ভারতকে চাপে ফেলার চেষ্টা? বাংলাদেশে ঢালাও অস্ত্র সরবরাহ চিনের! সামনে এল ভয়ঙ্কর রিপোর্ট

বাংলাহান্ট ডেস্ক : শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই ভোল বদল হয়েছে বাংলাদেশের (India-Bangladesh)। ভারতের সঙ্গে দীর্ঘ মিত্রতা, কৃতজ্ঞতা সব বেমালুম ভুলে পাকিস্তানের সঙ্গে সখ্যতা বাড়াতে দেখা গিয়েছে নতুন তদারকি সরকারকে। দুই দেশের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে যাতায়াত, যোগাযোগ বাড়তে দেখা গিয়েছে। আর এবার আরেক ধাপ এগিয়ে চিনের সঙ্গে হাত মেলাল বাংলাদেশ। ড্রাগনের দেশ থেকে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র এসে পৌঁছেছে পড়শি দেশে। মূলত হাসিনার দেশ ছাড়ার পর থেকেই বাংলাদেশ (India-Bangladesh) চিনের মধ্যে সখ্যতা এমন বেড়েছে। এক গবেষণাপত্রে জানা গিয়েছে, শুধুই অস্ত্র নয়, বিভিন্ন সামরিক প্রযুক্তিও বাংলাদেশকে সরবরাহ করেছে চিন।

ভারতকে আটকাতে বাংলাদেশকে (India-Bangladesh) সাহায্য চিনের

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিনের পরিকল্পনা বাংলাদেশকে (India-Bangladesh) সামরিক ভাবে এতটাই শক্তিশালী করে তোলা যাতে সীমান্তে ভারতের জন্য ত্রাস হয়ে দাঁড়াতে পারে ইউনূসের দেশ। মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে ওই গবেষণা পত্র। উল্লেখ্য, মহম্মদ ইউনূসের চিন সফরের ঠিক আগেই এহেন কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৬ শে মার্চ চিন সফরে যাবেন ইউনূস। ২৮ শে মার্চ শি জিনপিং এর সঙ্গে দেখা করতে পারেন তিনি। গবেষণা পত্রে লেখা হয়েছে, বেজিং বাংলাদেশ অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি এবং বাংলাদেশ (India-Bangladesh) মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেডকে রাইফেল, রকেট লঞ্চার, হালকা ইউটিলিটি যানের মতো প্রযুক্তি হস্তান্তর করেছে। রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে চিনের সহায়তায় বাংলাদেশ নৌসেনা খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডে প্রথম স্থানীয় ভাবে নির্মিত টহল জাহাজ যোগ করেছে নৌবহরে।

India-Bangladesh relation may change due to china

কী বলছে রিপোর্ট: সেখানে বলা হয়, অগাস্টে বাংলাদেশে পটপরিবর্তনের পরেও চিনের সঙ্গে সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এর আগে অক্টোবরে পিপলস লিবারেশন আর্মি তাদের দুটি যুদ্ধজাহাজকেও চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠিয়েছিল। বাংলাদেশে (India-Bangladesh) অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটাই কোনো বিদেশি নৌযানের প্রথম সফর ছিল। ইউনূস সরকার নাকি চিনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা আরো মজবুত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, অক্টোবরে ঢাকায় সেমিনারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বজায় রাখার উপরেই জোর দিয়েছিলেন। সঙ্গে এও নিশ্চিত করেছিলেন যে, বাংলাদেশ (India-Bangladesh) চিনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরো জোরদার করতে চায়।

আরো পড়ুন : দেবচন্দ্রিমার পর এবার কিরণ, বিষ্ফোরক অভিযোগ সায়ন্তর বিরুদ্ধে! “মোটেই মারধোর…” ক্ষুব্ধ নায়ক

আগেই হয়েছে চুক্তি: ওই রিপোর্টে এও বলা হয়েছে, ২০০২ সালে দুই দেশের মধ্যে সামরিক প্রশিক্ষণ, প্রতিরক্ষা উৎপাদন সহ রক্ষা সহযোগিতা বিষয়ে চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল। গবেষণা পত্রে আরো লেখা হয়েছিল, ২০১৪ সালে দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বিষয়ক চারটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল। যার মধ্যে অন্যতম ছিল, পিপলস লিবারেশন আর্মি বাংলাদেশ (India-Bangladesh) সশস্ত্র বাহিনীকে বিনামূল্যে সামরিক প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা প্রদান করবে। বাংলাদেশ এবং চিন গত বছরে একটি ঐতিহাসিক যৌথ সামরিক মহড়া আয়োজন করে। যা দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সম্পর্ক নিশ্চিত করেছে। ১৯৭৫ সালে দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা হয়। তারপর থেকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার অন্যতম ভিত্তি।

আরো পড়ুন : বুধেও বড় ধাক্কা মার্কেটে, কেন ক্রমাগত পতন শেয়ার বাজারে? সামনে এল ভয়াবহ আপডেট

অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৯৭৫ সালের পর থেকে ভারত-সোভিয়েত শক্তির থেকে চিন-পাকিস্তান শক্তির দিকে বেশি ঝুঁকেছিল বাংলাদেশ (India-Bangladesh)। বর্তমানে সোভিয়েত সামরিক সহযোগিতা কম হওয়ায় এই ঘাটতির মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছে চিন। অন্যদিকে ভারত এবং মায়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের প্রতিকূল সম্পর্ক থাকায় চিনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে চিনা অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ (India-Bangladesh) দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এখনো পর্যন্ত প্রায় ৭২ শতাংশ অস্ত্র চিনের থেকে কিনেছে বাংলাদেশ। রিপোর্ট বলছে, ২০১০-১৯ সালের মধ্যে ২.৫৯ বিলিয়ন ডলার শুধুমাত্র চিনা অস্ত্র ক্রয়ে খরচ করেছে বাংলাদেশ। দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধুত্ব ভারতের পক্ষে কতটা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায় সেটা নিয়েই চিন্তিত ওয়াকিবহাল মহল।

Niranjana Nag
Niranjana Nag

নীরাজনা নাগ, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। নারুলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করার পর সাংবাদিকতার সফর শুরু। বিগত ৫ বছর ধরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর