রকল্পের জন্য দ্বিগুণের বেশি টাকা দিচ্ছে রাজ্য
জানা যাচ্ছে, সেই রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে স্যালাইনের ‘বিষক্রিয়া’ নয়, ‘হিউম্যান এরর’-এর কথা। বলা হচ্ছে, ওইদিন অপারেশন থিয়েটারে কোনও RMO বা কোনও সিনিয়র চিকিৎসক ছিলেন না। তাই উপস্থিত জুনিয়র ডাক্তাররাই করেছিলেন অ্যানাস্থেশিয়া থেকে শুরু করে ডেলিভারি সবকিছু। আর তাতেই বিপত্তি ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত স্যালাইন কাণ্ডের পর মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার-সহ অভিযুক্ত ১২ চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সাসপেন্ড হওয়া ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ওঠে গাফিলতির অভিযোগ। এরপর তাঁদের বিরুদ্ধে শুরু হয় সিআইডি তদন্ত। ওই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থানায় কাজে গাফিলতি, অনিচ্ছাকৃত খুন,সরকারি কর্মচারী হয়ে আইন অমান্য করে কারও ক্ষতি করার মতো একাধিক ধারায় মামলাও রুজু করা হয়। আবশেষে আজ তাঁদের উপর থেকে সাসপেনশন তুলে নেওয়ার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই ঘোষণায় ব্যাপক খুশি হয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।