মায়ের প্রেমিকের যৌন লালসার শিকার শিশুকন্যা! চুপ মা, চরম শাস্তি দিল শিয়ালদা আদালত

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মা হয়ে নিজের সন্তানের চরম ক্ষতি করল এক তরুণী। স্বামীর অকাল মৃত্যুর পর পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে প্রেমিকের সাথে থাকতে শুরু করে ছিল সে। কিন্তু চোখের সামনে মেয়ে, প্রেমিকের যৌন লালসার (Rape) শিকার হচ্ছে দেখেও চুপ ছিল ওই তরুণী। অভিযোগ তার সম্মতিতেই মাত্র ৫ বছরের শিশু কন্যার হাত-পা বেঁধে দিনের পর দিন তার ওপর যৌন নির্যাতন চালাত বছর ৩২-এর ওই যুবক।

৫ বছরের শিশুকে যৌন হেনস্থার (Rape) মামলায় চরম শাস্তি

বছর দু’য়েক আগে অর্থাৎ ২০২৩ সালে দক্ষিণ কলকাতার এই যৌন হেনস্তার (Rape) ঘটনায় শুক্রবার মেয়েটির মা ও তার প্রেমিককে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে দিল শিয়ালদহ আদালতের বিশেষ পকসো কোর্ট। এদিনের এই মামলায় সাজা শুনিয়েছেন বিচারক অনির্বাণ দাস। প্রসঙ্গত ইনিই আরজিকর কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়কে ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।

জানা যাচ্ছে, এদিন দোষী যুবককে ছ’বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসাথে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও ধার্য করা হয়েছে।  ওই টাকা দিতে না পারলে তাকে আরও ১০ মাস জেলে থাকতে হবে। একইসাথে নির্যাতিতা শিশুকন্যার মাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে তাকে আরও এক মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এছাড়াও নিজের মেয়েকে ঠিকভাবে  দেখাশোনা করতে না পারার জন্য ওই তরুণীকে আরও এক হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জানা যাচ্ছে, বিচারক নির্যাতিতাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ এক লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ডিএলএসএ-কে।

আরও পড়ুন: মিলবে ছুটি! রাজ্যের শিক্ষকদের জন্য জারি হল নয়া বিজ্ঞপ্তি

সূত্রের খবর, ২৭ বছরের ওই তরুণীর দুই মেয়ে। স্বামীর মৃত্যুর পর ছোট মেয়েকে নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে থাকতে শুরু করেছিল সে। কিন্তু তার বড় মেয়ে ওই এলাকাতেই ঠাকুমার সঙ্গে থাকত। শিশুকন্যাকে অনেকদিন ধরেই তরুণীর প্রেমিক যৌন হেনস্থা (Rape) করছিল। অবশেষে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর নির্যাতিতা শিশুটি স্কুলে যাওয়ার নাম করে ঠাকুমাকে তার সাথে ঘটে চলা সব অত্যাচারের কথা জানিয়ে দেয়। এরপর ঠাকুমা গিয়ে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর ২৯ ডিসেম্বর অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা যাচ্ছে গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ।

Accused gets bail in rape case Bombay High Court says this

মামলা প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী অসীম কুমার জানিয়েছেন, ‘সাক্ষ্য দেওয়ার সময়ে নির্যাতিতা নাবালিকা জানিয়েছে, তার মাকে সব কথা বললেও মা শুনত না।’ অসীম জানান, এর পরেই তিনি মাকেও এই মামলায় যুক্ত করার জন্য আবেদন জানান। নির্যাতিতার মাকে গ্রেফতার করে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। পরে মা জামিন পেলেও জামিন পায়নি তার প্রেমিক। এই মামলায় এদিন সাজা ঘোষণা হতেই নির্যাতিতার মাকে জেল হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। জানা যাচ্ছে এই মামলায় মোট ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর