‘আমার সংস্থা’ বলেছিলেন অভিষেক! সেই ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল CBI

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ যত দিন যাচ্ছে ততই যেন নিত্যনতুন জট খুলছে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলার। সূত্রের খবর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ নামে একটি সংস্থায় তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। তার কয়েকদিনের মধ্যেই ওই সংস্থাকে ‘আমার সংস্থা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি আদালতে পেশ করা সিবিআই-এর চার্জশিট থেকে জানা যাচ্ছে ওই ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর নিউ আলিপুর দপ্তরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতির ঘুষের টাকা।

নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) মামলায় বিরাট দাবি চার্জশিটে

আদালতে পেশ করা চার্জশিটে সিবিআই উল্লেখ করেছে তদন্ত করে তারা জানতে পেরেছেন অরুণ কুমার হাজরা অভিযুক্ত কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের একজন এজেন্ট। তার অধীনে আবার একাধিক সাব এজেন্ট রাখা হয়েছিল। এই অরুণ কুমার হাজরা অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে মোট ৭৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছেন। সাব এজেন্টদের মাধ্যমে তিনি প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি, SSC গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি, ৯ – ১০ শিক্ষক, ১১ – ১২ শিক্ষক, কর্মশিক্ষা – শারীরশিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগ (Recruitment Scam) করার জন্য ওই টাকা তুলেছেন।

জানা যাচ্ছে, অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে নেওয়া সেই ঘুষের টাকা তারপর পৌঁছে দেওয়া হয় কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কাছে। সিবিআই সূত্রে খবর, কখনও সরাসরি, আবার কখনও সুজয়কৃষ্ণের নির্দেশে নিখিল হাতি নামে সেই টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করা জানা গিয়েছে, ওই ৭৮ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ১১.৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বেআইনি প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দিতে।

আরও পড়ুন: বিরাট কড়াকড়ি! উচ্চ-মাধ্যমিক শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে কী জানালেন সংসদ সভাপতি?

সিবিআই চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অরুণ কুমার হাজরার সাব এজেন্টরা রোজকার হিসাব লিখতেন নিজেদের ডায়েরিতে। প্রতটি লেনদেনের হিসাবের পাশে রয়েছে অরুণ হাজরার সই। জানা যাচ্ছে, এরকম অন্তত ১০টি ডায়েরি উদ্ধার করেছে সিবিআই। সাব এজেন্টদের দাবি তারা ওই ঘুষের টাকা অরুণ কুমার হাজরার কাছে পৌঁছে দিত। তারপর তার নির্দেশে অনুযায়ী কখনও সেই টাকা সরাসরি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে পাঠানো হত, আবার কখনও সুজয়কৃষ্ণের সংস্থার কর্মী নিখিল হাতির বাড়ি গিয়ে তাঁর হাতে সেই টাকা তুলে দেওয়া হত। এখানেই শেষ নয়, সিবিআই সূত্রে দাবি কখনও বেহালা উত্তরসূরী নামে একটি ক্লাবের কাছেও টাকা দিতেন নিখিল হাতি। কখনও আবার নিউ আলিপুরে সুজয়কৃষ্ণের দফতর মেসার্স লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেডে পৌঁছেনো হত সেই ঘুষের টাকা।

TMC MP Abhishek Banerjee explosive comment over Union Budget 2025

প্রসঙ্গত, বছর দুয়েক আগে ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) তদন্তে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের দফতরে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। ওই মাসেই ২৮ তারিখ নাগাদ অভিষেক বলেন, ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস আমার সংস্থা’। সেখানে ইডির গোয়েন্দারা তল্লাশির নামে কম্পিউটারে ১২টি ফাইল ডাউনলোড করে রেখেছেন। পরে এরাই বলবে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের কম্পিউটারে প্রার্থীদের নামের তালিকা পাওয়া গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর