বাংলা হান্ট ডেস্কঃ খেলাধুলার বিষয়ে বাঙালির আগ্রহ বরাবরই একটু বেশি। বিশেষ করে বাঙালি মানেই ফুটবল-পাগল। ফুটবলের প্রতি বাংলার এই অগাধ ভালোবাসার কথা সর্বজনবিদিত। এহেন বাংলায় সুদূর আফ্রিকার গিনি বিশাও থেকে ফুটবল খেলতে এসে গ্রেফতার হয়েছিলেন একজন বিদেশী ফুটবলার। করোনাকালে উদ্ভুত জটিল পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন তিনি। এমনটি পরিস্থিতি তৈরী হয়েছিল যে, চাইলেও নিজের দেশে ফিরতে পারেননি ক্যামেরা ফোফানা উসুমানে নামের ওই ফুটবলার।
ক্ষতিপূরণ সমেত ফুটবলারকে দেশে ফেরানোর নির্দেশ দিল হাই কোর্ট (Calcutta High Court)
সম্প্রতি জামিনের আবেদন জানানোর পাশাপাশি দেশে ফেরার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। এবার এই মামলায় আদালত নির্দেশ দিয়েছে ওই ফুলবোলারকে রাজ্য যেন ‘উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ’ দেয়। একইসাথে তাঁকে তাঁর দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করতেও বলেছে আদালত।
জানা যাচ্ছে, ফুটবল খেলা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি ছ’মাসের ভিসা নিয়ে এই পশ্চিমবঙ্গে এসেছিলেন উসুমানে। তাই হিসাব মতো ওই বছরের ৫ জুলাই তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তার মধ্যেই এসে পড়ে করোনা মহামারি। তাই ওই জটিল পরিস্থিতিতে নিজের দেশে ফিরতে পারেননি তিনি। ওই সময় ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছিল। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল, করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালের মার্চ মাসের আগে যাঁরা ভিসা নিয়ে এ দেশে এসে ফিরতে পারেননি, তাঁদের ভিসার মেয়াদ ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
ঘটনাচক্রে, ওই ফুটবলার ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে দেশে ফেরার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেইসময় উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে এই দেশেই থেকে যান উসুমানে। জানা যায় কেন্দ্রের নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও ‘অবৈধ ভাবে’ এদেশে থাকার জন্য উসুমানেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেই থেকে পুলিশ হেফাজতে ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের সোনায় সোহাগা! বহু বছর অপেক্ষার পর এবার এক ধাক্কায় বাড়ছে বেতন
সম্প্রতি জামিনের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হন তিনি। বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। আদালতে এদিন ওই ফুটবলারের হয়ে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী উজ্জ্বল রায়। এই মামলায় জাস্টিস চট্টোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, ‘কিছু উপার্জনের জন্য উনি হাজার হাজার মাইল পেরিয়ে এই দেশে এসেছিলেন। অপরাধমূলক কোনও কাজে যুক্ত থাকার প্রমাণ নেই তাঁর বিরুদ্ধে।’
একই সঙ্গে বিচারপতির সংযোজন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিষয়টি নিয়ে আরও দায়িত্বশীল ও মানবিক হওয়া উচিত ছিল। একইসাথে তিনি জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিকে সমস্যায় ফেলা ঠিক কাজ হয়নি। এপ্রসঙ্গে বিচারপতি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ওই ব্যক্তি কিন্তু ইচ্ছাকৃত ভাবে এ দেশে ছিলেন না। পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন তিনি। বিচারপতি এদিন ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যে মামলাগুলি রুজু হয়েছিল, সবগুলিই খারিজ করে দিয়েছেন।